পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো : এবার চট্টগ্রামে চিকিৎসক দম্পতির নবজাতককে মৃত ঘোষণা করে প্যাকেট করে দেয়ার পর দেখা গেল সে জীবিত। ঘটনাটি ঘটেছে নগরীর প্রবর্তক মোড়ের বেসরকারি হাসপাতাল সিএসসিআরে। সোমবার রাত ১টায় ওই হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করে ওই নবজাতক। যার বাবা-মা দু’জনই সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক। কিন্তু সিএসসিআর হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসকদের নিষ্ঠুর অবহেলা দুনিয়াতে আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ওই নবজাতককে ঠেলে দিলো মৃত্যুর দিকে। জন্মের কয়েক ঘণ্টা পর শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করে একটি প্যাকেটবন্দী করে তাতে টেপ দিয়ে মুড়িয়ে দেয় হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। দেয়া হয় ডেথ সার্টিফিকেটও। নবজাতকের মা বান্দরবান জেলার আলীকদম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডেন্টাল সার্জন ডা: রিদওয়ানা কাউসার আর বাবা কক্সবাজার সরকারি হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা: নুরুল আজম।
নবজাতকের মায়ের বরাত দিয়ে স্বজনরা অভিযোগ করেন, দেহে প্রাণ থাকার পরও যথাযথ চিকিৎসাসেবা না দিয়ে জন্মের মাত্র দুই ঘণ্টা পর মৃত্যু সনদ দিয়ে একটি প্যাকেটে করে ওই নবজাতককে তার মায়ের কেবিনে দিয়ে যায় হাসপাতালের লোকজন। তবে এই মৃত্যুকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না প্রসূতি। কেবিনে বসে নিজের সন্তানের সঠিক অবস্থা জানতে অস্থির মায়ের মন। প্যাকেট খুলে শিশুরর মুখ দেখতেই বিস্মিত ডা: রিদওয়ানা কাউসার তুষার।
তিনি দেখলেন তার শিশু নড়াচড়া করছে। ততক্ষণে শিশুটির শরীর খুবই ঠা-া হয়ে গেছে। শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে না পারায় তার শরীর নীল হয়ে যায়। বিষয়টি দ্রুত হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসকদের জানানো হলেও তারা তাদের সিদ্ধান্তে অটল। চিকিৎসকদের সাফ কথা শিশু মারা গেছে। সে নড়াচড়া করছে না, গায়ের মাংস নড়ছে।
এ অবস্থায় প্রসূতি নিজেই শিশুকে নিয়ে গেলেন চাইল্ড কেয়ার হাসপাতালে। হাসপাতালের ওয়ার্মারে দেয়ার পর শরীর স্বাভাবিক হলো। কিন্তু সেখানে বেড খালি না থাকায় নগরীর ম্যাক্স হাসপাতালে ওই শিশুকে ভর্তি করা হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নবজাতকটি ওই হাসপাতালে সুস্থ রয়েছে। ডা: রিদওয়ানা কাউসার সাংবাদিকদের বলেন, সন্তান ডেলিভারি হওয়ার পর গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা: শাহেনা আক্তারকে বলতে শুনলাম শিশু শ্বাস নিচ্ছে। তাকে দ্রুত এনআইসিইউতে (নিউনাটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) নিয়ে যাওয়া হোক। ডাক্তারের নির্দেশে এনআইসিইউতে নেয়ার দুই ঘণ্টা পর মৃত্যু সনদ দিয়ে একটি প্যাকেটে ভরে শিশুকে কেবিনে দিয়ে যায়।
তিনি বলেন, যেহেতু আমি নিজেও ডাক্তার তাই গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কথাটি আমার মনে পড়ল। ট্যাপ দিয়ে মোড়ানো প্যাকেটটি খুলে দেখতে চাইলাম। কিন্তু হাসপাতালের দায়িত্বরত লোকজন আমাকে বাধা দিলেন। তারপরও আমি জোর করে প্যাকেট খুলে দেখি শিশু নড়াচড়া করছে। আবারও এনআইসিইউতে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য বললে সেখানে দায়িত্বরত ব্যক্তি বললেন, শিশু মৃত। আমি বললাম, শিশু নড়াচড়া করছে। তিনি বলেন, শিশু না। শরীরের মাংস নড়ছে। আমি বললাম, পরীক্ষা করে দেখুন। কিন্তু তিনি পরীক্ষা করতে অস্বীকৃতি জানান।
এনআইসিইউতে দায়িত্বরতদের অবহেলার কারণেই এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে অভিযোগ করে ডেন্টাল সার্জন ডা: রিদওয়ানা বলেন, এনআইসিইউতে নেয়া হলেও সেখানে শিশুর কোনো পরিচর্যা করা হয়নি। কারণ তার নাক-মুখও পরিষ্কার করা হয়নি। আক্ষেপের সুরে রিদওয়ানা বলেন, এতবড় হাসপাতালে যদি এই অবস্থা হয় তাহলে মানুষ কোথায় যাবে।
তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি তারা নবজাতকটিকে মৃত ঘোষণা করেনি। এ বিষয়ে দায়িত্বরত মেডিক্যাল অফিসার তানভির জাফর বলেন, আমরা আগেই বলেছিলাম। হাসপাতালে ওয়ার্মার খালি নেই। পাশের হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেছিলাম। তবে হাসপাতাল থেকে মৃত্যু সনদ দেয়া হলেও তা অস্বীকার করেছেন তিনি।
ডা: রিদওয়ানার স্বামী কক্সবাজার জেলা সদর হাপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা: নুরুল আজম বলেন, দুই ঘণ্টা ধরে ব্যবস্থা না নেয়ায় শিশুর অবস্থার অবনতি হয়েছে। তারা যদি ব্যবস্থা নিতে না পারে সেটা আমাদের আগে জানালেই হতো। চার ঘণ্টা আগে পরিচর্যা শুরু করা গেলে এ ধরনের সমস্যা হতো না। সেখানে দায়িত্বরতরা অবহেলা করেছে। সিএসসিআর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নবজাতকের যথাযথ ব্যবস্থা না নিয়ে মেডিক্যাল ইথিকস মানেনি বলেও অভিযোগ করেন ডা: রিদওয়ানা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।