পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : ২০১৬ সালে শান্তির জন্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন কলাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট জুয়ান ম্যানুয়েল স্যানটোস। ফার্ক বিদ্রোহী দলের সঙ্গে গৃহযুদ্ধ বন্ধ করার জন্যে তিনি যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন, তার স্বীকৃতি স্বরূপ এই সম্মান তাকে দেয়া হল। নোবেল পাওয়ার পর একটি বিজ্ঞপ্তিতে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি জানিয়েছে, এই সম্মান কলাম্বিয়ার সেই সব মানুষের যারা অমানবিক কষ্ট সহ্য করেও আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্যে। যারা গৃহযুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন এই পুরস্কার তাদের জন্যেও। কলাম্বিয়ার গৃহযুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছিলেন প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার মানুষ এবং ঘর ছাড়া হয়েছিলেন ৬০ লাখ মানুষ।
বিতর্কে নোবেল কমিটি
গত সেপ্টেম্বরে কলম্বিয়ার সরকার আর ফার্ক বিদ্রোহীদের মধ্যে শান্তিচুক্তি হয় চার বছর ধরে আলোচনার পর গত সেপ্টেম্বরে ফার্ক বিদ্রোহীদের সঙ্গে কলম্বিয়া সরকারের শান্তিচুক্তি হয়। চুক্তিটি বাস্তবায়নের জন্য কলম্বিয়ার জনগণের সমর্থন প্রয়োজন ছিল। আর সেই প্রশ্নে জনগণের রায় জানতে গণভোট আয়োজন করা হলেও তার রায় শেষ পর্যন্ত সরকারের পক্ষে যায়নি। কলম্বিয়ার জনগণ গণভোটে শান্তিচুক্তির বিপক্ষে রায় দিয়েছিলেন। অথচ ওই শান্তিচুক্তির জন্যই গতকাল কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোসকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ঘোষণা করে নরওয়ের নোবেল কমিটি। যে চুক্তিকে জনগণ গ্রহণ করেনি সেই চুক্তির জন্য সান্তোসকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার মধ্য দিয়ে কলম্বিয়ার জনগণকে অপমান করা হচ্ছে কিনা তা নোবেল কমিটির কাছে জানতে চান সাংবাদিকরা। পাশাপাশি তারা আরও জানতে চান, কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট ও ফার্ক নেতা দু’জনই মনোনীত হওয়ার পরও কেন কেবল সান্তোসকেই নোবেল দেওয়া হলো?
প্রথম প্রশ্নের জবাবে নোবেল কমিটির মুখপাত্র দাবি করেন, এর মধ্য দিয়ে কলম্বিয়ার জনগণকে অসম্মান করা হয়নি বরং এটি দেশটির জনগণের স্বীকৃতি। তিনি বলেন, ‘গণভোটে শান্তিচুক্তির বিপক্ষে রায় আসলেও মূলত ওই আলোচনার কারণেই কলম্বিয়ার রক্তাক্ত সংঘাত শান্তিপূর্ণ সমাধানের দিকে এগিয়ে যেতে পেরেছে।’ তার মতে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সান্তোসের প্রয়াস আলফ্রেড নোবেলের ইচ্ছাকেই প্রতিফলিত করে।
শান্তি চুক্তির মধ্যদিয়ে প্রায় ৫২ বছরের রক্তাক্ত সংঘাতের ইতি টেনেছেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোস এবং ফার্ক বিদ্রোহী নেতা রদ্রিগো লোন্দোনিও তিমোশেঙ্কো। সম্ভাব্য তালিকায় তাদের দু’জনের নাম থাকলেও শেষ পর্যন্ত পুরস্কার জিতেছেন হুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোস। কেন তাদের দু’জনের মধ্যে পুরস্কার ভাগ করে দেওয়া হলো না তা জানতে চাওয়া হলেও ওই মুখপাত্র বলেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে শান্তি প্রক্রিয়ার রক্ষকের ভূমিকা পালন করেছেন সান্তোস। সান্তোসের ওই ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ ছিল দাবি করে নোবেল কমিটির মুখপাত্র বলেন, কলম্বিয়ায় অতীতেও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচেষ্টা নেয়া হয়েছিল। তবে সান্তোস সব উদ্যোগ পূর্ণাঙ্গভাবে নিতে পেরেছিলেন।
কোনও গেরিলা নেতাকে নোবেল পুরস্কার দেয়াটা কঠিন বলেও বিবেচনা করা হয়েছিল কিনা তা জানতে চাওয়া হলে নোবেল কমিটির মুখপাত্র বলেন, ‘যারা পুরস্কার পায়নি তাদের ব্যাপারে আমরা মন্তব্য করি না।’
উল্লেখ্য, স্থানীয় সময় গতকাল সকাল ১১টার দিকে নরওয়ের রাজধানী অসলোতে বিজয়ী হিসেবে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোসের নাম ঘোষণা করা হয়।
বহুল প্রত্যাশিত একটি শান্তি চুক্তির মধ্যদিয়ে প্রায় ৫২ বছরের রক্তাক্ত সংঘাতের ইতি টেনেছেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোস এবং ফার্ক বিদ্রোহী নেতা রদ্রিগো লোন্দোনিও তিমোশেঙ্কো। সম্ভাব্য তালিকায় তাদের দুজনের নাম থাকলেও শেষ পর্যন্ত পুরস্কার জিতে নিলেন হুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোস। চার বছরের আলোচনার পর ফার্ক বিদ্রোহীদের সঙ্গে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করায় ম্যানুয়েল সান্তোসের প্রশংসা করেছে নোবেল কমিটি। তার এ শান্তি উদ্যোগের স্বীকৃতি হিসেবেই সান্তোসকে নোবেল পুরস্কার প্রদানের জন্য বাছাই করা হয়েছে বলেও জানায় কমিটি। কেননা, কলম্বিয়ায় ৫২ বছরের ওই সংঘাত ২ লাখ ৬০ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল। তবে এক গণভোটে কলম্বিয়ার জনগণ শান্তিচুক্তিটির বিপক্ষে রায় দেয়। গণভোটে দেশটির ৫০ দশমিক ২৪ শতাংশ মানুষ শান্তিচুক্তির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। শান্তিচুক্তির পক্ষে ৪৯ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ ভোট দেন। পক্ষে ও বিপক্ষে ভোটের পার্থক্য ৬৩ হাজার। মোট ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ গণভোটে অংশ নেন। চলতি বছর রেকর্ড সংখ্যক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছিল। মোট ৩৭৬ প্রতিযোগীর মধ্যে ছিল ২২৮ জন ব্যক্তি এবং ১৪৮টি সংগঠনের নাম। মনোনয়ন তালিকা অনুযায়ী পুরস্কারের দৌড়ে এগিয়ে থাকা উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রাশিয়ার মানবাধিকার কর্মী সোভেতলানা গানুশকিনা, ইরানের পরমাণু চুক্তির দুই কারিগর যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানিমন্ত্রী আর্নেস মনিজ এবং ইরানের আণবিক সংস্থার প্রধান আলী আকবর সালেহী, সিরিয়ার ‘হোয়াইট হেলমেটস’,জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল, পোপ ফ্রান্সিস, গ্রিক দ্বীপবাসী, কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোস এবং ফার্ক বিদ্রোহী নেতা রদ্রিগো লোন্দোনিও তিমোশেঙ্কোর নাম ছিল। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া, দ্য গার্ডিয়ান, বিবিসি, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।