Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নির্মাণ শ্রমিক লীগ নেতার ভয়ঙ্কর প্রতারণা!

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০২ এএম

নাম আব্দুল মুত্তালিব চিশতি। ভক্তরা চেনেন ‘পীর চিশতি’ নামে। আবদুল মুত্তালিব চিশতির গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের ধরমপাশায়। পবিত্র কোরআনের সর্বসাকুল্যে তিনটি সুরা জানা আবদুল মুত্তালিব চিশতি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একজন পীর হিসেবে। রাজধানীর ভাটারায় আস্তানা গড়ে দেশজুড়ে তৈরি করেছেন হাজারো মুরিদ। শুধু তাই নয়, সপ্তাহান্তে নিজের আস্তানায় ওরস-জিকিরের নামে বিপুল লোকের সমাগম ঘটাতেন। আর সেখান থেকেই শুরু হতো তার টার্গেট নির্ধারণ। পীর-মুরিদের এই ফাঁদে চলতো তার বিকৃত যৌনাচার, আর চাকরিসহ নানা প্রলোভনে তিনি হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক কোটি টাকা।

প্রতারণার বেশ কয়েকটি অভিযোগের ভিত্তিতে গত সোমবার রাজধানীর উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের একটি বাসা থেকে আবদুল মুত্তালিব চিশতি নামে কথিত এই পীরকে গ্রেফতার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ডিবি সূত্রে জানা যায়, কথিত এই পীর ধর্মীয় লেবাসে একটি প্রতারক চক্র গড়ে তুলেছেন। আওয়ামী নির্মাণ শ্রমিক লীগের নামে একটি সংগঠনে আবদুল মুত্তালিব বাগিয়ে নিয়েছেন সহ-সভাপতির পদ। আর ওই পরিচয় ব্যবহার করে তিনি যাতায়াত করতেন সচিবালয়ে। মন্ত্রী-সচিবদের সঙ্গে ছবি তুলে সেসব দেখিয়ে চাকরিসহ নানা সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে তিনি হাতিয়ে নেন বিপুল পরিমাণ টাকা।

ডিবির গুলশান বিভাগের ডিসি মশিউর রহমান বলেন, কথিত পীর মুত্তালিব নরসিংদীর রায়পুরার ছয় ব্যক্তিকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে মাস্টাররোলে চাকরি দেওয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে ২৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া নেত্রকোনার একটি ইউনিয়ন পরিষদের এক চেয়ারম্যান প্রার্থীকে নৌকা প্রতীক পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা নিয়েছেন।

তিনি বলেন, বিভিন্ন জনের কাছ থেকে নানাভাবে প্রতারণা করে গত আট বছরে তিনি কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এমন প্রতারণার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগীরা। চাকরির প্রলোভন ছাড়াও কম মূল্যে রাজউকের প্লট দেওয়া এবং সিটি করপোরেশন, পৌরসভা-ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সামনে রেখে মেয়র, চেয়ারম্যান ও সদস্যপদে নৌকা প্রতীক পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, কথিত পীর মুত্তালিবের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাস থেকে দেশের নানা জায়গায় সফরে যেতেন। সেখানে পীর হিসেবে বয়ান দিয়ে মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতেন। সাধারণ মানুষজন তার সঙ্গে যোগাযোগ করলেই শুরু হতো তার প্রতারণা। গ্রেফতারের পর তার মোবাইল ফোন থেকে বিকৃত যৌনাচারের তথ্য পাওয়া গেছে। মুত্তালিবকে ভাটারা থানায় দায়েরকৃত একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে গত মঙ্গলবার আদালতে পাঠানো হয়। ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তার একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গতকাল রিমান্ড শেষ হয়েছে। আজ ফের তাকে আদালতে হাজির করা হবে বলেও জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভয়ঙ্কর প্রতারণা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ