পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী

ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটে কলেজ ছাত্রী খাদিজার ওপর হামলার ঘটনা করুণ ও নিন্দনীয় বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরীর এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নিঃসন্দেহে এটা নিন্দনীয় ও করুণ ঘটনা যে একটা ছাত্রীকে এভাবে আক্রমণ করা হয়েছে। এই ঘটনার পরেই আমি সিলেট জেলার ডেপুটি কমিশনার এবং সিলেট মেট্রেপলিটন পুলিশের কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছি। এই সংসদ শুরু হওয়ার আগ মুহূর্তে আবারও কথা বলেছি। বিকেলে মেয়ের চাচা আব্দুল কুদ্দুসের সঙ্গে কথা বলেছি। মেয়েটির চিকিৎসার ব্যাপারে, যা যা প্রয়োজন সব বিষয়ে কথা বলেছি, নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। ইতোমধ্যে ওই কালপ্রিটকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ কমিশনার আমাকে জানিয়েছেন যে দ্রুত চার্জশিট তৈরি করতে পারছেন কারণ সব প্রমাণ চোখের সামনে রয়েছে। সুতরাং এ ব্যাপারে যা যা সম্ভব ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, মেয়ে কিংবা ছেলেদের ক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনা বিভিন্ন সময়ে ঘটে থাকে, এগুলো দুঃখজনক। সভ্যতা যতই আমরা এগিয়ে নেই না কেন মানুষের আদিম প্রবৃত্তি আমরা পেছনে ফেলে আসতে পারিনি। আমাদের আইন আছে শাস্তি আছে, বিচার আছে তারপরও এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। আস্তে আস্তে আমাদের এ ধরনের ঘটনা থেকে মুক্ত হয়ে আসতে হবে। আমরা এই ব্যাপারে খুবই সচেতন, খুবই চেষ্টা করছি।
মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা যখন প্রথম ক্ষমতা গ্রহণ করেন সেই বছর ১৪ জন আত্মহত্যা করেছিল, যারা ছেলেদের কর্তৃক নানাভাবে উত্ত্যক্ত হয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়। আমরা তখন সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করি। আমি ১৪টি মেয়ের বাড়ি গেছি, স্কুলে গেছি, মধুখালিতে এক মা-মেয়ে রক্তাক্ত হয়েছে, একটি মেয়েকে রক্ষা করায় নাটোরে শিক্ষককে হত্যা করা হয়, আমি সেসব জায়গায় গেছি। আমরা সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলেছি। এর পরে অনেক মেয়ে আত্মহত্যা করলেও ওই কারণে কেউ আত্মহত্যা করেনি।
মন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমরা সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলছি। সব জায়গায় ক্যাম্পেইন করা হচ্ছে। এই বিষয়টাও আমাদের কাছে অগ্রগণ্য যে আমাদের মেয়েদের নিরাপত্তা দরকার। এটা আমাদের বুঝতে হবে এটা সামাজিক অবক্ষয়, সামাজিক ব্যাধি সম্পন্ন কিছু ছেলে ও মানুষ রয়েছেন। এই ছেলেগুলোও আমাদের সমাজের।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বমানের শিক্ষা চাই যেন আমাদের ছেলে মেয়ে প্রকৃত মানুষ হয়ে গড়ে উঠে। ভালো মানুষ হয়ে হড়ে উঠে, নৈতিক মূল্যবোধ নিয়ে গড়ে উঠে। আমাদের সবাইকে সেই প্রচেষ্টা করতে হবে। রাতারাতি কমে যাবে সেটা বলা যাবে না। তবে অনেক কমে আসবে।
দুই-এক সপ্তাহের মধ্যে অভিযোগপত্র দেয়া হোক : মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান
সিলেটের কলেজছাত্রী খাদিজা বেগমের ওপর হামলার ঘটনায় দুই-এক সপ্তাহের মধ্যে অভিযোগপত্র দিতে পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। গতকাল (বুধবার) রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ছাত্রলীগ নেতার হামলার শিকার হয়ে সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন খাদিজাকে দেখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান আজ বেলা ১১টার দিকে খাদিজাকে দেখতে হাসপাতালে যান। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বের হয়ে যাওয়ার পথে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনায় দ্রুত অভিযোগপত্র দেয়া হোক। বিচারটাও যেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে হয়।
কাজী রিয়াজুল হক এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে এ মামলার অভিযোগপত্র দেয়ার জন্য পুলিশের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বিচার না হওয়াটা আরও বড় ধরনের ঘটনা ঘটানোর উৎসাহ দেয়। তাই এ মামলা নিয়ে বিলম্ব করার কোনো সুযোগ নেই। সবদিক বিবেচনা করে অভিযোগপত্র দেয়া হোক, যেন আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি হয়। আসামি যেন আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বের হয়ে যেতে না পারে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচার সম্পন্নের দাবিও জানান তিনি। যুক্তি হিসেবে বলেন, এখানে তথ্য-প্রমাণ-সাক্ষ্য সবকিছু আছে।
প্রসঙ্গত, খাদিজা সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক (পাস) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী পরীক্ষা দিতে সিলেটের এমসি কলেজে গিয়েছিলেন তিনি। পরীক্ষা শেষে ফেরার সময় খাদিজাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন ছাত্রলীগের নেতা বদরুল আলম। সেই ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনার নৃশংসতায় শিউরে উঠে নিজেদের মতামত প্রকাশ করছে হাজারো মানুষ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।