পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, যুক্তরাজ্যের অতি ঝুঁকিপূর্ণ তালিকা ‘রেড লিস্টে’ বাংলাদেশকে রাখার সিদ্ধান্ত বৈষম্যমূলক। বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণ কম রয়েছে। তিনি লন্ডনে ব্রিটিশ হাউজ অব লর্ডস ও হাউজ অব কমন্সের সদস্যদের উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানে এমন অভিমত দেওয়ার কথা বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানান।
ইউরোপের তিন দেশে দীর্ঘ সফর নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি রেড লিস্ট বিষয়ক যুক্তরাজ্যের পরবর্তী সভায় বাংলাদেশ তালিকা থেকে বের হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন। মোমেন বলেন, রেড—লিস্ট মানে, ব্রিটিশ নাগরিক বাংলাদেশ থেকে গেলেও ১০ দিন তাকে কোয়ারেন্টিন করতে হবে। দুই হাজার ২৮৫ পাউন্ড আগে আগে জমা দিয়ে দিতে হবে। এটা বৈষম্যমূলক।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা মেম্বারস অব পার্লামেন্ট, মেম্বারর্স অব হাউজ অব লডস। আপনাদের এটা নিয়ে কথা বলা উচিত। এটাতো খুবই অন্যায়। আপনাদের ‘সাবজেক্টটাই’ অসুবিধায় পড়তেছে। এটা খুবই দুঃখজনক। আপনাদের বৈষম্যহীন হওয়া উচিত। ব্রিটিশদের কাছে আমরা এটা প্রত্যাশা করি না।
করোনা সংক্রমণের উচ্চ হার বিবেচনায় নিয়ে গত ৯ এপ্রিল বাংলাদেশকে রেড লিস্টে অন্তভুর্ক্ত করে যুক্তরাজ্য। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত যে তালিকায় ছিল ৬২ দেশ। এ তালিকাভুক্ত দেশের নাগরিকদের বাইরে থেকে ব্রিটেন তাদের দেশে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। এসব দেশ থেকে ব্রিটিশ নাগরিকরা প্রবেশ করতে পারলেও থাকতে হচ্ছে ১০ দিনের বাধ্যতামূলক হোটেল কোয়ারেন্টিনে।
তিনি গত সোমবার ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাবের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশকে রেড লিস্ট থেকে সরানোর অনুরোধ জানিয়েছিলেন। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশের জোরালো টিকাদান কর্মসূচি ও কোভিড সংক্রমণের হার ৯ দশমিক ৮২ শতাংশে কমে এসেছে। সাত হাজারের বেশি ব্রিটিশ—বাংলাদেশির আটকেপড়ার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাজ্যের উচিত বাংলাদেশকে কোভিড লাল—তালিকাভূক্ত দেশ থেকে বাদ দেওয়ার বিষয় বিবেচনা করা।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জবাবে সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার আশ্বাস দিলেও এ ধরনের তালিকার পেছনে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পর্যালোচনা মুখ্য থাকার কথা বলেন। ডমিনিক রাব বলেছিলেন, আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি আমাদের দু’দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব এবং বাংলাদেশের জিনোম সেকুয়েন্সিং ডেটার আরও ঘনঘন প্রকাশের ওপর ভিত্তি করে ব্রিটিশ সরকার বাংলাদেশকে রেড লিস্টে রাখার বিষয়টি পর্যালোচনা করবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন দুই ব্রিটিশ—বাংলাদেশি পার্লামেন্ট সদস্য রুশনারা আলী ও আফসানা বেগমের সঙ্গে বৈঠকেও তাদের সরকারের কাছে রেড লিস্ট থেকে বাংলাদেশের নাম প্রত্যাহারের বিষয়টি তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তাদেরকে বলেছি, আপনারা জোরালো আওয়াজ তোলেন, কেন বাংলাদেশ রেড লিস্টে আছে। ভারত থেকে আমাদের লোকের মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কম। কিন্তু ওদেরকে বাদ দিয়েছে কিন্তু আমাদের রেখেছে।
ব্রিটিশদের কাছে বিষয়টি তুলে ধরার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনারা বলেছেন, আপনার দেশের লোকদের রক্ষা করবেন। এগুলোতো আপনার দেশের নাগরিক স্কুল—কলেজ শুরু হয়ে গেছে, যেতে পারে না, দিস ইজ নট ফেয়ার। উনাদের কাছে এটা আমি তুলেছি। আমার ধারণা যে, পরবর্তী সভায় আমাদের থেকে রেড উঠে যাবে।
বাংলাদেশকে রেড লিস্টে রাখার বিষয়ে যুক্তরাজ্য কী যুক্তি দেখিয়েছে, এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা এই প্রশ্ন ব্রিটিশদের করেন কেন আমরা রেডলিস্টে। ইন্ডিয়া আমাদের থেকে বেশি লোক মরলেও, অতিমারি বেশি হলেও তারা বের হয়েছে।
তিনি বলেন, তারা হয়ত এক ধরনের যুক্তিটুক্তি দেবে, নিজের অবস্থান শক্ত করার জন্য। কিন্তু ফ্যাক্ট টু দ্য ম্যাটার ইজ— আমাদের অত লোক মারাও যায়নি। আমাদের অতিমারি তো তাদের ওখান থেকে আসছে। তারা পার পেয়ে গেছে, আমরা এখন ঝামেলায় আছি।
যুক্তরাজ্য থেকে টিকা প্রাপ্তি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডমিনিকসহ অন্যদের বলেছি, আপনারা ভ্যাকসিন এখানে তৈরি করলেন। আর আমাদের দেন না। (ব্রিটিশ) প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, তিনি ১০০ মিলিয়ন ডলারের ভ্যাকসিন দেবেন, কোভ্যাক্সের অধীনে। শুধু শুনতেছি, চেহারাতো দেখি না। আমি তাদেরকে বললাম, আমার লোক মরে গেলে দেবেন নাকি!
বাংলাদেশের চাহিদার কথা আলোচনায় তুলে ধরার কথা উল্লেখ করে মোমেন বলেন, আমাদের ২৭০ মিলিয়ন ডোজ দরকার। আমরা কিনতেছি কিছু। কিন্তু আমরা ইংল্যান্ডের মত ভালো বন্ধুদের কাছে আরও আশা করি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।