Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

কথাবলা হিল ময়না প্রকাশ্যেই বিক্রি করছে শিকারিরা

গভীর বন ছাড়া এদের দেখা মেলে না

মো. ইব্রাহিম শেখ, খাগড়াছড়ি থেকে | প্রকাশের সময় : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০৮ এএম

বন
খাগড়াছড়িসহ তিন পার্বত্য জেলায় পাহাড়ের সৌন্দর্য ময়না পাখি হারাতে বসেছে। শিকারিদের কারণে সাম্প্রতিককালে হিল ময়নার তেমন দেখা পাওয়া যায় না। এই পাখি দ্রুত পোষ মানাসহ কথা বলতে পারে। সে জন্যই শিকারিরদের প্রথম টার্গেট হচ্ছে হিল ময়না। প্রাকৃতিক বন নষ্ট, পাখির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়া এবং শিকারিদের কারণে বিলুপ্তির পথে হিল ময়না। বর্তমানে গভীর বন ছাড়া এদের দেখা মেলে না। শিকারিরা জানান, ‘বর্তমান সময়ে একটি ময়না শিকার করা খুবই কঠিন কাজ। অতীতের তুলনায় অনেক সময় লাগে ময়না শিকারে।
বর্তমানে হিল ময়না বনে সচরাচর দেখা যায় না। তারপরও এই পাখির চাহিদা অনেক বেশি। প্রধানত শিকারিদের কারণেই হিল বা পাহাড়ি ময়না সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে পড়েছে। পাহাড়ে এসব ময়না অনেকটা প্রকাশ্যে বেচাকেনা চললেও বন বিভাগ নিশ্চুপ।

শিকারী জানান, বর্তমানে গভীর বন ছাড়া হিল ময়নার দেখা পাওয়া যায় না। খাগড়াছড়ির বিভিন্ন উপজেলায় প্রতিটি ময়না সাড়ে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। এছাড়া অগ্রিম অর্ডার নিয়েই ময়না শিকার করে ক্রেতার হাতে তুলে দিতে হয়।
ময়না সাধারণত বড় গাছের গর্তে বাসা বাঁধে। অনেক সময় শিকার করা ময়না বাঁচে না। সুস্থ সবল একটি ময়না ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা যায়। দীঘিনালার বাবুছড়া বাজার এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, শিকারিরা প্রকাশ্যেই ময়না বিক্রি করছেন।

ময়নার গায়ের পালক উজ্জ্বল কালো। রোদে কালো রঙ চক চক করে। তার উপর কিছুটা সবুজ ও বেগুনি আভা। ময়নার মাথার পিছনের হলুদ আবরণে ডাকা ত্বক। এই যেন রূপসীর গয়না বা কন্ঠহার। বাসন্তি রঙের ঠেঁাট।
ডানার বড় পালকের আড়ালে কয়েকটি সাদা পট্টি থাকে। ময়নার পা ধবধবে হলুদ। এরা সাধারণত গাছের উঁচু ডালে থাকতে পছন্দ করে। লম্বায় দশ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়। পার্বত্য জেলার পাহাড়ি বনে ময়না খুবই পরিচিত পাখি হলেও শিকারিদের অর্থ লোভে বিপন্নের পথে।
শিকারীদের কারণে দিন দিন হিল ময়নার সংখ্যা কমছে। ফলে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বনের ময়নার প্রজনন। শিকারীরা ছাড়াও বন এবং পাহাড় ধ্বংসের কারণেও অনেকটা বিলুপ্তির পথে ময়না। বাংলাদেশ, নেপালসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের এদের দেখা মিলে।

এ বিষয়ে খাগড়াছড়ির বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সরোয়ার আলম বলেন, বন্যপ্রাণী কেউ বেআইনিভাবে রাখলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অতীতে বেশ কয়েকজনকে বনের পাখি বিশেষ করে বাণিজ্যিক উদ্দেশে বিক্রি করার সময় জব্দ করে বনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বন্যপ্রাণী বিক্রি করা বন্ধে কঠোর নজরদারি রয়েছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ময়না
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ