Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী সউদী আরব

সালমান এফ রহমানের সঙ্গে সউদী বিনিয়োগ মন্ত্রীর বৈঠক

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৮:১৮ পিএম

বাংলাদেশের বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ রয়েছে উল্লেখ করে সউদী বিনিয়োগ মন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশে আরো বেশি সউদী বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে। রোববার সউদী বিনিয়োগ মন্ত্রী খালিদ আল ফালিহ সউদী সফররত প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সাথে বৈঠককালে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বৈঠকে সালমান এফ রহমান বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে বর্তমান সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ সমূহ বর্ণনা করেন। পাশাপাশি সউদী বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্ধারণ করার প্রস্তাব দেন। সউদী বিনিয়োগ মন্ত্রী বাংলাদেশের এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানান।

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সরকারি বেসরকারি অংশিদারীত্ব ব্যবস্থায় সউদী বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে খসড়া সমঝোতা স্মারকটি চূড়ান্ত করার জন্য অনুরোধ করেন। সালমান এফ রহমান বলেন, সমঝোতা স্মারকটি স্বাক্ষরিত হলে বাংলাদেশের অবকাঠামোসহ বিভিন্ন খাতে সউদী বিনিয়োগের সুযোগ প্রসারিত হবে। এ সময় সউদী বিনিয়োগ মন্ত্রী জানান, সমঝোতা স্মারকটি চ‚ড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং তা দ্রুত স্বাক্ষর হবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন। আলোচনাকালে সউদী মন্ত্রী বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল খাত ভিত্তিক বিনিয়োগ বিষয়ে সহযোগিতা চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান দু’দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রতিনিধি দল বিনিময় এর গুরুত্ব তুলে ধরে সউদী বিনিয়োগ মন্ত্রীকে আগামী নভেম্বর এর ২৮ ও ২৯ তারিখে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের অনুরোধ জানালে মন্ত্রী খালিদ আল ফালিহ তা সাদরে গ্রহণ করেন।

এর পূর্বে উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান সউদী আরবের পরিবহণমন্ত্রী সালেহ আল জাসের এর সাথে বৈঠক করেন। এ সময় তিনি ঢাকা থেকে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেললাইন নির্মানে সউদী বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও সউদী আরবের পরিবহন খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা যেতে পারে। এ সমঝোতা স্মারকের অধীনে দক্ষতা বিনিময়, প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্রসমূহ অনুসন্ধান করে দেখা যেতে পারে। এ সময় সউদী পরিবহন মন্ত্রী তার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এদিন রিয়াদ চেম্বার অব কমার্সের সাথেও বৈঠক করেছেন। এ সময় তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সউদী আরবে সরকারি সফরের মাধ্যমে সউদী বাংলাদেশ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। বাংলাদেশের সাথে ব্যবসা বাণিজ্য ও বিনিয়োগের নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সউদী বিনিয়োগকারীদের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সকল সহযোগিতা নিশ্চিত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সউদী-বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি ও বাংলাদেশে বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন। বর্তমানে সউদী আরবের সাথে বাংলাদেশের এক দশমিক তিন বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়ে থাকে উল্লেখ করে তা আরও বাড়ানোর ওপর তিনি জোর দেন।

বাংলাদেশের বিশাল অভ্যন্তরীণ বাজার রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা এখনো অব্যাহত রয়েছে, যা বাংলাদেশকে রপ্তানি সুবিধা দিচ্ছে। উপদেষ্টা দ’দেশের চেম্বার কর্মকর্তাদের পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য দ্বিপাক্ষিক সফর ও বৈঠকের ওপর গুরুত্ব দেন। বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সাথে সউদী আরব সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি অনুরোধ করেন।

এর পাশাপাশি উপদেষ্টা দু’দেশের চেম্বার অব কমার্সের মধ্যে ২০০৫ সালে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকটি সংশোধনপূর্বক যুগোপযোগী করার প্রস্তাব দিলে সউদী ফেডারেশন অব চেম্বার তাঁদের আগ্রহ প্রকাশ করেন। বৈঠকে উপস্থিত বাংলাদেশে বিনিয়োগকারী সউদী কোম্পানী সমূহ বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ নিয়ে তাঁদের সন্তোষ প্রকাশ করেন। উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সভাগুলোতে সউদী আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের সদস্য বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন ও বাংলাদেশ সরকারি- বেসরকারি অংশিদারীত্ব কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা (সচিব) সুলতানা আফরোজসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সউদী চেম্বারের সাথে বৈঠকের সময় বাংলাদেশ থেকে আগত ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ