Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঋণ পুনঃতফসিল তিন বারের বেশি নয়

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) এখন থেকে তিনবারের বেশি কোনো ঋণ পুনঃতফসিল করতে পারবে না। আর তৃতীয় দফা পুনঃতফসিলের পরও যদি কোনো গ্রাহক ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয় তাহলে তাকে স্বভাবজাত বা ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। পাশাপাশি পুনঃতফসিল করা ঋণের যে পরিমাণ অর্থ আদায় হবে তার বিপরীতে সুদ শুধুমাত্র আয় খাতে নেওয়া যাবে। এনবিএফআই-এর জন্য গত মঙ্গলবার ঋণ পুনঃতফসিল বিষয়ে নীতিমালা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নীতিমালার বলা হয়েছে, গ্রাহকের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা যাচাই না করেই বারবার ঋণ পুনঃতফসিল করছে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান। পরিশোধসূচি পুনঃনির্ধারণ এবং যথাযথভাবে পুনঃতফসিল প্রক্রিয়া অনুসরণ না করায় এসব প্রতিষ্ঠানের আদায়ের প্রকৃত চিত্র প্রতিফলিত হচ্ছে না। এখন থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো কেবলমাত্র বিরূপমানে শ্রেণিকৃত (নিম্নমান, সন্দেহজনক ও ক্ষতিজনক) ঋণ পুনঃতফসিল করতে পারবে। ঋণ নিয়মিত করার প্রতি পর্যায়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্ধারিত হারে ডাউনপেমেন্ট নিতে হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, কোনো মেয়াদি ঋণ নিম্নমান থাকা অবস্থায় প্রথম দফায় ৪৮ মাস, দ্বিতীয় দফায় ৩৬ মাস ও তৃতীয় দফায় ২৪ মাসের জন্য পুনঃতফসিল করা যাবে। আর সন্দেহজন বা মন্দ মানে শ্রেণিকৃত অবস্থায় পুনঃতফসিলের ক্ষেত্রে প্রথম দফায় ৩৬ মাস, দ্বিতীয় দফায় ২৪ মাস ও তৃতীয় দফায় ১৮ মাসের জন্য পুনঃতফসিল করা যাবে। স্বল্পমেয়াদি ঋণের মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ বা সর্বশেষ কিস্তি পরিশোধের পর প্রথম দফায় সর্বোচ্চ ১২ মাসের জন্য পুনঃতফসিল করা যাবে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় ছয় মাস করে নিয়মিত করতে পারবে এনবিএফআইগুলো।

ডাউনপেমেন্টের বিষয়ে বলা হয়, প্রথম দফা ঋণ পুনঃতফসিলের ক্ষেত্রে মেয়াদি ও স্বল্পমেয়াদি উভয় ক্ষেত্রে মেয়াদোত্তীর্ণ কিস্তির ন্যূনতম ১৫ শতাংশ বা মোট বকেয়ার ১০ শতাংশের মধ্যে যা কম, সেই পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করতে হবে। দ্বিতীয় দফায় মেয়াদোত্তীর্ণ কিস্তির ৩০ শতাংশ বা মোট বকেয়ার ২০ শতাংশের মধ্যে যা কম, তা দিতে হবে। আর তৃতীয় দফায় মেয়াদোত্তীর্ণ কিস্তির ৫০ শতাংশ বা মোট বকেয়ার ৩০ শতাংশের মধ্যে যা কম, তা পরিশোধ করতে হবে। এ উপায়ে নিয়মিত করা ঋণ মাসিক বা ত্রৈমাসিক কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধ করা যাবে। পুনঃতফসিল করা ঋণের অনাদায়ী কিস্তি ছয়টি মাসিক কিস্তি বা দুইটি ত্রৈমাসিক কিস্তির সমান হলে তা ক্ষতিজনক মানে শ্রেণিকরণ করতে হবে।

এতে আরো বলা হয়েছে, প্রতিটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পরিষদ অনুমোদিত ঋণ পুনঃতফসিল বিষয়ে একটি নীতিমালা থাকতে হবে। সেখানে এমন সব শর্ত দিতে হবে, যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই নীতিমালার চেয়ে কোনোভাবে সহজ হবে না। পুনঃতফসিলের আগে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্রেডিট কমিটি লিখিত প্রতিবেদনের মাধ্যমে যৌক্তিকতা ও প্রভাব তুলে ধরবে। সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য তার নগদ প্রবাহ বিবরণী, নিরীক্ষিত স্থিতিপত্র, আয়-ব্যয় ও অন্যান্য আর্থিক বিবরণী পর্যালোচনা করতে হবে। একজন গ্রাহকের ডাউনপেমেন্টর অর্থ জমা হওয়ার এক মাসের মধ্যে পুনঃতফসিলের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে কিস্তি হিসেবে জমা হওয়া অর্থ কোনোভাবেই ডাউনপেমেন্ট বাবদ জমা দেখানো যাবে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ