Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) তাঁর সমগ্র চিন্তা ভাবনার মধ্য দিয়ে একটি আলোকিত সমাজ গঠনের চেষ্টা করেছেন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ আগস্ট, ২০২১, ৬:৪৩ পিএম

খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) তাঁর সমগ্র চিন্তা ভাবনার মধ্যদিয়ে একটি আলোকিত সমাজ গঠনের চেষ্টা করেছেন। তিনি কখনো গোঁড়ামির কথা বলেননি। তাঁর সমাজ চিন্তায় মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘স্রষ্টার এবাদত ও সৃষ্টের সেবা’। স্রষ্টার এবাদত করতে হলে আগে সৃষ্টের সেবা করতে হবে। তিনি ভয়, শ্রদ্ধা এবং প্রেম এই তিনটার সমন্বয় ঘটিয়ে নিজেকে গড়ে তোলার কথা বলেছেন।

উপমহাদেশের প্রখ্যাত সুফীসাধক, দার্শনিক, শিক্ষাবিদ ও সমাজসংস্কারক হজরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.)-এর জীবন ও কর্ম নিয়ে ২৮ আগস্ট ২০২১ বাংলাদেশি সময় রাত ৮টায় আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক সেমিনারে সাবেক সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আবদুল মজিদ একথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) ছিলেন একজন লেখক ও সাহিত্যিক। তিনি অনগ্রসর মুসলমানদের শিক্ষিত করতে বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন ধরনের হোস্টেল, লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি সবসময় উদার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে শিক্ষা প্রসার করেছিলেন। তাঁর লেখার মধ্যেও সমাজ চিন্তা ও শিক্ষার উন্নয়নের কথা ফুটে উঠেছে।

ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন ও নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ সেমিনারে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এবং সভাপতিত্ব করেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের সভাপতি প্রফেসর ড. আফম রুহুল হক এমপি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের সাধারণ সম্পাদক ড. এস.এম খলিলুর রহমান।

প্যানেল আলোচক হিসেবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন ভিসি প্রফেসর ড. গোলাম রহমান বলেন, খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা র.) বিংশ শতাব্দীর একজন শ্রেষ্ঠ প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, শিক্ষা সংস্কারক, সমাজহিতৌষি ও তিনি একজন উচ্চ মার্গের আউলিয়া ছিলেন। তাঁর বলিষ্ঠ ভূমিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলার মুসলমানদের ইসলামিক শিক্ষা ও আধ্যাত্মিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে অবকাঠোমো উন্নয়নে তিনি ব্রতী হন।

তিনি বলেন, তাঁর জীবন পরিক্রমাকে আমরা চার ভাগে মূল্যায়ন করতে পারি। শিক্ষা জীবন (১৮৭৩-১৮৯৫), চাকরী জীবন (১৮৯৫-১৯২৯), অবসর জীবন (১৯২৯-১৯৬৫), লেখক জীবন (১৯০৫-১৯৬৫)।

তিনি জানান, মুসলমানদের মধ্যে তিনিই প্রথম আইইএস অন্তর্ভুক্ত হন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলিম সিনেট ও সিন্ডিকেটের সদস্য হন। ১৯১১ সালে বৃটিশ সরকার তাঁকে খানবাহাদুর উপাধীতে ভূষিত করেন।

বাংলা একাডেমির সাবেক পরিচালক, কবি এবং বিশ্লেষক ড. গোলাম মঈনুদ্দিন বলেন, খানবাহাদুর আহছানউল্লা (র.)’র জীবন ধারার প্রতিটি বাঁকে যে অফুরান সমৃদ্ধি, সমারোহ ও সৌন্দর্য্যরে বিকাশ ঘটেছিল তাঁর যথার্থ নিরুপণ করা সম্ভব হলে ইতিহাসের অনেক অজানা কাহিনী উদ্ধার হতো। তাঁর জীবনভিত্তিক অনেক ঐতিহাসিক সত্যের তেমন মজবুত মিমাংসা হয়নি। তবু তাঁর বিশাল বর্নিল জীবনধারার কাছে আমাদের ঋণ ও কাতরতার কোন শেষ নেই।

ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে আয়োজিত এই সেমিনারে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মেক্সিকো, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড থেকে আলোচকবৃন্দসহ ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের প্রেসিডেন্ট কাজী রফিকুল আলম, নির্বাহী পরিচালক ড. এম. এহ্ছানুর রহমান, আহ্ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ফাজলী ইলাহী ও ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ঢাক আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ