পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : জাতীয় পরিচয়পত্র হিসাবে ‘স্মার্টকার্ড’ বিতরণ শুরুর এক সপ্তাহ পেরুলেও এখনো কর্তৃপক্ষের ‘অব্যবস্থাপনা’ ও ‘যান্ত্রিক ত্রুটি’ ভোগান্তি দূর হচ্ছে না। বিতরণের শুরু থেকেই তাই ভোগান্তিতে নাগরিকরা।
সঠিক নির্দেশনা না পেয়ে নির্ধারিত এলাকার বাইরের লোকেরা যেমন বিতরণ কেন্দ্র ভিড় করেছেন, তেমনি আঙুলের ছাপ নিয়ে সফটওয়ারের জটিলতায় অনেককে ফিরে যেতে হয়ে স্মার্টকার্ড না নিয়েই।
এদিকে স্মার্টকার্ডে আগ্রহ বাড়াতে প্রচারণার নির্দেশ থাকলেও স্মার্টকার্ডের তথ্য বিতরণে এখনো ‘আনস্মার্ট’ ইসি। আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের নয় কোটি নাগরিকের হাতে স্মার্ট কার্ড পৌঁছে দেয়ার কথা রয়েছে।
গতকাল শনিবার ছুটির দিনে বিতরণ কেন্দ্র গুলোতে ভিড় দেখা গেলেও একেকবার একেক নির্দেশনায় হতচকিত নাগরিকরা ক্ষোভ ঝেড়েছেন নির্বাচন কমিশনের প্রতি। ঢাকার উত্তরা ও সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজে স্মার্টকার্ড বিতরণে নাগরিক ভোগান্তি এখনো লেগেই আছে।
রাজধানীর উত্তরা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ ঘুরে দেখা গেছে, অব্যবস্থাপনার নানা চিত্র। কেউ কেউ স্মার্ট কার্ড না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন, কেউ আবার আঙুলের ছাপ নিয়ে সফটওয়ারের জটিলতায় ফিরে গেছেন স্মার্টকার্ড না নিয়েই।
এদিন উত্তরা মডেল টাউন-সেক্টর ৯ এর ভোটারদের কার্ড বিতরণ করার কথা থাকলেও আগের দিন যারা কার্ড পাননি তারাও কেন্দ্রে ভিড় জমিয়েছেন। কোন লাইনে কাকে দাঁড়াতে হবে তা নিয়ে একেকবার একেক সিদ্ধান্ত জানায় কর্তৃপক্ষ। শেষে মাইকে ঘোষণা দিয়ে মাঠের মধ্যেই কার্ড বিতরণ শুরু করেছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মীরা। ওদের সিস্টেমের ঠিক নাই। কখনো বলছে বুথের সামনে লাইন দিতে, কখনো রাস্তায়, এখন বলছে মাঠে লাইন দিতে বলেন স্মার্ট কার্ড নিতে আসা আবু তালেব। তথ্য বিভ্রাট ও অব্যস্থাপনায় ক্ষুব্ধ এ নাগরিক অভিযোগ করেন কমিশনের কর্মীদের বিরুদ্ধেও। তাদের শৃঙ্খলা ও নিয়মের অভাবেই সমস্যা হচ্ছে বলে মন্তব্য তার। ছাতার কার্ডের জন্যে দুই দিন ধরে ঘুরছি, আমাদের কাজ-কর্ম নেই নাকি? উত্তরার ৬ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা আব্দুল হালিম ও মো. সাহেব আলী জানান, তাদের এলাকার ৩০-৪০ জন কেন্দ্রে এসে কার্ড না পেয়ে ফিরে গেছেন।
আব্দুল হালিম বলেন, আমরা গতকাল এসেছিলাম, কিন্তু ফিঙ্গার প্রিন্ট ও আইরিশ স্ক্যান করার পর ওরা বলছে, আমাদের কার্ড নাকি আসে নাই। ওরা নিজেরাও সঠিকভাবে বলতে পারছে না আমাদের কি করা উচিত। এজন্য কমিশনের ‘সার্ভার’কে দুষছেন কর্মকর্তারা। আমাদের সমিতির পাঁচ জনের মধ্যে একমাত্র আমিই কার্ড পাইনি। ওদের সার্ভারে সমস্যা আছে। নইলে আমার পরিবারের সবাই পেল আমি কেন পেলাম না কথাগুলো বলেছেন তারা।
নাগরিক ভোগান্তির এসব অভিযোগ স্বীকার করেছেন নির্বাচন কমিশনের উত্তরা কেন্দ্রের টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞ ফয়সাল মাহমুদ শাহনেয়াজ। তিনি বলেন, যারা কার্ড পাননি তাদের নামগুলো রাখা হয়েছে। এসএমএসের মাধ্যমে তাদের পরে কার্ড দেয়ার সময় জানানো হবে। স্মার্টকার্ড বিতরণের তথ্য জানার চেষ্টা করতে গিয়ে নানা ভোগান্তির অভিযোগ তুলছেন সাধারণ মানুষ।
গত ২ অক্টোবর ঢাকার রমনা ও উত্তরা থানা নির্বাচনী এলাকার দু’টি ওয়ার্ডে প্রথম পর্যায়ে স্মার্টকার্ড বিতরণ শুরু হয়েছে। প্রথম দিনই কারিগরি ত্রুটি, প্রচারের অভাব ও অব্যবস্থাপনায় ভোগান্তির শিকার হতে হয় নাগরিকদের। উত্তরা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ বিতরণ কেন্দ্রে অনেকেই গণমাধ্যমে হেল্পলাইনে’র ভুল প্রচারে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সমস্যার কথা স্বীকার করে উত্তরা থানা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহজালাল বলেন, স্মার্টকার্ড বিতরণের দ্বিতীয় দিনে জটিলতা কিছুটা কমেছে। তবে নির্ধারিত এলাকার নাগরিকদের বাইরে অন্য এলাকার ভোটার আসায় ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে। হেল্পলাইনের সেবা না পাওয়ার বিষয়ে আমাদের করার কিছু থাকে না। যারা সরাসরি আসছে তাদের সুবিধাজনক জবাব দেয়ার চেষ্টা করছি।
ইসির এনআইডি উইংয়ের কমিউনিকেশন্স কনসালটেন্ট হোসাইন মোহাম্মদ আশিকুর রহমান জানান, এখন যেসব ওয়ার্ডে কার্ড বিতরণ চলছে শুধু তার তথ্যই রয়েছে তাদের কাছে। তিনি বলেন, আমরা ঢাকায় কাজ শুরুর পরই নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি, অনেক অভিযোগ পাচ্ছি। সমস্যা সমাধানে যথাযথ ব্যবস্থা শিগগির নেয়া হচ্ছে।
ইসির জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান বলেন, এসএমএস তথ্য পাওয়ার বিজ্ঞাপনে একটা ভুল হয়েছিল। এনআইডি লিখেই ১৭ ডিজিট দিতে হবে। এ বিষয়ে আইডিইএ প্রকল্প থেকে সংশোধিত বিজ্ঞাপন প্রচারে ব্যবস্থা নেয়ার কথা রয়েছে। আগামী ২২ অক্টোবর উত্তরা এক নম্বর ওয়ার্ড ও ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত রমনার ১৯, ২০ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডে স্মার্ট কার্ড বিতরণ চলবে।
রমনা থানা নির্বাচন কর্মকর্তা মহবুবা মমতা হেনা ইনকিলাবকে জানান, নির্ধারিত ভোটার এলাকার গতকাল শুক্রবার ভোটার উপস্থিতি হয়েছিল ২০৮২ জন। এর মধ্যে স্মাট কার্ড বিতরণ করা হয়েছে ১৮৫৮ জনের। আর ৪১ জনকে কার্ড দেয়া সম্ভব হয়নি। শুক্রবার ১ হাজার ৯ শত ৭৭ জন স্মার্ট কার্ড নিয়েছে। ঠিকানা পরিবর্তন হয়েছে এমন ভাসমান ভোটার বেশি। তিনি বলেন, সাধারণতভাবে শুক্রবার-শনিবার নাগরিক উপস্থিতি বেশি থাকে। রমনার ১৯, ২০ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডে পর্যায়ক্রমে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত বিতরণ চলবে এবং উত্তরা ১ নম্বর ওয়ার্ডে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত স্মার্টকার্ড।
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলায়ও ৩ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর এক লাখ ২১ হাজার ভোটারের মধ্যে স্মার্টকার্ড বিতরণ হয়েছে। গত ২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্টকার্ড বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। পরদিন ৩ অক্টোবর থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উত্তরা এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) রমনা থানায় কার্ড বিতরণ করছে ইসি। ডিএনসিসি’তে উত্তরা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজে এবং ডিএসসিসিতে সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজে কার্ড বিতরণ ক্যাম্প করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।