Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বিদেশ যেতে হলে জেলে গিয়ে নতুন আবেদন করতে হবে খালেদা জিয়াকে

কর্মশালায় আইনমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ আগস্ট, ২০২১, ১২:০০ এএম

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োজন রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োজন আছে। কিন্তু এ আইনের অপব্যবহার বন্ধে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে চাইলে বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে গিয়ে নতুন করে আবেদন জানাতে হবে।

গতকাল শনিবার সাংবাদিকদের জন্য আয়োজিত এক কর্মশালায় প্রধান প্রশিক্ষকের আলোচনায় অংশ নিয়ে এ তিনি এ মন্তব্য করেন। কর্মশালায় আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, এমআরডিআইয়ের নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমান মুকুল, ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মাশহুদুল হক প্রমুখ কর্মশালায় বক্তৃতা করেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক আরও বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। সেক্ষেত্রে তাকে আবার কারাগারে যেতে হবে। নতুন করে আবেদন করতে হবে। যে আবেদনের প্রেক্ষিতে বেগম খালেদা জিয়ার দন্ড স্থগিত করে মুক্তি দেয়া হয়েছে, সেই আলোকে তাকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। ওই আবেদন নিষ্পত্তি হয়ে গেছে।
কর্মশালায় ফৌজদারি কার্যবিধি নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে ৪০১ ধারার বিষয়টি উঠে আসে। তখন আইনমন্ত্রী বলেন, সাজা মওকুফের ক্ষমতা সরকারের আছে। যেটি ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় ৬টি উপধারা রয়েছে। এর মধ্যে একটিতে আছে সরকারের ক্ষমতা। সরকার কী করতে পারে। একজনের সাজা শর্ত ছাড়া সম্পূর্ণটা মওকুফ করতে পারে অথবা শর্ত ছাড়া কিছুটা মওকুফ করতে পারে। আবার শর্তসাপেক্ষে পুরোটা মওকুফ করতে পারে কিংবা কিছুটা মওকুফ করতে পারে বা সাসপেন্ড করতে পারে।
এডভোকেট আনিসুল হক বলেন, উপধারা-২ এ বলা আছে- যে কোর্ট সাজা দিয়েছে সেই কোর্ট সাজা মওকুফ করতে পারে, নাও পারে। উপ-ধারাগুলোতে আরও অনেক কথা বলা আছে। এখানে কিন্তু কোথাও বলা নেই একটা আবেদন যখন নিষ্পত্তি করে ফেলা হয়, সেই আবেদনটি পুনরায় রিকনসিডার (পুনর্বিবেচনা) করতে পারবে। অর্থাৎ নিষ্পত্তি করা আবেদনটি পুনর্বিবেচনা করার কোনো সুযোগ নেই। মন্ত্রী বলেন, ৪০১ এ সরকারের ক্ষমতা। এই ৪০১ এর সংস্কারের ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে ব্যবহার করা হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটি ব্যবহার করে। তাতে অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী থেকে অনুমতি নিতে হয়। এটি প্রয়োগ করার আগেই রুল অব বিজনেস অনুযায়ী আইন মন্ত্রণালয় থেকে মতামত নিতে হয়। এমন একটা বিষয় নিয়ে আমার মতামত দিতে হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মামলার ক্ষেত্রেও মতামত দিতে হয়েছে। ওনার (খালেদা জিয়ার) আত্মীয়স্বজনের পক্ষ থেকে যখন আবেদন করা হলো, তখন তার সাজা স্থগিত করে ওনাকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দিলাম। তার মানে তার পক্ষে যে আবেদনটা ছিল তা নিষ্পত্তি হলো। ওনারা বিদেশে যাওয়ার অনুমতি চেয়েছিলেন। আমরা কিন্তু তার অনুমতি দেইনি। আমরা কিন্তু তাকে দুটি শর্ত দিয়ে মুক্তি দিয়েছি। সেই শর্ত মেনেই তিনি মুক্তি পেয়েছেন। এখন পরের ধাপে তারা বিদেশ যেতে অনুমতি চায়। কিন্তু কথা হলো যে আবেদনটি নিষ্পত্তি করা হলো সেটা পুনর্বিবেচনার ক্ষমতা আইনে আমাদের দেয়া হয়নি। তাহলে ওনাদের কী করতে হবে? সেটা হলো তাদের আবার আবেদন করত হবে। এখন আবার আবেদন করতে হলে আগের আবেদনটি বাতিল করে ওনাকে (খালেদা জিয়া) আবার জেলখানায় গিয়ে আবেদন করতে হবে। এখন এটা তো অলরেডি একবার নিষ্পত্তি হয়েছে। ওনাকে বিদেশ যেতে অনুমতি দেয়ার ক্ষমতা ৪০১ ধারায় উল্লেখ আছে কিন্তু এটা বলা আছে শর্তসাপেক্ষে। কিন্তু ৪০১ ধারার উপধারায় আমাদের পুনর্বিবেচনার কোনো ক্ষমতা দেয়া হয়নি।
এদিকে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল আবেদনের বিষয়ে হাইকোর্টে শুনানির জন্য বেঞ্চ গঠনে এটর্নি জেনারেলকে পরামর্শ দিয়েছেন আইনমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেনেড হামলায় হত্যাচেষ্টার মামলায় উচ্চ আদালতে আসা ডেথ রেফারেন্সের বিষয়ে আমি এটর্নি জেনারেলকে বলেছি, আসামিদের করা আপিলের বিষয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর আদালতের অবকাশের আগেই বেঞ্চ নির্ধারণের জন্য আবেদন করতে।
বিতর্কিত ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একজন আরেকজনকে হেয় করে, অপদস্ত করে ভিডিও, ছবি ও স্ট্যাটাস শেয়ার করে। কাজেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু এ আইনের অপব্যবহার বন্ধে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। গত তিন মাস লক্ষ্য করবেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার অনেকটাই কমে এসেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খালেদা জিয়া

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ