Inqilab Logo

বুধবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১, ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেল খিজির-৮

প্রকাশের সময় : ৫ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

২ শতাধিক যাত্রীর প্রাণ রক্ষা
নাছিম উল আলম : সাগর মোহনার অদূরে ভাটি মেঘনা পাড়ি দিয়ে ভোলার ইলিশা ঘাট থেকে যাত্রী বোঝাই করে লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরীর হাট যাবার পথে মূল ইঞ্জিনে গোলযোগসহ তলা ফেটে যাওয়ায় মাঝপথ থেকেই ফিরে এলো রাষ্ট্রীয় নৌ-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান-বিআইডব্লিউটিসি’র ‘খিজিরÑ৮’ সি-ট্রাকটি।
এসময় নৌযানটিতে ২ শতাধিক যাত্রী ছিল। ইজারায় চলাচলকারী সার্ভে মেয়াদ উত্তীর্ণ ও রুট পারমিটবিহীন ঐ নৌযানটি গতকাল সকালে ভোলার ইলিশা ঘাট ত্যাগ করে মেঘনা পাড়ি দেবার সময় এ বিপত্তি ঘটে। নৌযানটির মূল ইঞ্জিনে গোলযোগের পাশাপাশি আকস্মিকভাবেই এর তলা ফেটে খোলের মধ্যে পানি প্রবেশ করতে দেখে ক্রুরা দ্রুত কাপ্তেনকে বিষয়টি অবহিত করে।
কাপ্তেন কোনো ধরনের ঝুঁকি না নিয়ে নৌযানটি ঘুরিয়ে দ্রুত ইলিশা ঘাটে ফেরত আনেন। ইতোমধ্যে খোলের অভ্যন্তরে কিছু পানি প্রবেশ করলেও সব যাত্রীকে নিরাপদে ইলিশা ঘাটে নামিয়ে দেয়া সম্ভব হয়। ইলিশা ঘাটে পৌঁছার পরে সব যাত্রীই দ্রুত নৌযানটি থেকে নেমে যায়।
বিআইডব্লিউটিসি থেকে দৈনিক ইজারা ভিত্তিতে এ নৌযানটি একজন ইজারাদার পরিচালনা করলেও গত ২ আগস্ট-এর সার্ভে মেয়াদ শেষ হয়ে যাবার পরে তা নবায়নের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এমনকি বিআইডব্লিউটিএ থেকে নৌযানটির কোন রুট পারমিট ও সময়সূচিও গ্রহণ করা হয়নি। গত কয়েক বছরে নৌযানটি ডকিং পর্যন্ত করা হয়নি। ফলে এর তলার অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
এদিকে ঐ একই রুটে বেসরকারি মালিকানায় চলাচলকারী ‘এলসিটি কুতুবদিয়া’র অবস্থাও খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ঐ নৌযানটিরও কোনো সার্ভে সনদ নেই। এমনকি এ নৌযানটিও গত কয়েক বছরে ডকিং করা হয়নি। প্রায়ই এর তলা ফেটে পানি প্রবেশ করছে খোলের অভ্যন্তরে। বারবারই সিমেন্ট প্লাস্টার দিয়ে তালি মেরে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে নৌযানটিতে।
বিআইডিব্লিউটিসি’র দুটি সি-ট্রাকও বিগত দুই ঈদে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে প্রতিদিন ভোলা-লক্ষ্মীপুর ও বরিশাল-লক্ষ্মীপুর (মজু চৌধুরীর হাট) রুটে যাত্রী বহন করে। অথচ ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের ‘এসটি খিজির-৭’এর সার্ভে সনদ শেষ হয়ে গেছে গত ২ আগস্ট। আর বরিশাল-লক্ষ্মীপুর রুটের এসটি খিজির-৮’এর মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১৫ ডিসেম্বর। সরকারি একটি সংস্থা হয়েও বিআইডব্লিউটিসি জনগণের জানমালের ন্যূনতম নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় না নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দুটি সি-ট্রাকে যাত্রী বহন করছে। অভিযোগ রয়েছে, ইজারাদারের স্বার্থে এসব সি-ট্রাকের সার্ভে সনদ পর্যন্ত করা হচ্ছে না। কারণ যাত্রীর ভিড় হ্রাস পেলেই ইজারাদার নানা অজুহাতে এসব সি-ট্রাকের চলাচল বন্ধ করে দিচ্ছে গত কয়েক বছর যাবত। এবারো সার্ভে সনদের অজুহাতেই এসব নৌযান বন্ধের পথ খোঁজা হতে পারে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।
তবে এ ব্যাপারে গতকাল বরিশালে বিআইডব্লিউটিসি’র দায়িত্বশীল মহল থেকে বলা হয়েছে, গতকাল মেঘনা পাড়ি দেয়ার সময় খিজির-৮’এ যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়ায় তা ইলিশা ঘাটে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তলা ফেটে খোলে পানি প্রবেশের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
বিষয়টি নিয়ে গতকাল সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সাথে আলাপ করা হলে তিনি বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে দেখবেন বলে জানিয়ে এক্ষেত্রে আইনের কঠোর প্রয়োগ করা হবে বলেও জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেল খিজির-৮
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ