পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
খুলনা অঞ্চলে পর্যটনের প্রধান আকর্ষণ সুন্দরবন। প্রকৃতির ‘অনিন্দ্যসুন্দর’ কথাটা যাকে নিয়ে অবলীলায় বলা যায়। নদী, খাল ও সমুদ্র, সঙ্গে লাখ লাখ সবুজ লতাপাতার গাছপালা। এত কিছু বুকে নিয়ে জেগে থাকা মায়াবী রূপের এমন ভূপ্রাকৃতিক সৌন্দর্য অতি সহজেই মানুষকে মুগ্ধ করে।
করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত ১৯ আগস্ট দেশের সব পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেয়া হলেও দক্ষিণাঞ্চলের অনিন্দ্যসুন্দর সুন্দরবনকে এখনো পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়নি। এ অঞ্চলের পর্যটনের মূল আকর্যণ সুন্দরবন। তাই এটা বন্ধ থাকায় অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে এর প্রভাব পড়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। সুন্দরবন ছাড়া খুলনাঞ্চলের অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় পর্যটক আসছে খুবই কম। পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে আসা অধিকাংশ মানুষই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না।
সুন্দরবন বন বিভাগ সূত্র জানায়, করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে ২০২০ সালের ১৯ মার্চ থেকে ৩১ অক্টোবর সুন্দরবনে লকডাউন জারি করা হয়। নভেম্বরে তা সাময়িক প্রত্যাহারের পর গত ৩ এপ্রিল আবার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়, যা এখনো কার্যকর রয়েছে। ফলে সুন্দরবনে পর্যটকরা আসতে পারছেন না। প্রতি বছর সুন্দরবনে প্রায় ২লাখ দেশি-বিদেশি পর্যটক ভ্রমণ করে থাকেন। সুন্দরবনের ভেতরে ৮ টি পর্যটন স্পট রয়েছে।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ডঃ আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, দেশের সকল পর্যটন কেন্দ্র খুললেও সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্র ১৯ আগস্ট উন্মুক্ত করা হয়নি। আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে সকল প্রকার মৎস্য ও কাঁকড়া শিকার বন্ধ রাখার ঘোষণা রয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্রও পড়ছে। ফলে ১ সেপ্টেম্বরের আগে সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্র খোলার সম্ভাবনা নেই। সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, সাধারণত জুলাই-আগস্ট মাছের প্রজনন মৌসুম। তবে এবার জুন মাস থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে মৎস্য শিকার ও প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ১ সেপ্টেম্বর থেকে মৎস্য শিকারের জন্য পারমিট দেয়া হবে। তবে পর্যটন কেন্দ্র খোলার বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত আসেনি।
খুলনা আঞ্চলিক বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ হয়েছিল পরিবেশ বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায়। যেহেতু আমরা নির্দিষ্ট মন্ত্রণালয়ের আওতায় রয়েছি, আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে কোন নির্দেশনা আসেনি। তাই আপাতত খোলার সম্ভাবনা নেই। সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্র বন্ধের সময় আরও বাড়তে পারে।
সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্র খোলার বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত পাননি ট্যুর অপারেটররাও। ট্যুর অপারেটর এ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবনের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আযম ডেভিড বলেন, সুন্দরবন খুলবে কি-না সে বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। সংগঠনের তালিকার্ভুক্ত ৬৩টি ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়াও বিচ্ছিন্নভাবে আরো কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সবমিলিয়ে শতাধিক প্রতিষ্ঠান হবে। এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলেই চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে। আর্থিক সংকটে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
সুন্দরবন ছাড়া এ অঞ্চলের অন্যান্য পর্যটন স্পটগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, হজরত খানজাহান আলী (রহ:) এর কর্ম ও স্মৃতিবিজড়িত বাগেরহাটে রয়েছে বিখ্যাত খাঞ্জেলি দীঘি, ঘোড়া দীঘি, ষাট গম্বুজ মসজিদ, এক গম্বুজ মসজিদ ও প্রত্মতত্ব বিভাগের যাদুঘর। রামপালে রয়েছে বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত মিনি তাজমহল, নির্মীয়মান তাপ বিদ্যু কেন্দ্র। এছাড়া রয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর, ইপিজেড। এবার এ স্পটগুলোতে পর্যটকের সংখ্যা খুবই কম। ষাটগম্বুজ মসজিদ দেখতে আসা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী আফসানা ফেরদৌস জানান, করোনার কারণে এতোদিন প্রায় গৃহবন্দি ছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় পড়াশোনার কোনো চাপ নেই। লকডাউন উঠে যাওয়ায় কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে এসেছি। অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা রেজাউল করীম তার পরিবার নিয়ে এসেছেন ৬শ’ বছরের প্রাচীন ঘোড়া দীঘি দেখতে।
বাগেরহাটের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ মানুষই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। এ বিষয়ে প্রত্মতত্ব অধিদফতরের খুলনার আঞ্চলিক পরিচালক আফরোজা খান মিতা জানান, পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে আমরা অনুরোধ করছি। মাস্ক ছাড়া প্রত্মতত্ব অধিদফতরের আওতাধীন বাগেরহাট ও খুলনার যাদুঘর দুটিতে কোনো পর্যটক প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।