পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : দেশের সংবিধান অনুসারে অন্ন, বস্ত্রের পরেই মোলিক অধিকার হচ্ছে বাসস্থান। ব্যাংকারদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে আজ পর্যন্ত কোন আবাসন গড়ে ওঠেনি। যার ফলে অধিকাংশ ব্যাংকাররা আবাসন ব্যয় মেটাতে হিমশিম খায়। বিশেষ করে আবাসন ব্যয় মেটাতে অনেকে অনৈতিক কর্মকান্ডেও জড়িয়ে পড়ছে বলে জানা গেছে।
রাষ্ট্রয়ত্ব ব্যাংকে ব্যাংকারদের জন্য অল্প সুদে আবাসন ঋণ থাকলেও তা ভোগ করতে পারেন না ৯০ ভাগ ব্যাংকার। ১০ ভাগ ব্যাংকার রাজনৈতিক প্রভাব খাঁটিয়ে আবাসন ঋণ নিয়ে বাড়ি করে পারেলেও। অধিকাংশ ব্যাংকার বছরের পর বছর মানবেতর জীবন যাপন করে থাকেন। বিশেষ করে সৎ ও দক্ষ ব্যাংকাররা বছরের পর অর্থনীতির চাকা ঘুরিয়ে গেলেও ঘুরছে না তাদের ভাগ্যের চাকা।
রাষ্ট্রায়ত্ব রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের সহকারী মহা-ব্যবস্থাপক জয়নাল (ছদ্মনাম) ৯৮ সালে অফিসার হিসেবে যোগদান করেন ব্যাংকটিতে। দীর্ঘ ১৬ বছর বিভিন্ন শাখায় ব্যবস্থাপক হিসেবে ছিলেন। ব্যবস্থাপক থাকাকালীন সময়ে তার হাত ধরে শিল্পপতি হয়েছেন অন্তত ১০ জন। এছাড়াও বিভিন্ন ট্রেডিং ব্যবসায় উদ্যোক্তা তৈরী হয়েছে অন্তত ১০০ জন। যারা সবাই এখন ঢাকা শহরের বাড়ির মালিক কিন্তু ১৮ বছর চাকরি করে জয়নাল থাকেন এখন ও থাকেন ভাড়া বাসায়। তার বেতনের অধিকাংশ অর্থ চলে যায় বাড়ি ভাড়ায়। একমেয়ে ও এক ছেলের সংসার চালাতে তার হিমশিম খেতে হয় তাকে। বড় ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়লেও মেয়ে পড়েন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে। মেয়ের টিউশন ফির টাকা জোগাড় করতে সারা বছর ধার করতে হয় তাকে।
তিনি বলেন আমাদের ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী আমি ৬৫ লক্ষ টাকা গৃহনির্মাণ ঋণ পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু কম সুদের ঋণে বাড়ি করার ভাগ্যে হয় নি তার। কারণ ১৮ বছরে তিনি ঋণ পেয়েছেন মাত্র ২১ লক্ষ টাকা। বছর শেষে কখনও ৫০ হাজার কখনও ১ লাখ সর্বোচ্চ ২ লক্ষ টাকা পেয়েছেন তিনি। যে টাকা বাজার করে খাওয়া ছাড়া অন্য কোন কাজেই লাগে নি। যার ফলে তার দায়ও বেড়েছে কিন্তু হতে পারেন নি বাড়রি মালিক। তার ভাষ্য অনুসারে একই ব্যাংকে জনসংযোগ বিভাগে চুক্তিভিত্তিক এক এজিএম মাত্র তিন বছর চাকরি করেই ৬৫ লক্ষ টাকা গৃহনির্মাণ ঋণ নিয়েছেন। এমনকি তার স্ত্রী একই ব্যাংকে কর্মরত হিসেবে আর ৫৫ লক্ষ টাকা নিয়মনীতির লঙ্ঘন করে রাজনৈতিক প্রভাব খাঁটিয়ে নিয়েছেন সেই চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তা। রাজধানী রমনা শাখায় কর্মরত এই সহকারী মহাব্যবস্থাপকের আক্ষেপ মরার আগেও তিনি তার সন্তানদের কাছে ব্যর্থ হিসেবে পরিচিত হবেন। কারণ রাজধানীতে বসবাস করতে গেলে কোন জমানো অর্থ থাকে না। যার ফলে তার সঞ্চয় হচ্ছে শূন্য। তার দাবি সরকারি অন্যান্য চাকরিজিবিদের মত ব্যাংকারদের আবাসন সুবিধা দিলে তারা স্ব”্ছল ভাবে চলতে পারতো।
এবিষয়ে রূপালী ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ব্যবস্থাপনা পরিচালক চলতি দায়িত্ব) দেবাশীষ চক্রবর্তীর সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি ফোন ধরেন নি।
অগ্রণী ব্যাংকেও একই অবস্থা বিরাজ করছে বলে জানান ব্যাংকটির উপমহা-ব্যবস্থাপক জমির হোসেন গাজী। তিনি বলেন, তার ১৯ বছরের জীবনে তিনি গৃহনির্মাণ ঋণ পেয়েছেন মাত্র ৩৫ লক্ষ টাকা। অথচ তার অনুমোদিত সিলিং হচ্ছে ৬৫ লক্ষ টাকা।
জনতা ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক আব্দুল কাদির গনি বলেন, তিনি ২০ বছর চাকরি করে গৃহনির্মাণ ঋণ পেয়েছেন মাত্র ২২ লক্ষ টাকা। যে টাকায় বাজার খরচ ছাড়া অন্য কিছুই সম্ভব হয় নি।
তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ ডেভলোপমেন্ট ব্যাংক ও বেসিক ব্যাংক বাদে সকল ব্যাংকের অবস্থা একই। সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকের ব্যাংকাররা চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার আগেরদিন ও গৃহনির্মাণ ঋণের সম্পূর্ণ অংক পান না। কমসুদে গৃহনির্মাণ ঋণ এক ধরনের মুলা ছাড়া ব্যাংকারদের কাছে কিছুই না। যার ফলে অর্থনীতির চালিকা শক্তির পেশাজীবি ব্যাংকার রা মোলিক চাহিদা বাসস্থান থেকে সারাজীবন থেকে যান অনেক দূরে।
এবিষয়ে অর্থমন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ফজলুল হক ইনকিলাবকে বলেন, বাণিজ্যক ব্যাংকগুলো সম্পূর্ণ নিজস্ব নিয়মে পরিচালিত হয়। কারণ তারা পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি। তাদের কর্মীদের দায়ভার নিজ নিজ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষেেদর। তবে আমরা ব্যাংকিং বিভাগ থেকে পরিচালনা পর্ষদ সমূহে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করবো যেন তারা গৃহনির্মাণ ঋণের ব্যাপারে কোন কার্পণ্য না করেন। কারণ এই মূহূর্তে আমানতের সুদ কম এবং কষ্ট অব ফান্ড নেই বললেই চলে তাই নিজ কর্মীদেরকে ঋণ দিয়ে তারা পরিচালন ব্যয় কমাতে পারে। অতিরিক্ত সচিবের মতে গৃহনির্মাণ ঋণ সাধারণ ঋণের চেয়ে বেশী নিরাপদ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।