পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৫০০ টাকার প্রলোভন দেখিয়ে শুরু হয় কমিউনিটি জবস অফার। তাদের সিলভার এবং গোল্ড দুই ধরনের ফাঁদে পা দেন অনেকেই। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম রিং আইডি গত মে, জুন ও জুলাই মাসে হাতিয়ে নিয়েছে ২১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এসব টাকা জায়েজ করতে ও প্রতারণার মাধ্যমে আরও টাকা হাতিয়ে নিতে তারা নগদ-বিকাশের মতো মোবাইল ব্যাংকিং ‘রিং পে’ চালু করতে চেয়েছিল। প্রাথমিত তদন্ত ও গ্রেফতারকৃত পরিচালক সাইফুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছেন সিআইডির কর্মকর্তারা।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট্র সিআইডির একজন কর্মকর্তা বলেন, রিং আইডির পরিচালক সাইফুল ইসলামকে দু’দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আরো ৫দিনের রিমান্ড চেয়ে মঙ্গলবার তাকে আদালতে হাজির করা হবে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে তার দেয়া গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে কাজ করছে সিআইডি।
সিআইডির সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে রিং আইডি কমিউনিটি জবস মেম্বারশিপ চালু করে। মেম্বারশিপের মাধ্যমে এখানে বিনিয়োগ করে টাকা আয়ের সুযোগ দেওয়া হয়। এজন্য বর্তমানে দুটি প্যাকেজ অফার রয়েছে। সিলভার মেম্বারশিপ ও গোল্ড মেম্বারশিপ। সিলভার মেম্বারশিপের মূল্য ১২ হাজার টাকা এবং গোল্ড মেম্বারশিপের মূল্য ২২ হাজার টাকা। পাশাপাশি এখানে আরও দুটি প্রবাসী প্যাকেজ রয়েছে। প্রবাসী গোল্ড ২৫ হাজার টাকা এবং প্রবাসী প্লাটিনাম ৫০ হাজার টাকা। মেম্বারশিপ পাওয়ার পর বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। ওই বিজ্ঞাপন যত গ্রাহক দেখেন তত টাকা আয় হয়।
এভাবে রিং আইডি কমিউনিটি জবস মেম্বারশিপের সিলভার প্যাকেজ থেকে প্রতিদিন ২৫০ টাকা এবং প্রতি মাসে সাড়ে সাত হাজার টাকা, গোল্ড মেম্বারশিপ থেকে প্রতিদিন ৫০০ টাকা এবং প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে বলে দাবি করা হয়। এছাড়া প্রবাসী গোল্ড মেম্বারশিপ থেকে প্রতিদিন ৫০০ টাকা এবং প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা, প্রবাসী প্লাটিনাম প্যাকেজ থেকে প্রতিদিন এক হাজার টাকা এবং প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকা আয়ের সুযোগ আছে বলে অফার দেয় রিং আইডি। এসব প্রলোভনের ফাঁদে পা দেন অনেকেই। যারা ইতোমধ্যে খুইয়েছেন লাখ লাখ টাকা।
সিআইডির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে বরেণ, রিং আইডি তাদের প্রতারণার কৌশল হিসেবে বিকাশ অথবা নগদের মতো মোবাইল ব্যাংকিং চালু করতে চেয়েছিল, যাতে করে গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করা খুব সহজ হয়। গ্রাহকদের বিভিন্ন প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে তাদের টাকা হাতিয়ে নেওয়াই ছিল মূল উদ্দেশ্য।
রিং আইডির কয়েকজন ভুক্তভোগী গ্রাহক জানান, গোল্ড মেম্বারশিপ কেনার জন্য এক মাস আগে ২২ হাজার টাকা করে পেমেন্ট করেন তারা। অ্যাকাউন্ট থেকে টাকাও কেটে নেয়া হয়। কিন্তু তাদের আইডি এখনো অ্যাকটিভ হয়নি। এ বিষয়ে তাদের বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করেও কোনো কাজ হয়নি। এভাবে মেম্বারশিপের নামে শত শত গ্রাহকের টাকা হাতিয়েছে রিং আইডি।
সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার রিং আইডির অবৈধ কার্যক্রম সম্পর্কে বিপুল পরিমাণ তথ্য সংগ্রহ করে তিন মাসে ২১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার তথ্য পায়। তাদের এসব সন্দেহজনক কার্যক্রম লক্ষ্য করে বেশ কিছুদিন আগে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার থেকে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) অনুসন্ধানের জন্য একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। বিএফআইইউ ইতোমধ্যে এ বিষয়ে তাদের অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে।
সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মুহাম্মাদ রেজাউল মাসুদ সাংবাদিকদের বলেন, ২০০ কোটি টাকার বেশি জায়েজ করার জন্য আরও অনেক প্রতারণার পরিকল্পনা ছিল রিং আইডির। যেমন-নগদ, বিকাশের মতো মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম (রিং পে) চালু করা, ই-টিকেটিং, ইভ্যালির মতো ই-কমার্স সাইট তৈরিসহ প্রতারণার মহাপরিকল্পনা ছিল তাদের। এই সবকিছুর মধ্যে মনে হয়েছে একটি অস্পষ্টতা রয়েছে তাদের। প্রতিষ্ঠানটি বিদেশে যেন টাকা পাচার করতে না পারে সেজন্য রিং আইডির সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রিং আইডি ইস্যুতে সাইবার পুলিশ সেন্টারে মানি লন্ডারিং বিষয়ে একটি অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান। গত ৩০ সেপ্টেম্বর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একজনের করা মামলায় শুক্রবার রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম রিং আইডির পরিচালক সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করে সিআইডি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।