পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ অনিবার্য হলে ভারতের পাশে থাকবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সচিবালয় রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) উদ্যোগে আয়োজিত বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ইস্যুতে সংলাপে প্রধান অতিথির ভাষণে এ মন্তব্য করেন তিনি। মঙ্গলবার সচিবালয়ে বিএসআরএফ-এর নিজস্ব কার্যালয়ে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। বিএসআরএফ-এর সভাপতি শ্যামল সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান। প্রধান তথ্য কর্মকর্তা একেএম শামীম চৌধুরী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত আমাদের পুরনো ও বিশ্বস্ত বন্ধু। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের অনেক অবদান রয়েছে। আমরা তা কোনওদিন ভুলবো না। তাই ভারত যদি কারও দ্বারা আক্রান্ত হয় সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভারতের পাশে থাকবে। পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের সীমানা নেই। ১২শ’ মাইল দূরে তাদের অবস্থান। পাকিস্তানকে আমরা ৭১ সালে পরাজিত করে তাড়িয়ে দিয়েছি। তাদের হুংকার ও হাঁক-ডাকে কিছু যায় আসে না। তাই তাদের নিয়ে চিন্তা করতে চাই না, স্মরণও করতে চাই না। আমরা ভাবতে চাই না। তাছাড়া দেশটি সম্প্রতি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে মন্তব্য করেছে। যুদ্ধাপরাধ সংক্রান্ত বিচার বাংলাদেশের নিজস্ব আইনেই হয়েছে। এ বিষয়ে দেশটির আচরণে আমরা ব্যথিত, ক্ষুব্ধ। আমরা এর প্রতিবাদ জানিয়েছি। এ কারণে আমরা সার্ক শীর্ষ সম্মেলনেও অংশ নেইনি।
এক প্রশ্নোত্তরে তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনে ভারত ও বাংলাদেশ একসঙ্গেই কাজ করবে। ভারতের সঙ্গে এ ব্যাপারে আমাদের পাকা কথা হয়েছে। তিনি বলেন, আমি যখন জুলাই মাসে ভারত সফর করি তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সেভাবেই আমার কথা হয়েছে। তিনি আমাকে ব্যক্তিগতভাবে বলেছেন, তুমি তোমার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানাবে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় বাংলাদেশ একা নয়, ভারত সঙ্গে আছে।
ভারত থেকে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ হিসেবে চিহ্নিত আসামিদের ফেরত আনার ব্যাপারে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে ভারতের সঙ্গে বন্দি বিনিময় চুক্তি রয়েছে আমাদের। সে চুক্তি অনুযায়ী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে কাজ করছে।
গুলশানের হলি আর্টিজেন বেকারির হামলায় তাহমিদকে কেন জামিন দেয়া হয়েছে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, তাহমিদের কাছ থেকে আমাদের গোয়েন্দারা উল্লেখযোগ্য কোনও তথ্য পায়নি। তারপরেও যখনই তাকে প্রয়োজন হবে তখনই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এই শর্তে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তাছাড়া তাহমিদকে জামিন দিয়েছে আদালত। বাংলাদেশের আদালত স্বাধীন, তাই তারা তাদের মতো করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর আদালতের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনও এখতিয়ার নেই।
যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানরা গোয়েন্দা নজরদারিতে আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা তো কোনও অপরাধ করেনি। তারা যদি বাংলাদেশের আইন-কানুন মেনে সাধারণ নাগরিকের মতো জীবনযাপন করে সেক্ষেত্রে আমরা তাদের বিরুদ্ধে কেন অবিচার করবো। তবে তারা যদি বাংলাদেশের বিদ্যমান আইন-কানুন ভঙ্গ করে তাদের অভিভাবকদের বাঁচানোর চেষ্টা করে এবং কোনও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় তবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সীমান্ত হত্যা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সীমান্ত হত্যাকা- শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ কাজ করছে। সীমান্তে একটি লোক মারা যাক তা আমরা চাই না। এ সময় সাংবাদিকরা তাকে পাল্টা প্রশ্ন করেন গত কয়েক বছরে সীমান্তে ৭৮ জন বাংলাদেশী নাগরিককে হত্যা করা হলেও ভারতের একজনও মারা যায়নি। ভারতের এ ধরনের আচরণকে সমর্থন করেন কিনা? এর জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা ঠিক না। বাংলাদেশীরা মারা গেলেও ভারতের একজনও মারা যায়নি সেটাও ঠিক না। তবে আমরা বলতে চাই আমরা সীমান্তে একটি হত্যাকা-ও চাই না। এটা আমরা সমর্থনও করি না। আমরা সীমান্ত হত্যাকা- জিরোতে নামিয়ে আনার জন্য কাজ করছি। এ জন্য আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে।
তিনি বলেন, অনেক সময় অতি উৎসাহী হয়ে বিএসএফ সদস্যরা এ ধরনের ঘটনা ঘটায়। এগুলো যাতে না তারা ঘটায় সেজন্য দু’পক্ষে আলাপ আলোচনা চলছে।
পুলিশ বাহিনীকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে ‘এয়ার উইং’ গঠনে মন্ত্রণালয়ের নীতিগত সমর্থন দেয়ার কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
তিনি বলেন, পুলিশ ফোর্সকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে একটি এয়ার উইং গঠনের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে কয়টি হেলিকপ্টার কেনা হবে সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি মন্ত্রী। হেলিকপ্টার ক্রয় করতে যাচ্ছি; কয়টি ক্রয় করা হবে তা অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। তবে আমরা ধাপে ধাপে পর্যায়ক্রমে কিনব। আরেক প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা বাহিনীর মধ্যে থেকেই প্রশিক্ষণ দিয়ে এটা চালানোর ব্যবস্থা করব। প্রাথমিকভাবে কিছুটা সমস্যা হলেও বেসরকারিভাবে যারা হেলিকপ্টার চালায়, সেখান থেকে এবং বিমানবাহিনীর সহায়তায় পর্যায়ক্রমে এয়ার উইং গড়ে তোলা হবে বলে জানান আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে আরও শক্তিশালী করা হবে বলেও তিনি জানান।
সিলেট এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ।
তিনি বলেন, কলেজছাত্রী হত্যা চেষ্টার ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না, প্রত্যেককে আইনের আওতায় নেয়া হবে।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের পানিসীমার পরিমাণ অনেক বেড়েছে। তাই এই সুবিস্তৃত পানিসীমা পাহারা দেয়া কোস্টগার্ডের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ । তাই সরকার কোস্টগার্ডের জন্য চারটি অত্যাধুনিক জাহাজ কেনার উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে দুটি জাহাজ এ বছরেই আসছে। এগুলো কোস্টগার্ডের বহরে যুক্ত হবে। এ চারটি জাহাজ পেলে আমাদের কোস্টগার্ড আধুনিক হবে এবং বিশ্বের যে কোনও কোস্টগার্ডের সঙ্গে তা সমান তালে সমুদ্রসীমা পাহারা দিতে পারবে।
বিদেশে কর্মরত ১ কোটি ৫১ লাখ প্রবাসীকে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) দেয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রত্যেক প্রবাসীকে আমরা এমআরপি দিয়েছি। একজন বিদেশীও এমআরপির অভাবে দেশে ফেরত আসেননি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।