পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : ইংল্যান্ডের ২ হাজার মধ্যযুগীয় চার্চে প্রার্থনাকারীর সংখ্যা ১০ জনের চেয়েও কম। আর ৮ হাজার চার্চে টেনেটুনে ২০ জনের দেখা মেলে। যত অ্যাংগলিকান গির্জায় যায় তার চেয়ে অনেক বেশী মুসলমান মসজিদে যায়। সুন্দর গির্জাভবনগুলো স্রেফ প্রার্থনাকারীশূন্য। দরজাগুলো তালাবন্ধ। গির্জার আঙ্গিনায় ঘাস জমছে। কোনো গির্জা নিজেদের ব্যয় বহন করতে পারেছে না। কোনো ক্যাথেড্রাল পর্যটকদের পরিদর্শনের জন্য খুলে দেয়া হচ্ছে এবং তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অর্থে সব ব্যয় মিটানো হচ্ছে।
ইংরেজ ঐতিহ্যবাহী ৯শ’রও বেশী চার্চ এখন ঝুঁকির তালিকাভুক্ত। শুধু গত বছরেই এ তালিকায় যোগ হয়েছে ১৫৯টি গির্জা। ২০১৩ সালে ক্যান্টারবেরির সাবেক আর্চবিশপ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন যে চার্চ অব ইংল্যান্ড বিলুপ্ত হওয়া থেকে এক প্রজন্ম দূরে রয়েছে। গির্জাগুলো এখন নিজের কফিনেই আটকা পড়েছে। দেশের প্রতিটি কম্যুনিটিতেই গির্জা আছে। কিন্তু এসব কম্যুনিটির ২ শতাংশ মানুষ সেগুলোর সাথে সংযোগ থাকার কথা স্বীকার করে। বাকীরা এগুলোকে মরণমুখী সমাজের একটি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে দেখে। বর্তমান অবস্থা অব্যাহত থাকলে সেগুলো একদিন অবশ্যই ধ্বংস হয়ে যাবে।
ব্রিটেনের রেলওয়ে ১৯৫০-এর দশকে এ রকম দুরবস্থায় পড়েছিল। ট্রেনগুলো যাত্রীশূন্য অবস্থায় সুন্দর কিন্তু জনবিরল পল্লীএলাকার মধ্য দিয়ে চলাচল করত। ১৯৬৩ সালে ড. বিচিং এ ব্যাপারে রিপোর্ট করার পর কেউ ভাবতে পারেনি যে তারা আবার এ পল্লী এলাকার লাইনগুলো পুনরুজ্জীবিত হতে দেখতে পারবে। যাত্রীবহন লাভজনক ছিল না, যাত্রীও ছিল না।
ক্যাথেড্রালগুলোও আজ আর্ট গ্যালারি ও কনসার্ট হল, থিয়েটার ও সম্মেলনস্থল, সামাজিক কেন্দ্র ও স্কুলে পরিণত হয়েছে।
চার্চ অব ইংল্যান্ডের তাদের সম্পদের একট বড় অংশই এখন পরিত্যাগ করা দরকার, সম্ভবত অর্ধেকাংশই। তবে রেলওয়ের মত তাদের ভবনগুলো ভেঙ্গে ফেলা যাবে না। আর তাদের চিন্তা সেগুলো পরিত্যাগ করা নয়, বরং কীভাবে সেগুলো পূর্ণ করা করা যায়। চাচগুলোর অর্ধেকই পল্লী অঞ্চলে, সেগুলোতে প্রার্থনাকারীদের পুনঃসমাবেশ ঘটানো শুধু চার্চেরই নয়,গোটা মধ্যযুগেরই পুনরীজ্জবন হবে।
গত বছর ওরসেস্টারের বিশপ জন ইঙ্গে পল্লী এলাকার বিশপের কিছু প্রতিনিধির কাছ থেকে আবেদন পান যে তারা ডুবে যাওয়ার কাছে পৌঁছেছে। এক রিপোর্টে তিনি স্থানীয় কম্যুনিটি কর্তৃক ব্যবহৃত শত শত চার্চ ভবনকে বছরের বাকি সময়ের জন্য ফেস্টিভ্যাল চার্চে রূপান্তরিত করার প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন, বিচিং-এর সুপারিশ মত এগুলো বন্ধ করা হলে তাতে একটি শক্তিশালী বার্তা মিলবে যে এ দেশে খ্রিস্টান ধর্মের দিন শেষ হয়ে গেছে। কিছু শুন্য চার্চ ভবন সে বার্তাই দিচ্ছে।
তবে ৪২টি ইংরেজ ক্যাথিড্রালের ক্ষেত্রে এর বিরাট ব্যতিক্রমও রয়েছে। গত শতকে ব্যাপক ভাবে মনে করা হত যে পুরনো শহর কেন্দ্রে অবস্থিত বয়সী ভবনগুলোর উপযুক্ত যতœ করা না হলে সেগুলোর অবনতি ঘটবে। স্থানীয় গির্জাগুলোর সাথে সেগুলোর সঙ্গতি সাধিত হয়। কিন্তু সেগুলোর বিরাট মেরামত বিল নিরূপায় অবস্থার ইঙ্গিত দেয়।
একুশ শতকে কিছু একটা ঘটেছে। বছরে ৫ শতাংশ হ্রাস পাওয়া থেকে ক্যাথেড্রালে উপস্থিতির সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। এখন এক দশকের মধ্যে ধর্মীয় প্রার্থনা সভাগুলোতে উপস্থিতি এক তৃতীয়াংশ বেড়েছে। এটা কিন্তু বিপুল পরিমাণ পর্যটক আগমন থেকে পৃথক যাদের সংখ্যা বছরে প্রায় ৮০ লাখ। ক্যাথেড্রালগুলোর রাজস্ব ১০ বছরে দ্বিগুণ হয়েছে। অন্যদিকে তহবিল সংগ্রহে বিপুল সাফল্য দেখা যাচ্ছে। ১০টি ক্যাথেড্রালে প্রবেশ মূল্য নেয়া হয়। আরো অনেকেই তা করতে পারে।
সান্ধ্যসঙ্গীতগুলোতে উপস্থিতি বেড়েছে, সমাবেশগুলোর আকর্ষণ স্পষ্টতই সঙ্গীত। ক্যাথেড্রালগুলো হয়ে উঠেছে আর্ট গ্যালারি ও কনসার্ট হল, থিয়েটার ও কনফারেন্স স্থল, সামাজিক কেন্দ্র ও স্কুল। ক্যান্টারবেরী কেন্ট বিশ^বিদ্যালয়ের জন্য ব্যয়বহুল অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেন্ট আলবানস হচ্ছে একটি ওয়ান-স্টপ শপ যা স্থানীয় হাই স্ট্রিটের প্রতিদ্বন্দ্বী। ব্ল্যাকবার্ন শহরের ক্যাথেড্রাল কোয়ার্টারের ব্যাপক পুননির্মাণ শুরু করেছে।
আধুনিক ক্যাথেড্রালের আবেদন অনেক ব্যাপক। ধর্মীয় থিংকট্যাংক থিওস বলেছে যে নাস্তিকদের এক ষষ্ঠাংশ ও বিলুপ্ত খ্রিস্টানদের এক চতুর্থাংশ এখনো ক্যাথেড্রাল পরিদর্শন করে। তারা প্রান্তিক ধার্মিকদের কাছে আবেদন করে যারা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হলে নিজেদের শোভনভাবে অজ্ঞেয়বাদী বলে আখ্যায়িত করে। সমাজবিজ্ঞানী গ্রেস ডেভিস বিস্মিত যে প্রার্থনাকারীদের মধ্যে কত জন আসলে প্রার্থনা করেন। তিনি ক্যাথেড্রালগুলোকে বিশপের প্রতিনিধিদের ধর্মীয় স্থান হিসেবে দেখেন। সেগুলো এমন এক স্থান যেখানে লোকে কোনো চাপ বা অভ্যর্থন ছাড়া আসতে বা যেতে পারে। দর্শনার্থীরা একটি পিলারের পিছনে লুকোতে পারে। তাদের প্রার্থনা করার বা প্রার্থনা সঙ্গীত গাওয়ার দরকার নেই।
রেলওয়ের সমান্তরাল সুপারিশ ছিল যে কোনো কিছুই চিরস্থায়ী নয়। ড. বিচিং-এর সুপারিশ অনুযায়ী বাতিলকৃত অনেক শাখা লাইন পর্যটকদের আবার ব্যাপক আগমন ঘটার প্রেক্ষিতে রেল পর্যটন দপ্তর আবার চালু করেছে। ব্রিটেনে এখন ২শ’র মত হেরিটেজ রেলওয়ে রয়েছে যার অধিকাংশই বিচিং লাইনের উপর। ব্রিটেন যদি কোনোদিন খ্রিস্টধর্মের প্রকৃতই পুনরুজ্জীবন দেখে , হেরিটেজ চার্চগুলো ও সেগুলোর ধর্মীয় অনুষ্ঠান সংরক্ষণ করতে হবে । আপাতত ভান করার কোনো জায়গা নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।