পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কোনো দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী হলে সে দেশের গণতন্ত্র, আইনের শাসন, সাম্য, সামাজিক ন্যায়বিচার ও নাগরিকের মানবিক মর্যাদা সংরক্ষিত হয়। ক্ষমতাসীনরা খেয়ালখুশি মতো কিছু করতে ভয় পায়। বাংলাদেশে তেমন কয়েকটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেগুলোতে শাসক দলের অনুগত আমলাদের নিয়োগ দেয়ায় মানুষের প্রত্যাশা মতো প্রতিষ্ঠানগুলো চলছে না। যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠানগুলো গঠন করা হয় সে লক্ষ্য অর্জিত হচ্ছে না। ফলে ওইসব প্রতিষ্ঠানের কয়েকটির নিরপেক্ষতা নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রশ্নের উদ্রেগ হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন মূলত অনুগত আমলাদের বসানোয় ওইসব প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বরতরা সরকারের ইচ্ছামতো চলতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান কার্যত সরকারের ইচ্ছাপূরণের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন, তথ্য কমিশন, আইন কমিশন, সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি), দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, নদী কমিশন, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনসহ গুরুত্বপূর্ণ কমিশনগুলোর বেশিরভাগ পদেই বসানো হয়েছে সাবেক আমলাদের। এসব আমলার কর্মকান্ড, সিদ্ধান্ত গ্রহণে নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কমিশনগুলোতে আমলা নির্ভরতা বাড়াতে গিয়ে যাদের কোনো অভিজ্ঞতা নেই, তাদেরও নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। ফলে তারা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হচ্ছেন। আর সাবেক একজন মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলছেন, কমিশনগুলোতে শুধু আমলা নিয়োগ না দিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সফল ব্যক্তিত্বদের যুক্ত করা উচিত। এতে ভালো ফল হবে।
জানতে চাইলে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান ইনকিলাবকে বলেন, এসব কমিশনে নিয়োগ দেয়ার যে প্রক্রিয়া বা আইন আছে তা যথেষ্ট। এ আইনে কোনো ঘাটতি নেই। তবে আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে ঘাটতি আছে। যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে, তখন তারা তাদের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে নিজেদের পছন্দ মতো অবসর প্রাপ্ত আমলাদের নিয়োগ দেয়। আর আমলা তখন সরকারে অনুগত হয়ে কাজ করে। কমিশনে নিয়োগে যে আইন তা পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তাই এসব কমিশনে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হলে এবং ভালো সৎ লোক নিয়োগ দিতে হলে দেশের রাজনীতিবিদদের মানসিকতার পরিবর্তন প্রয়োজন।
সংবিধান ও আইন দিয়ে প্রতিষ্ঠিত এসব কমিশনে অন্য শ্রেণি-পেশার মানুষের নিয়োগের সুযোগ থাকলেও তা এখন দখলে নিয়েছে সাবেক আমলারা। দীর্ঘদিন থেকে এ নিয়ে কোনো আলোচনা না হলেও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের বদলে করোনাকালে তৃণমূলের সব কাজে আমলাদের জেলার দায়িত্ব দেওয়ার পর রাজনৈতিক নেতারা আমলাদের নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। জাতীয় সংসদেও এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিগত নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ পর্যায়ে চলে এলেও নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেনি। প্রতিটি নির্বাচনে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে না পারায় ক্ষমতাসীন সরকার বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে। রাজনৈতিক নেতাদের এসব বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক থাকলেও সরকারের দফতরগুলোতে এখন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদেরই আধিপত্য। যেসব কমিশন ও সরকারি দফতরে সাবেক আমলাদের বাইরে অন্যদেরও নিয়োগের সুযোগ রয়েছে। সেখানেও আধিপত্য রয়েছে সাবেক আমলাদের। এসব কমিশনে ও সরকারি দফতরগুলোতে সাবেক আমলাদের নিয়োগের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার এবং স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ও রাজনীতি বিশ্লেষক ড. তোফায়েল আহমেদ মনে করেন দেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কৃতির মধ্যে বড় ধরনের অবক্ষয় হয়েছে। আইনের শাসন বাস্তবায়ন করতে হলে এর সঙ্গে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কৃতি সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে হবে। আগে সেটা থাকলেও এখন সেটার অবক্ষয় হচ্ছে। ফলে আইনের শাসন ব্যাহত হচ্ছে। জনগণ ভোটের অধিকার হারিয়েছে।
আলী ইমাম মজুমদার ইনকিলাবকে বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্যে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কৃতি শোধরাতে হবে। প্রশাসনের যেমন কাজ আছে তেমনি রাজনীতিবিদদেরও আছে। এখন একজন আরেকজনের অবস্থান ছাড়িয়ে যদি কাজ করতে যায়, তাহলেই এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়। সারা দেশেই এক ধরনের অসহিষ্ণু রাজনৈতিক অবস্থা বিরাজ করছে। দেশে অনেক ভালো রাজনীতিবিদ আছেন, যারা প্রশাসনের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করেন। আবার এর বিপরীতও রয়েছে।
ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, আমাদের রাজনৈতিক দলের লোকজন অতিরিক্ত ক্ষমতাবান হয়ে গেছে। মানে তাদের মধ্যে নীতি-নৈতিকতার বাইরে গিয়ে কাজ করার মানসিকতা প্রকট হয়ে গেছে। যে কারণে তারা আইন-কানুন মানছে না। আর স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মীদের মধ্যে তো প্রশাসনিক নিয়ম-নীতি, দেশের স্থিতিশীলতা বোঝার মানসিকতা নেই।
করোনা মহামারি মোকাবিলায় দেশের ৬৪ জেলায় ৬৪ জন সচিবকে প্রণোদনা প্রদানে তালিকা প্রণয়ন এবং তদারকির দায়িত্ব দিয়ে গত ১ এপ্রিল একটি অফিস আদেশ জারি করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কেউ মন্তব্য না করলেও অনেক সরকারি দলের এমপি তা ভালোভাবে নেননি। গত ২৮ জুন জাতীয় সংসদে এ নিয়ে সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, আমলাদের কারণে রাজনীতিকরা ‘ম্লান’ হয়ে যাচ্ছেন। প্রশাসনিক কর্মকর্তারা মাঠে যান না অথচ তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আমার এলাকায় যাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তিনি এখন পর্যন্ত যাননি। এটা কিন্তু ঠিক না। একটা রাজনৈতিক সরকার এবং রাজনীতিবিদদের যে কর্তৃত্ব কাজ, আমলার ক্ষমতায়নে সেটা কিন্তু ম্লান হয়ে যাচ্ছে। জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি বলেন, রাজনীতির মঞ্চগুলো আস্তে আস্তে ব্যবসায়ীরা দখল করছেন। দেশ চালাচ্ছেন আমলারা। আমরা রাজনীতিবিদেরা এখন তৃতীয় লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। এই হচ্ছে আমাদের দুর্ভাগ্য। তবে তাদের এই বক্তব্যে ভিন্নমত পোষণ করে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, জেলা পর্যায়ে সচিবদের দায়িত্ব দেওয়াকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বলে বিবেচনা করেন।
সাবেক সচিব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, শুধু প্রশাসন ক্যাডারে নিয়োগের জন্য তো পিএসসি না। সেখান থেকে আরো অনেক ক্যাডারে নিয়োগ দেওয়া হয়। ফলে পিএসসিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোক থাকা উচিত।
সরকারি কর্মকমিশন বা পিএসসিতে বর্তমানে একজন চেয়ারম্যান ও ১৪ জন সদস্য আছেন। কমিশনের ১৫ সদস্যের মধ্যে পাঁচজন সাবেক সচিব, তিনজন সাবেক অতিরিক্ত সচিব। এ ছাড়া পররাষ্ট্র ক্যাডারের সাবেক এক কর্মকর্তা, একজন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা, দুজন শিক্ষক, একজন চিকিৎসক এবং একজন অবসরপ্রাপ্ত সাবেক সরকারি প্রকৌশলী সদস্যের দায়িত্বে আছেন। সাবেক সচিব মো. সোহরাব হোসাইন পিএসসি চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন। সদস্য হিসেবে রয়েছেন সাবেক সচিব মো. শাহজাহান আলী মোল্লা, আবদুল মান্নান, এস এম গোলাম ফারুক এবং ও এন সিদ্দিকা খানম। সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. ফজলুল হক, নূরজাহান বেগম, কাজী সালাহ্উদ্দিন আকবর পিএসসির সদস্য। এর বাইরে পররাষ্ট্র ক্যাডারের সাবেক কর্মকর্তা এম শামীম আহসান, পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক বিনয় কৃষ্ণ বালা, শিক্ষা ক্যাডারের সাবেক কর্মকর্তা মো. হামিদুল হক, অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক উত্তম কুমার সাহা পিএসসির সদস্যের দায়িত্বে আছেন। এ ছাড়া শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক নূরজাহান বেগম, নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক নির্বাহী পরিচালক জাহিদুর রশিদ কমিশনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পিএসসির ১৫ সদস্যের মধ্যে ৯ জনই সাবেক আমলা। অর্থাৎ কমিশনের চেয়ারম্যানসহ ৬০ শতাংশ পদেই আমলারা নিয়োগ পেয়েছেন। সংবিধান অনুসারে পিএসসির চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নিয়োগ দেন প্রেসিডেন্ট। ২০ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে সরকারি চাকরি করেছেন, তাঁদের মধ্য থেকে কমিশনের অর্ধেক সদস্য (অর্ধেকের কম না) নিয়োগ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। পিএসসির গত কয়েকটি কমিশন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কমিশনে দিন দিন আমলাদের সংখ্যা বাড়ছে।
সাবেক সচিব কে এম নূরুল হুদা প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং সাবেক সচিব রফিকুল ইসলাম ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদার নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্বে আছেন। অন্য দুই নির্বাচন কমিশনারের একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ, আরেকজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা। সংবিধান অনুসারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেন প্রেসিডেন্ট। তবে কারা ওই পদে নিয়োগ পাওয়ায় যোগ্য সে বিষয়ে সংবিধানে কিছু বলা নেই। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের জন্য সংলাপের আয়োজন করেছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমান। সংবিধান ও আইনে কিছু বলা না থাকলেও এরপর থেকে নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি করে সরকার। বিগত নির্বাচন কমিশন কাজী রকিবুদ্দীন আহমদ ও বর্তমান নির্বাচন কমিশন কে এম নুরুল হুদার দায়িত্ব পালনের সময় বিতর্কিত নির্বাচনের কারণে জনগণ ভোটের অধিকার হারিয়েছে। নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার ভোট দেয়ার আগ্রহ কমে গেছে। এতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের ভাবমর্যাদা নষ্ট হয়েছে। অথচ পাকিস্তান আমলে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে সে সময়ের প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি আবদুস সাত্তারের নিরপেক্ষ ভূমিকার কারণে আওয়ামী লীগ বিপুল আসন লাভ করেছিল। ১৯৭২ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেছেন বিচারপতি এম ইদ্রিস, বিচারপতি এ কে এম নূরুল ইসলাম, বিচারপতি চৌধুরী এ.টি.এম মাসুদ, বিচারপতি সুলতান হোসেন খান, বিচারপতি আব্দুর রউফ, বিচারপতি এ. কে.এম সাদেক, মোহাম্মদ আবু হেনা, এম এ সাঈদ, বিচারপতি এম. এ. আজিজ, ড. এ.টি.এম. শামসুল হুদা। এতে দেখা যায় বেশির ভাগই প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন সাবেক বিচারপতি। এসব নির্বাচনের কিছু ভোট নিয়ে বিতর্ক হলেও সাবেক আমলা, কাজী রকিবুদ্দিন আহমদ ও কে এম নুরুল হুদার মতো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনকে সরকারের ‘নাচের পুতুল’ করেননি।
এ প্রসঙ্গে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, এই নির্বাচন কমিশনে গঠনে যাদের নিয়ে সার্চ কমিটি করা হয়েছিল, তারাও কিন্তু ভালো সুপারিশ দিতে পারেননি। কারণ বর্তমান কমিশন নিয়ে বিতর্ক আছে। তথ্য কমিশনের তিনজন কমিশনারের সব পদেই বর্তমানে সাবেক সচিবদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সাবেক সচিব মরতুজা আহমদ প্রধান তথ্য কমিশনার এবং সাবেক সচিব সুরাইয়া বেগম ও আবদুল মালেক তথ্য কমিশনারের দায়িত্বে আছেন। তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী, প্রধান তথ্য কমিশনার ও তথ্য কমিশনারদের নিয়োগে একটি বাছাই কমিটি করতে হয়। আইন, বিচার, সাংবাদিকতা, শিক্ষা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, তথ্য, সমাজকর্ম, ব্যবস্থাপনা বা জনপ্রশাসনে ব্যাপক জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার অধিকারী ব্যক্তিদের মধ্য থেকে প্রধান তথ্য কমিশনার ও তথ্য কমিশনারদের নিয়োগ দেওয়া যায়। সরকারের সাবেক আমলাদের বাইরে অন্যরা সেখানে নিয়োগ পাচ্ছেন কম।
সাবেক সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদার বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন সাবেক সচিব নাছিমা বেগম। সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন আহমেদ ও নমিতা হালদার মানবাধিকার কমিশনের সদস্য। এ কমিশন কার্যত ‘বোবা কমিশন’ এ পরিণত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান যখন এ কমিশনের দায়িত্বে ছিলেন; তখন বিভিন্ন বিষয়ে তিনি সরব ছিলেন। কিছু করতে পারুক না পারুক প্রতিটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু বর্তমান কমিশন নিয়োগের পর কার্যত ঘুমিয়েই সময় পার করছে।
সাবেক সচিব মো. মফিজুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসনের দায়িত্বে আছেন। কমিশনগুলো ছাড়াও সরকারি অন্য গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের শীর্ষ পদেও এখন সাবেক আমলাদের প্রাধান্য। সাবেক সচিব ফজলে কবির বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, সাবেক সচিব সাজ্জাদুল হাসান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের চেয়ারম্যান, সাবেক সচিব এন এ এম ছিদ্দিক ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সাবেক সচিব শেখ ইউসুফ হারুন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং সাবেক সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলির সদস্য লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, এতে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। সাবেক সচিবরা অভিজ্ঞ, তারা অবসরে যাওয়ার পরও ভালোমতো কাজ করতে পারেন। তারা ছাড়া সিভিল সোসাইটিতে হয়তো সে রকম ব্যক্তি উঠে আসছেন না। সে কারণেই আমলারা প্রাধান্য পাচ্ছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।