Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অতি লোভে সর্বনাশ

ইভ্যালির রাসেল-শামীমা তিন দিনের রিমান্ডে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

‘লোভে পাপ পাপে মৃত্যু’ প্রবাদ থেকে কেউ শিক্ষা নেয়নি
লাখো গ্রাহকের টাকা ফেরত পাওয়ার অনিশ্চয়তা কাটছে না
দেশের অনলাইনে ‘কেনাবেচা’ ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে

‘লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু’ প্রবাদটি শিক্ষিত লোকজন তো বটে; দেশের নিরক্ষর লোকজনও জানেন। তারপরও লোভ সংবরণ করতে না পেরে বিপদে পড়ছেন মানুষ। অর্ধেক দামে বা বাজার মূল্যের অনেক কম দামে পণ্য ক্রয়ের লোভে পড়ে হাজার হাজার, লাখ লাখ এমনকি কোটি কোটি টাকা হারাতে বসেছেন দেশের অসংখ্য মানুষ। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি থেকে অতি অল্পমূল্যে পণ্য ক্রয়ের লক্ষ্যে অগ্রিম টাকা দিয়েছেন। টাকা ফেরত পেতে বিপদে পড়া এই মানুষগুলোর কেউ কেউ বিক্ষোভ করছেন; কেউ হতাশায় পড়েছেন। আবার কেউ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে উদ্যোগী হয়ে প্রতারিত গ্রাহকদের অর্থ ফেরত দেয়ার ব্যবস্থার অনুরোধ জানিয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কম মূল্যে পণ্য কিনে বাবা-মাকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য লাখ টাকা বিনিয়োগ করে আম-ছালা দুটোই হারাচ্ছেন বহু তরুণ। আর এই লোভাতুর মানুষগুলোকে যারা লোভে ফেলে ঠকানোর নীল নকশা এঁকেছিলেন সেই চক্র ইভ্যালির সিইও মো. রাসেল এবং তার স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে গ্রেফতারের পর তিন দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে। প্রতারণা ও অর্থ-আত্মসাতের জন্য গ্রাহকের দায়েরকৃত মামলায় গতকাল শুক্রবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম এ আদেশ দেন।

ইভ্যালির সিইও মো. রাসেল এবং চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে যখন গ্রেফতার করা হয় তখনো পণ্য ক্রয়ের জন্য অগ্রিম দেয়া টাকা ফেরত পেতে বিক্ষোভ করেছেন গ্রাহকরা। গতকাল যখন আদালতে তাদের রিমান্ডের জন্য নেয়া হয় তখনো বাইরে প্রতারিত গ্রাহকদের অনেকেই বিক্ষোভ করেছেন। শাহবাগেও ইভ্যালিকে দেয়া টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য কর্মসূচি পালন করেছেন প্রতারিত গ্রাহকদের অনেকেই। প্রশ্ন হচ্ছে প্রতারিত গ্রাহকরা কি অর্থ ফেরত পাবেন?

সারাবিশ্বে এখন অনলাইনে কেনাকাটা হয়ে থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে অনলাইনের মাধ্যমে সব ধরনের পণ্য ক্রয় বিক্রয় হয়ে থাকে। বাংলাদেশেও এই প্রক্রিয়ায় কেনাকাটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অ্যামাজন, দারাজ, আলীবাবাসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান অনলাইনে অর্ডার নেয় এবং পণ্যের ডেলিভারি দিয়ে থাকে। তথ্য প্রযুক্তির যুগে নতুন প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশেও পণ্য ক্রয় বিক্রয় হচ্ছে। এই মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে প্রতারণাও চলছে সমানতালে। এর আগে ডেসটিনি, ইউনি পে টু, যুবক, আইসিএল, এইমওয়ে এবং ‘ব্রাইট ফিউচার’ এর প্রতারণার শিকার হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু ইভ্যালি সেগুলোর প্রতারণাকে পিছনে ফেলে প্রতারণার অভিনবত্ব দেখিয়েছে। এক লাখ টাকা মূল্যের পণ্য ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি করা ভাবা যায়? যারা প্রতারণার এই লোভে পড়েছেন তারাই মূলত ধরা খেয়েছেন রাসেল-শামীমা চক্রের হাতে।

নিয়মিত বিদেশ ভ্রমণ করেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উন্নত দেশগুলোতে এখন অনলাইনে বেশি কেনাবেচা হয়। তবে কোনো পণ্যের অর্ধেক মূল্যে বিক্রি হয় এমন তথ্য তাদের কাছে নেই। গ্রাহকদের কাছে যে পণ্যের যে মূল্য সেটাই নেয়া হয়। শুধু ডেলিভারি খরচ কমবেশি হতে পারে।
জানতে চাইলে অনলাইনে কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত একজন আইটি বিশেষজ্ঞ বলেন, অনলাইনে কেনাবেচা জনপ্রিয় হয়ে উঠলেও এ নিয়ে দেশে কোনো সরকারি নীতিমালা নেই। গ্রাহকের স্বার্থ সংরক্ষণ, বিক্রেতা ও সরবরাহকারীর দায়দায়িত্ব দেখভালের বিষয়ে কোনো দিক নির্দেশনা নেই। যার কারণে অনলাইন মাধ্যমে অনেকেই প্রতারণা করে থাকে। আরেকজন আইটি বিশেষজ্ঞ বলেন, লোভে পড়ে বাজার মূল্যের চেয়ে কম দামে ইভ্যালি থেকে কিনতে গিয়ে প্রতারিত হলো প্রচুর গ্রাহক। এটা অন্যান্য অনলাইন ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

সূত্রমতে, পণ্য কিনলেই টাকা ফেরতের অস্বাভাবিক অফার দিয়ে ব্যবসা করেছে ইভ্যালি। ১০০ থেকে ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশব্যাক অফার দেয়া হচ্ছে। অর্থাৎ ১০০ টাকার পণ্য কিনলে সমপরিমাণ বা তার চেয়েও বেশি টাকা ফেরত দেয়া হবে। নানা ধরনের লোভনীয় অফার দিয়ে মানুষকে আকৃষ্ট করা হয়। আবার ১০ জনের কাছে অগ্রিম টাকা নিয়ে ৫ জনকে পণ্য ডেলিভারি দিয়ে গ্রাহকদের লোভ বাড়িয়ে দেয়া হয়। মূলত ইভ্যালির ব্যবসায়িক অপকৌশল হলো নতুন গ্রাহকের ওপর দায় চাপিয়ে পুরনো গ্রাহকদের আংশিক অর্থ বা পণ্য ফেরত দেওয়া। আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, ইভ্যালির কার্যক্রমের ধরন এমএলএম কোম্পানির মতো। এমএলএম কোম্পানিগুলোর প্রতারণার চিত্র দেখার অভিজ্ঞতা থেকে মনে হচ্ছে, ইভ্যালিও তা-ই করছে।

জানা যায়, গত ৪ জুলাই ইভ্যালির বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চারটি সরকারি সংস্থাকে চিঠি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সংস্থা চারটি হলোÑ দুর্নীতি দমন কমিশন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ‘ইভ্যালি ডট কম’ নামে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্তের উদ্যোগ নেয়। অতঃপর দুদক তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠায়। সে প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত ১৪ মার্চ ‘ইভ্যালি ডট কম’র মোট সম্পদ ৯১ কোটি ৬৯ লাখ ৪২ হাজার ৮৪৬ টাকা (চলতি সম্পদ ৬৫ কোটি ১৭ লাখ ৮৩ হাজার ৭৩৬ টাকা) এবং মোট দায় ৪০৭ কোটি ১৮ লাখ ৪৮ হাজার ৯৯৪ টাকা। ওই সময় ‘ইভ্যালি ডট কম’র গ্রাহকের কাছে দায় ২১৩ কোটি ৯৪ লাখ ৬ হাজার ৫৬০ টাকা। মার্চেন্টের কাছে দায় ১৮৯ কোটি ৮৫ লাখ ৯৫ হাজার ৩৫৪ টাকা। গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম হিসেবে গৃহীত ২১৩ কোটি ৯৪ লাখ ৬ হাজার ৫৬০ টাকা এবং মার্চেন্টের কাছ থেকে ১৮৯ কোটি ৮৫ লাখ ৯৫ লাখ ৯৫ হাজার ৩৫৪ টাকার মালামাল গ্রহণের পর স্বাভাবিক নিয়মে প্রতিষ্ঠানটির কাছে ৪০৩ কোটি ৮০ লাখ ১ হাজার ৯১৪ টাকার চলতি সম্পদ থাকার কথা। অথচ প্রতিষ্ঠানটির কাছে চলতি সম্পদ রয়েছেÑ মাত্র ৬৫ কোটি ১৭ লাখ ৮৩ হাজার ৭৩৬ টাকা।

তিন দিনের রিমাÐ : প্রতারণার অভিযোগে গুলশান থানার মামলায় ই-কমার্স প্লাটফর্ম ইভ্যালির এমডি মো. রাসেল এবং তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মোছা. শামীমা নাসরিনকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে আদালত। ঢাকার মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলামের আদালতে রাসেল ও তার স্ত্রীকে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছিলেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার এসআই ওহিদুল ইসলাম। শুনানির পর ৩ দিন রিমাÐ মঞ্জুর করা হয়। রিমান্ড আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ঢাকার মহানগর আদালতের পিপি আব্দুল্লাহ আবু। অন্যদিকে আসামিপক্ষে ব্যারিস্টার মনিরুজ্জামান আসাদ এবং জে আর খান রবিন এর বিরোধিতা করে দুই আসামির জামিনের আবেদন করেন।

আরিফ বাকের নামে এক ব্যক্তি গত বৃহস্পতিবার রাসেল ও শামীমার বিরুদ্ধে গুলশান থানায় প্রতারণার মামলা করেন। পণ্যের জন্য আগাম অর্থ দিয়ে না পাওয়ার পাশাপাশি ‘প্রাণনাশের হুমকি’ দেওয়ার অভিযোগ করা হয়। মামলার বাদী আরিফ বাকের অভিযোগে বলেন, ইভ্যালির বিজ্ঞাপন দেখে প্রভাবিত হয়ে তিনি ৩ লাখ ১০ হাজার টাকার পণ্যের অর্ডার দেন। কিন্তু দীর্ঘ সময়ে তাকে কোনো পণ্য সরবরাহ করা হয়নি। পণ্যের ব্যাপারে ইভ্যালির অফিসে এবং পরে সিইও মো. রাসেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ‘প্রাণনাশের হুমকি’ দেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। ওই মামলা হওয়ার পর বৃহস্পতিবার মোহাম্মদপুরের বাসায় অভিযান চালিয়ে রাসেল ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। সেখানে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

মূলত, ইভ্যালি ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে যাত্রা শুরু করে মাত্র আড়াই বছরের মাথায় সরবরাহকারী কোম্পানি ও গ্রাহকদের কাছে ৫৪৩ কোটি টাকার দায়ে পড়েছে। এত অল্প সময়ে এই বিপুল টাকা কোথায় গেল, তার হদিস এখনও মেলেনি। প্রতারণা ও গ্রাহক হয়রানির অভিযোগে ইভ্যালি এমডি রাসেল ও চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে এর আগেও কয়েকটি মামলা হয়েছে বিভিন্ন জেলায়। আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে গত জুলাই মাসে দুদকের আবেদনে ইভ্যালির শীর্ষ কর্তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে আদালত। একটি প্রতিবেদনে ২৮ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত ইভ্যালির দেনা ৪০৩ কোটি টাকা বলা হলেও তিনি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন, তার এক হাজার কোটি টাকা দায় রয়েছে।

শাহবাগ বিক্ষোভ : ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যাক্তি ও কিছু গ্রাহক। রাস্তার ওপর আন্দোলনরত বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। গতকাল শুক্রবার তিনটার দিকে শাহবাগ মোড়ে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় বিভিন্ন সেøাগান দিয়ে রাসেলের মুক্তি দাবি করেন ইভ্যালির সঙ্গে যুক্ত গ্রাহক ও ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি রাসেল ও শামীমা মুক্ত থাকলে তারা টাকা ফেরত পাবেন। তাদের কারাগারে রাখলে টাকা ফেরত পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। একজন প্রতারিত গ্রাহক বলেন, ইভ্যালির রাসেলকে মুক্তি দিয়ে সমস্যার সমাধান করা হোক। প্রয়োজনে সরকারের পক্ষ থেকে একটা বড় উদ্যোগ নেওয়া হোক। না হলে আমাদের পথে বসতে হবে।

প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা সেøাগানে শাহবাগ মোড় মুখর রাখেন এই আন্দোলনকারীরা। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের শাহবাগ মোড় থেকে সরিয়ে দেন। বিকেলে শাহবাগ থেকে আন্দোলকারীরা চলে যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শাহবাগে আন্দোলনে অংশ নেয়া ব্যাক্তিরা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ইভ্যালির গ্রাহক, হোলসেলার-রিটেইলার। তাছাড়া রাজধানীর বাইরের বিভিন্ন জেলা শহর থেকে আসা অনেকেই আন্দোলনে যুক্ত হন।

স্বামী-স্ত্রীর বিলাসী জীবন : চলতি বছরের মাঝামাঝি ইভ্যালির কর্মচারীদের বেতন বন্ধ ছিল। অথচ রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিন পদাধিকার বলে মাসে ৫ লাখ টাকা করে বেতন নিতেন। তিনি ও তার স্ত্রী ইভ্যালি থেকে কেনা অডি ও রেঞ্জ রোভার গাড়ি নিজেরা ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করতেন। তাদের কোম্পানিতে ২৫ থেকে ৩০টি গাড়ি রয়েছে। শুক্রবার এক ব্রিফিংয়ে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব কথা বলেন।

ইভ্যালির ব্যবসায়িক কাঠামোর বিষয়ে মো. রাসেল জানান, রাজধানীর ধানমÐিতে ইভ্যালির হেড অফিস এবং ধানমÐির আরেকটি স্থানে এর কাস্টমার কেয়ার সেন্টার রয়েছে। একইভাবে আমিনবাজার ও সাভারে তাদের ওয়্যার হাউস চালু করা হয়। কোম্পানির শুরুর দিকে প্রায় দুই হাজার স্টাফ কর্মরত থাকলেও অস্থায়ীভাবে ১৭০০ লোক কর্মরত ছিলেন। সেই সংখ্যা কমে বর্তমানে ১ হাজার ৩০০ স্টাফ ও ৫০০ অস্থায়ী কর্মচারীতে দাঁড়িয়েছে। সব মিলিয়ে কর্মচারীদের প্রাথমিক বেতন ছিল ৫ কোটি টাকার কিছু বেশি। তবে সে বেতন বর্তমানে দেড় কোটিতে এসে দাঁড়িয়েছে। গত জুন থেকে এ পর্যন্ত কর্মীদের অনেককেই বেতন দেয়া হয়নি।
র‌্যাব জানায়, রাসেলের ব্যবসায়িক অপকৌশলের মধ্যে অন্যতম হলো নতুন গ্রাহকের ওপর দায় চাপিয়ে পুরনো গ্রাহকদের আংশিক অর্থ বা পণ্য ফেরত দেওয়া। যার তার এই দায় ট্রান্সফারের দুরভীসন্ধিমূলক অপকৌশল চালিয়ে তিনি এভাবে প্রতারণা করে আসছিলেন। প্রতিষ্ঠানটির নেটওয়ার্কে যত গ্রাহক তৈরি হয় তার দায় ততই বাড়তে থাকে। রাসেল জেনেশুনেই এই অপকৌশল চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ইভ্যালি ছাড়াও রাসেলের আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ই-ফুড, ই-খাত ও ই-বাজার অন্যতম।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল জানিয়েছে বিদেশি একটি ই-কমার্সের কৌশল ১:২ আলোকে প্রথম তিনি তার ইভ্যালির কার্যক্রম শুরু করেন। প্রথম তিনি একটি ব্র্যান্ড তৈরির পরিকল্পনা করেছিলেন। পরবর্তী সময় কোনো আন্তর্জাতিক বা দেশীয় বড় প্রতিষ্ঠানে তার কোম্পানি দায়সহ বিক্রি করে দেওয়ার একটি পরিকল্পনা ছিল। একইভাবে তিন বছর পূর্ণ হলেই শেয়ার মার্কেটে অন্তর্ভুক্তি হওয়ার পরিকল্পনা ছিল। সর্বশেষ দায় মেটাতে না পারলে নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করার একটি পরিকল্পনা নিয়েছিলেন।



 

Show all comments
  • Md Atiqur Rahman Bulbul ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:২১ এএম says : 0
    সরকার ইভ্যালি কে লাইসেন্স প্রদান করেছে। সুতরাং এদের কার্যক্রম মনিটরিং করা সরকারের দায়িত্ব ছিল। এখন যদি সাধারন জনগন ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে সরকারকেই এর দায়ভার নিতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Shakhawat Babon ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:২২ এএম says : 0
    অবশেষে ইভ্যালির বাটপারটাকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ ফলে অন্যবাটপারগুলো কিছুদিন সর্তক হয়ে চলবে। কিন্তু কথা হচ্ছে, ইদুর বেড়াল না খেলে কেন আরো আগে কেন গ্রেফতার করা হয়নি? কেন আগেই কোম্পানি নামের ওই পরিস্কার প্রতারক কোম্পানিটিকে বন্ধ করে দেওয়া হয় নাই? তাহলে তো অনেকে প্রতারণার হাত থেকে বেচে যেতেন। স্বাভাবিক ভাবে একটু চিন্তা করে দেখেন, যে পণ্যের উৎপাদন বা তৈরি খরচ ৮০ টাকা সে পণ্য পৃথিবীর কোন কোম্পানি ৭৯.৯৯ টাকায়ও বেচতে পারবে না। কারণ উৎপাদন খরচের সাথে আরো যোগ হবে আরো ১০% খরচ। কিন্তু কিছু বাটপার সেই পণ্য ৪০ টাকায় বিক্রির ফাদ পেতে লোভী মানুষগুলিরে ঘর থেকে টেনে নেমিয়ে ফেলেছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Akbar Islam ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:২২ এএম says : 0
    সব ভাগ বাটোয়ারা করে খাওয়া শেষ! পিছনে ফিরে দেখি,(যুবক,নিউওয়ে,ডেসটিনি,রেভনেক্স)! কেউ টাকা পায়নি।পাবেও না!
    Total Reply(0) Reply
  • MD Imran ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:২২ এএম says : 0
    ডেসটিনি,যুবক খেয়ে এখন ইভ্যলীকেও খাবে সরকার
    Total Reply(0) Reply
  • Ashraf Ahmed ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:২৩ এএম says : 0
    যারা অল্প দিনে কোটি পতি হতে সাধারণ মানুষকে ঠকায় তাদের সবাইকে পুলিশের ডান্ডার আওতায় আনা হউক ।
    Total Reply(0) Reply
  • Mustufa Sahriah Rajib ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:২৪ এএম says : 0
    সততা ও কমিটমেন্ট হলো ব্যাবসায়ের মূল ভিত্তি ! ইভ্যালির তো কোন সততা ও কমিটমেন্ট ছিল না ! ইভ্যালির পেজে গ্রাহকের শুধু অভিযোগই ছিল তাই তো প্রশাসন ও মিডিয়া ইভ্যালির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে !! এছাড়া অতি লোভীদের বড় অংকের টাকা অগ্রিম দেয়া ও ইভ্যালির পেইড দালাদের জন্যে আজ সমাপ্তি !
    Total Reply(0) Reply
  • Md Habaib Chy ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:২৫ এএম says : 0
    জেলে দেওয়া মানি; টাকা শেষ ; অথিতে যাদেরকে জেলে নিগেছে তাদের টাকা কি ফেরত দিচে কেও? যেমন যুবক; উনিপে / টু; ডেসটেনি???
    Total Reply(0) Reply
  • Jahangir Alam ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:২৫ এএম says : 0
    যাক বাবা ইভ্যালির চেয়ারম্যান ও সিইও দুজনেই বেচে গেল। আর লোভী গ্রাহকদের শাস্তি এভাবেই পাওয়া উচিৎ।
    Total Reply(0) Reply
  • Labbaik Labbaik ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:২৫ এএম says : 0
    দায়িত্ব জ্ঞান হীন লোভী রাসেল , নিজের লোভের জন্য ধ্বংস করেছে বছরের পর বছর গড়ে উঠা ইকমার্স প্লাটফর্ম কে। রাসেলের সাথে কিছু দায় ইভেলীর লোভী গ্রাহকদেরও আছে। যারা 70% ক্যাশ ব্যাক পেতে চায়। আর এই লোভী গ্রাহকদের লোভকে কাজে লাগিয়ে রাসেল একের পর এক বিলাসী গাড়ি কেনে, মানুষের টাকা বাতাসে উড়ায়।ওর হাড় মাংস এক করে গ্রাহকের টাকা উত্তোলন করা উচিত।
    Total Reply(0) Reply
  • Md basit ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৬:৪৯ এএম says : 0
    সাধারন মানুষ এর বুঝা উচিত ১ লাখ টাকার বাইক ৭০ হাজার টাকায় কীভাবে সম্ভব? নিশ্চয় কোন ঘাপলা আছে। যারা একসাথে এত গুলো টাকা বোকার মত চোখ বন্ধ করে দিতে পারে তাদের অবস্থা এমনই হওয়া উচিত।
    Total Reply(0) Reply
  • মো: আব্দুল খালেক ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৮:৪৫ এএম says : 0
    এ সব ২৩ উপলক্ষে কি না তা ভাবুন । এ গুরুতর অপরাধ । কিন্তু এর চেয়েও যে গুলো আরও গুরুতর যেমন ....... সে গুলোর ধরা-ধরি ও বিচার কই ?
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ আকতার হোসেন মীর ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১০:১৩ এএম says : 0
    কতগুলি প্রতিষ্ঠান এই পযন্ত মানুষের সাথে প্রতারণা করলো তা দেখেও কি আমরা শিক্ষা নিতে পারলাম না । যারা লোভ করবে তাদের ঠকতে হবে এটা কমন কথা ।যে কোন কাজের পূবে' ভালো ভাবে যাচাই করে করতে হবে অন্যথায় বিপদের আশঙ্কা থাকবেই । প্রতারকরা সবসময় ওট পেতে সুযোগ খোঁজে সাধারণ মানুষকে ঠকানোর জন্য ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইভ্যালি

৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ