পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকার চারপাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু ও শীতলক্ষ্যা নদী দখলদারদের হাত থেকে রক্ষা করতে কোটি কোটি টাকা খরচ করেও নদ-নদী রক্ষা এবং দূষণ বন্ধ করা যায়নি। সেই বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদ-নদীর অবৈধ দখল রোধ এবং দখলমুক্ত অংশের সৌন্দর্য বর্ধন করা, তীরভূমিতে পিলার স্থাপন, তীররক্ষা, ওয়ার্কওয়ে নিমার্ণে নতুন প্রকল্প নিয়েছে সরকার।
বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে প্রথম মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পরের বছর বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধারে ২০১৪ সালে ৮৪৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা প্রকল্পের কাজ শুরু হলেও সেই টাকা পানিতে গেছে। কিন্তু ভুল পরিকল্পনার কারণে ১২ বছর পেরিয়ে গেলেও প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হয়নি। এদিকে বর্তমান নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী প্রকল্পের গতি ফিরিয়ে আনতে নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কর্মকর্তাদের নিদেশনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
প্রকল্পটির মূল ব্যয় ছিল ৮৪৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। সেখান থেকে ৩৩২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বেড়ে মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ১ হাজার ১৮১ কোটি ৮২ লাখ টাকা। এ ক্ষেত্রে খরচ বাড়ছে ৩৯ দশমিক ২১ শতাংশ। সেই সঙ্গে প্রকল্পের মেয়াদ আরো এক বছর বাড়ানো হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতির কারণে নদীর পানি দীর্ঘদিন বিপদসীমার ওপরে থাকায় দরপত্র যথাসময়ে আহ্বান করা সম্ভব করা হয়নি।
প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৮ সালের জুলাই থেকে আগামী ২০২৩ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ঢাকার চারপাশে চারটি নদ-নদী রক্ষায় একের পর এক প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। কোটি কোটি টাকা খরচও করা হচ্ছে। কিন্তু কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণে নদী রক্ষা ও দূষণ বন্ধ করতে গিয়ে হোঁচট খেতে হচ্ছে সরকারকে। আগামীকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেকে) সভায় অনুমোদন দেয়া ববে বলে জানা গেছে।
প্রকল্প পরিচালক নূরুল আলম ইনকিলাবকে বলেন, বন্যা পরিস্থিতির কারণে নদ-নদীর পানি দীর্ঘদিন বিপদসীমার ওপরে থাকায় দরপত্র যথাসময়ে আহ্বান করা সম্ভব হয়নি। পরিকল্পনা কমিশন থেকে বলা হয়েছে এত টাকা ব্যয়ে প্রকল্পে করোনাকালীন সময়ে অনুমোদন দেওয়া যাবে না। খরচ কমাতে বলেছে কমিশন।
জানা গেছে, বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদ-নদীর তীরভূমিতে পিলার স্থাপন, তীররক্ষা, ওয়ার্কওয়ে ও জেটিসহ আনুষাঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ (দ্বিতীয় পর্যায়) শীর্ষক সংশোধিত প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পটিতে নতুন কিছু অন্তর্ভুক্তি, ব্যয় হ্রাস বৃদ্ধি এবং প্রকল্পের অসম্পূর্ণ কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য ১ হাজার ৮৮৬ কোটি ১৭ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়।
প্রস্তাবিত আরডিপিপির ওপর গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর প্রথম এবং গত বছরের ১৫ ডিসেম্বরে দ্বিতীয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। পিইসি সভার সিদ্ধান্তে পুনর্গঠিত আরডিপিপি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। পুনর্গঠিত প্রকল্প ব্যয় ১ হাজার ১৮১ কোটি ১০ লাখ ৩১ হাজার টাকা। এর আগে ২০১৮ সালের জুলাই হতে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য ২০১৮ সালের ২২ মে একনেকে অনুমোদন দেয়া হয়।
নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডবিøউটিএ)। প্রকল্পের উদ্দেশ্য, এসব নদীর তীরভূমির অবৈধ দখল রোধ এবং দখলমুক্ত অংশের সৌন্দর্য বর্ধন করা। এছাড়াও নদ-নদীর উভয় তীরের পরিবেশগত উন্নয়ন, দখলমুক্ত তীরভূমিতে অবকাঠামো, নব্যতা, গভীরতা ও প্রশস্ততা বৃদ্ধি এবং পানি দূষণ হ্রাস করা।
প্রকল্পের সার-সংক্ষেপে বলা হয়, বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদ-নদীর তীরভূমিতে ৫২ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে। প্রকল্প সংশোধনের কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, ওয়াকওয়ে সংলগ্ন ৩৫ দশমিক ৩৫৮ কিলোমিটার বুল্ডার প্রোটেকশন ফর সিকোর ২ দশমিক ৬৫ কিলোমিটার জেটির জন্য পার্কিং ইয়ার্ড ২১ কিলোমিটার তৈরি এবং সদরঘাট ও কেরাণীগঞ্জ এলাকায় যাত্রীসেবার জন্য চারটি ঘাট নির্মাণ করা হবে।
রেট শিডিউল পরিবর্তন ও বিদ্যমান কিছু অঙ্গের ব্যয় হ্রাস বৃদ্ধি : পন্টুন, পায়ে হাঁটার সেতু, রেলিং, সীমানা প্রাচীর, সীমানা পিলারসহ বিভিন্ন অঙ্গের প্রাক্কলনে ২০১৪ সালের পরিবর্তে ২০১৮ সালের রেট শিডিউল অনুসরণ এবং কিছু অঙ্গের পরিমাণ হ্রাস বৃদ্ধি হওয়ায় বিদ্যমান কিছু অঙ্গের ব্যয় হ্রাস বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এছাড়া মাটি খনন কাজ ১৩ লাখ ২১ হাজার ৫৮৩ ঘন মিটার বৃদ্ধি। নদীর তীরভূমিতে ওয়ার্কওয়ে নির্মাণ ২৩ হাজার ৫৮৫ মিটার বৃদ্ধি।
নদীর তীরভূমিতে কলামের ওপর ওয়াকওয়ে নির্মাণ ১১ হাজার ৮৩০ মিটার বৃদ্ধি। তীর রক্ষা কাজ ২০ হাজার ৯৮ মিটার হ্রাস এবং রেলিং নির্মাণ ৬ হাজার ৩৯০ মিটার হ্রাস। প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, বন্যা পরিস্থিতির কারণে নদীর পানি দীর্ঘদিন বিপদসীমার ওপরে থাকায় দরপত্র যথাসময়ে আহ্বান করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৮ সালের জুলাই হতে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি করার প্রয়োজন।
বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে প্রথম মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পরের বছর বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধারে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছিল। কিন্তু ভুল পরিকল্পনার কারণে দশ বছর পেরিয়ে গেলেও প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হয়নি। যেসব কাজ করা হয়েছিল, সেগুলোও দৃশ্যমান নয়। বুড়িগঙ্গা নদীর পানির প্রবাহ দৃশ্যমান করার জন্য যেভাবে নদী খননের কথা ছিল, সেই নকশায় ছিল গলদ।
জমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে কী ধরনের সমস্যায় পড়তে হতে পারে, সে বিষয়ে কোনো সমীক্ষা করা হয়নি। বুড়িগঙ্গা নদী উদ্ধার করতে গিয়ে ২২টি সেতু ক্ষতির মুখে পড়তে পারে সে বিষয়েও কোনো ধারণা ছিল না কর্মকর্তাদের। ফলে হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের ব্যয় প্রায় এক হাজার ২০০ কোটিতে গিয়ে দাড়িয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।