পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাহাঙ্গীর হোসেন, মির্জাপুর থেকে : মসজিদ নির্মাণ-উন্নয়নের নামে দেয়া সরকারি অনুদানের টাকা বা চাল আত্মসাৎ অথবা মসজিদের জায়গা দখল করে ভবন বা মার্কেট নির্মাণ করছেন প্রভাবশালীরা। এমন সবখবর পত্রিকার পাতায় নিত্যদিনের হলেও ব্যতিক্রমী এক খবর পাওয়া গেছে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে। ভিক্ষা করে ও বয়স্ক ভাতার টাকা জমিয়ে স্বামীর রেখে যাওয়া শেষ সম্ভল ২৪ শতাংশ জমির উপর মসজিদ নির্মাণ করেছেন কালুজান বেওয়া নামে এক বৃদ্ধা। একেক জনের একের ইচ্ছা থাকলেও বৃদ্ধা কালুজান বেওয়ার জীবনের শেষ ইচ্ছা তার প্রতিষ্ঠিত মসজিদ একদিন পাকা ভবন হবে। আর সেই মসজিদে শতশত মসুল্লি নামাজ আদায় করবেন। ভিক্ষা করে মসজিদ নির্মাণ করা কালুজান বেওয়ার (৭০) বাড়ি এ উপজেলার তরফপুর ইউনিয়নের শীরঘাটা গ্রাম।
জানা গেছে, কালুজান বেওয়ার স্বামী নিজাম উদ্দিন গত প্রায় ৪ বছর আগে মারা যান। দিনমজুর নিজাম উদ্দিন নিজের এবং পরের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাতেন। ভিটি বাড়ি আর বাড়ির পাশের ২৪ শতাংশ জমিটুকু রেখে যান তিনি। অভাবের সংসারে ৪ ছেলে পরের বাড়িতে কাজ করে তাদের নিজ নিজ সংসার চালালেও বৃদ্ধা কালুজান মানুষের বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করে জীবন ধারণ করতে থাকেন। সরকারের দেয়া বয়স্ক ভাতা আর বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করে চলতে থাকে বৃদ্ধা কালু জানের একার সংসার।
কিন্ত বৃদ্ধা কালুজানের মনের ইচ্ছা তিনি মৃত্যুর পূর্বে তার স্বামীর রেখে যাওয়া জমির উপর একটি মসজিদ নির্মাণ করবেন। ভিক্ষা ও বয়স্ক ভাতার টাকায় সংসার চালানো পর যে টাকা উদ্বৃত্ত হতো সেই টাকা জমা করতে থাকেন ওই বাঁশতৈল ইউনিয়নের বাসিন্দা ও তরফপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ফজলুর রশিদ বাজেদের কাছে।
বজলুর রশিদ বাজেদ জানান, বয়স্ক ভাতা ও ভিক্ষার টাকা তিনি দীর্ঘদিন ধরে তার কাছে জমাতে থাকেন। সবশেষ প্রায় দেড় লাখ টাকা তার কাছে জমা করেন কালুজান।
এভাবে খেয়ে না খেয়ে তার জমাকৃত টাকার পরিমান গিয়ে দাঁড়ায় ২ লাখ ৪ হাজার টাকায়। এই টাকা জমা হওয়ার পর অনেকেই তাকে বড় করে খরচ (মৃত্যুর পূর্বে নিজের ও স্বামীর নামে মানুষ খাওয়ানো) করার পরামর্শ দেন। কিন্তু এবার তিনি তার মনের ভেতরের লুকানো ইচ্ছে বাস্তবায়নের কথা ফজলুর রহমান বাজেদসহ এলাকাবাসীকে জানান। তারা সাবাই তার ইচ্ছায় সায় দিতে তিনি শীরঘাটা গ্রামের বড়ই বাগান এলাকায় স্বামীর রেখে যাওয়া সেই ২৪ শতাংশ জমিতে মসজিদ নির্মাণ করেন। ইতিমধ্যে মসজিদ ঘর নির্মাণ শেষ হয়েছে। কিন্ত জমানো টাকা শেষ হওয়ায় ঘরের ফ্লোর পাকা করা সম্ভব হয়নি। তরফপুর-মির্জাপুর-বাঁশতৈল যাওয়ার রাস্তা সংলগ্ন জমির পাশে মসজিদটি নির্মিত হওয়ায় এলাকার লোকজন ছাড়াও পথচারীরাও নামাজ পড়ছেন মসজিদটিতে। ইতিমধ্যে একজন ইমামও রাখা হয়েছে। তবে বর্তমানে তাকে বেতন দিতে হয় না। তাছাড়া মসজিদের মোমবাতি ও আগরবাতিসহ আনুসাঙ্গিক খরচও বৃদ্ধা কালুজান বেওয়া বহন করছেন। বৃদ্ধা কালুজান বেওয়ার ইচ্ছা তার প্রতিষ্ঠিত মসজিদ একদিন পাকা ভবন হবে। আর সেখানে নামাজ পড়বেন শতশত মসুল্লি। বৃদ্ধা কালুজান বেওয়ার জীবনের শেষ ইচ্ছা কি পূরণ হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।