Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের উল্টো কাজ করছে সরকার রিজভী

এজি অফিসের বাধার কারণে মুক্তি পাচ্ছেন না মাহমুদুর রহমান

প্রকাশের সময় : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহম্মেদ অভিযোগ করেছেন, প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের সম্পূর্ণ উল্টো কাজ করছে সরকার। অ্যাটর্নি জেনারেল (এজি) অফিসের বাধার কারণে আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মুক্তি হচ্ছে না। গতকাল বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী আহম্মেদ এই অভিযোগ করেন।
রিজভী আহম্মেদ বলেন, প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে মাহমুদুর রহমান আজ সরকারের সীমাহীন জুলুমের শিকার। তার বিনা অপরাধে জেলে বন্দি থাকার আজ ১০৩৫ দিন, অর্থাৎ তিন বছর হয়ে গেছে। উচ্চতর আদালত থেকে তার সবগুলো মামলায় জামিন হয়েছে এবং আদালত থেকে জামিননামাও যথারীতি কারাগারে পৌঁছানো হয়েছে। কিন্তু তাকে মুক্তি দেয়া হচ্ছে না।
কয়েকদিন আগে ডেইলি স্টারের ২৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্টের বক্তব্য তুলে ধরে রিজভী আহম্মেদ বলেন, তিনি (প্রেসিডেন্ট) গণমাধ্যমকে ‘সাহস করে সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলার’ পরামর্শ দেন। গণতন্ত্রের জন্য মুক্ত গণমাধ্যমের অপরিহার্যতার কথা উল্লেখ করে ‘সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে আক্রমণ গণতন্ত্রের জন্য হুমকি’ বলে মন্তব্য করেন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু সরকার তার উল্টো কাজটি করছেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতকেও অবজ্ঞার অভিযোগ করে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেলের কাজই হচ্ছে জামিনপ্রাপ্ত আসামিরা যাতে জেল থেকে বের হয়ে না পারেন, অনবরত তার চেষ্টা করা। আমরা যখন কারাগারে ছিলাম, আমরা দেখেছি, জামিন হয়ে গেছে। শুনতে পারছি কালকেই আমরা ছাড়া পাব। হঠাৎ অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে বলে দেয়া হয়, অ্যাডভোকেট অন রেকর্ডস কে একজন আছেন বলে দেয়া হয় জেলরকে। আমাদের ক্লিয়ারেন্স না পাওয়া পর্যন্ত আপনারা ছাড়বেন না। অর্থাৎ উচ্চতর আদালতকেও অবজ্ঞা করেন তারা (অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস)।
মাহমুদুর রহমান, শওকত মাহমুদসহ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, মির্জা আব্বাস, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেন রিজভী।
২০১৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি কারওয়ান বাজারে আমার দেশ কার্যালয় থেকে মাহমুদুর রহমানকে পুলিশ আটক করে। তার বিরুদ্ধে আইসিটি আইনসহ বিভিন্ন আইনে ৭০টি মামলা দেয়া হয়েছে।
রিজভী অভিযোগ করে বলেন, মাহমুদুর রহমানের সর্বশেষ মামলার জামিননামা ৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় কাশিমপুর কারাগারে পৌঁছায়। নিয়মানুযায়ী শুক্রবার তার মুক্তি পাওয়ার কথা। তারপরও সরকার একটি মানহানি মামলায় প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট প্রত্যাহার না করার অজুহাত দেখিয়ে সম্পূর্ণ অন্যায় ও অবৈধভাবে আটকিয়ে রেখেছে। ঈশপের গল্পের মতো সরকার জোর করে আটকিয়ে রাখার অপচেষ্টা করছে। একই সঙ্গে আমরা আশঙ্কা করছি, আরো মামলা দিয়ে মাহমুদুর রহমানকে আটকে দেয়ার পাঁয়তারা করছে।
বিটিআরসি’র আরেকটি মানহানি মামলায় মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে আনীত প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট প্রত্যাহারের শুনানি গত ৩ ফেব্রুয়ারি হলেও এখনো আদেশ দেয়া হয়নি বলে হতাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আজ তিন বছর ধরে আমার দেশ পত্রিকাটি বন্ধ। পত্রিকার ৫ শতাধিক সাংবাদিক বেকার হয়ে কষ্টে জীবন-যাপন করছেন। সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের হস্তক্ষেপের কারণে তিন বছর হয় হাইকোর্টে আমার দেশ পত্রিকার মামলাটির শুনানি পর্যন্ত করা হয়নি।
একইভাবে দীর্ঘদিন কারাবন্দি এম কে আনোয়ারের জামিন হলেও তাকে মুক্তি দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন রিজভী। এ সময় তিনি আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, শওকত মাহমুদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি এবং মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলম, যুববিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সাংবাদিক সৈয়দ আবদাল আহমদ প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের উল্টো কাজ করছে সরকার রিজভী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ