Inqilab Logo

রোববার, ১৬ জুন ২০২৪, ০২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

‘স্বাস্থ্য সেবা’ আইন হচ্ছে

প্রকাশের সময় : ১১ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ভুল চিকিৎসায় শাস্তির ব্যবস্থা : ওষুধে অতিরিক্ত মূল্য নিলেই শাস্তি : এমবিবিএস’র পর ইন্টার্নশিপ হবে ২ বছর
মালেক মল্লিক : নাগরিকদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ‘স্বাস্থ্য সেবা আইন’ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে এ নিয়ে কাজ শুরু করছে আইন কমিশন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও রোগীদের সঙ্গে আলোচনা করে আইনটির খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। গত মাসে শেষ সপ্তাহে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের এ বিষয়ে মতামতও নেয়া হয়েছে। যা প্রকাশ করা হয়েছে আইন কমিশনের ওয়েব সাইটে। নতুন আইনে ইন্টার্নশিপ এক বছরের পরিবর্তে দুই বছর ও চিকিৎসকদের বীমা করার চিন্তা করা হচ্ছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশে এই প্রথম চিকিৎসকদের বীমা করা বাধ্যবাধকতা করা হচেছ। চূড়ান্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত আইন সম্পর্কে যে কেউ ওয়েব সাইটে তাদের মতামত দেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এ বছরের মধ্যেই সুপারশিগুলো চূড়ান্ত করে পাঠানো হবে মন্ত্রণালয়ে। এরপর মন্ত্রণালয় পর্যালোচনা করে তা জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করবে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এই আইন বাস্তবায়ন হলে নাগরিকদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত হবে। বর্তমানে সারাদেশে স্বাস্থ্য সেবা পেতে সাধারণ নাগরিকদের বিভিন্ন ধরণের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
স্বাস্থ্য সেবা আইন সম্পর্কে আইন কমিশনের মুখ্য গবেষণা কর্মকর্তা ফউজুল আজিম ইনকিলাবকে বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করেছি। চিকিৎসক এবং রোগীদের সঙ্গেও কথা বলেছি। বৈঠক করেছি দেশের খ্যাতিমান চিকিৎসকদের সঙ্গেও। এমবিবিএসের পর পরীক্ষার প্রস্তাব এসেছে খ্যাতিমান চিকিৎসকদের পক্ষ থেকেই। তবে আমরা এখনো কোন বিষয় চূড়ান্ত করিনি। এটি নিয়ে আরও আলোচনা হবে। আশা করি এ বছরের শেষ দিকে আইনটি মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে পারবো। এরপর বাকিটা মন্ত্রণালয় চিন্তা করবে।
আইন কমিশন সূত্র জানা যায়, বর্তমানে কমিশন রোগীর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা, ডাক্তারদের অপচিকিৎসা বা ভুল চিকিৎসা বা অবহেলা জনিত অপরাধের জন্য জরিমানা ও শাস্তির ব্যবস্থা, মান সম্মত ওষুধ না হলে বা অতিরিক্ত মূল্য নির্ধারণ করলে কোম্পানির বিরুদ্ধে শাস্তি এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও সুযোগ-সুবিধা না থাকলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা থাকছে এ আইনে। নতুন আইনে ইন্টার্নশিপ এক বছরের পরিবর্তে দুই বছরের চিন্তা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে এমবিবিএস পাস করার পর বিএমডিসির মাধ্যমে পরীক্ষা দিয়ে সনদ নেয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে। যা উন্নত দেশগুলোতে চালু রয়েছে। যা অনেকটা আইন পেশার আদলে। বার কাউন্সিল থেকে সনদ গ্রহণ ছাড়া কেবল এলএলবি বা বারএট’ল পাস করলেই যেমন যে কেউ আইনজীবী হিসেবে কাজ করতে পারে না। পারে না নিজেকে আইনজীবী হিসেবে পরিচয় দিতেও। ঠিক তেমনি চিন্তা করা হচ্ছে চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে। আর এ বিষয়ে প্রস্তাব এসেছে দেশের খ্যাতিমান চিকিৎসকদের মধ্যে থেকেই। কেননা বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার মান নিয়ে অনেকের মধ্যেই অসন্তোষ বিরাজ করছে। এছাড়াও চিকিৎসকদের বীমা বাধ্যতামূলক করার কথা চিন্তা করছে সংশ্লিষ্টরা। যাতে কোন রোগী ভুল চিকিৎসার শিকার হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ডাক্তার তার বীমা থেকে ক্ষতি পূরণ পরিশোধ করতে পারে। আর অনেক দেশেই এ ধরনের বীমার ব্যবস্থা রয়েছে।
১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে কমিশন এ পর্যন্ত ১৪২টি প্রতিবেদন আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। সুপারিশ, পর্যবেক্ষণ ও মতামতভিত্তিক এসব প্রতিবেদনের মধ্যে ৩৩টি সম্পূর্ণ বা আংশিক বাস্তবায়ন এবং মতামত গ্রহণ করেছে সরকার। ২০১৫ সালে ৫টি আইন সংশোধনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট বিচাররকদের দায়বদ্ধতা, বিলুপ্তি ছিটমহলের আইনি সমস্যা, মামলা জট নিরসরে ও মানসিক স্বাস্থ্য আইন নিয়ে সুপারিশ পাঠানো হয়। ২০১৪ সালে মোট ৯টি আইন সংশোধনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। সর্বশেষ স্বাস্থ্য আইন কাজ করছে কমিশন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ‘স্বাস্থ্য সেবা’ আইন হচ্ছে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ