পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রকৃতির অপরূপ রূপবৈচিত্র্যে অনিন্দ্য সুন্দর বান্দরবানকে বলা হয় ‘পাহাড়ি কন্যা’। মেঘ পাহাড়েরর মিলনস্থল বান্দরবানের নীলগিরি-নীলাচল যেন বাংলার দার্জিলিং। পাহাড় ও প্রকৃতি প্রেমীদের মতে, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অন্যতম নান্দনিক পর্যটন স্পটের নাম পার্বত্য বান্দরবান। মেঘলা, নীলাচল, নাফাখুম, দেবতাখুম, কেওক্রাডং, ডিম পাহাড়, স্বর্ণমন্দির, থানচি, চিম্বুক, বগালেক, শৈলপ্রপাত, তিন্দু, মারায়ন তং, নীলগিরিসহ আরো অসংখ্য দর্শনীয় স্থানের এক লীলাভ‚মি বান্দরবান।
করোনা মহামারির কারণে ভ্রমণ পিপাসুরা গত প্রায় ৫ মাস এ জেলার নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেনি। গত ১৯ আগস্ট থেকে খুলেছে সারা দেশের পর্যটন কেন্দ্রের পাশাপাশি বান্দরবানের সকল পর্যটন কেন্দ্র। খুলে দেওয়া হয়েছে হোটেল-মোটেল ও বিভিন্ন গেস্ট হাউস। পর্যটন কেন্দ্র খোলার সংবাদে বান্দরবানে আসতে শুরু করেছে ভ্রমণ পিপাসুরা। প্রথম দিন পর্যটকের সংখ্যা কম দেখা গেলেও শুক্রবার ও শনিবার হলি-ডে থাকায় ভ্রমণ পিপাসুদের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। তবে ব্যবসায়ীরা যে পরিমাণ পর্যটক আসার প্রত্যাশা করেছিল, সেরূপ পর্যটকদের উপস্থিতি নেই বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র ও হোটেল-মোটেলে। এখনো করোনা সংক্রমণের শঙ্কা এবং বর্ষা মৌসুম হওয়ায় বান্দরবানে এখনো পর্যটন ব্যবসা জমে উঠেনি বলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন। তারপরও দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর বান্দরবানে বেড়াতে আসা পর্যটকরা প্রকৃতি ও পাহাড়ের নৈসর্গিক সৌন্দর্য দেখে বিমোহিত।
বান্দরবান মেঘলা পর্যটনকেন্দ্রে বেড়াতে আসা পর্যটক নাছিমা জানান, করোনা আর লকডাউনে ঘরে থাকতে থাকতে অস্বস্তি বোধ করেছিলাম। তখন সকল পর্যটন কেন্দ্র খোলার সংবাদ পেয়ে বান্দরবান ছুটে আসলাম। সেনাবাহিনী পরিচালিত নীলগিরি, জেলা প্রশাসক পরিচালিত নীলাচল, মেঘলা, শৈলপ্রপাতসহ বেশ কয়েকটি পর্যটনকেন্দ্র ভ্রমণ করে আমরা খুবই আনন্দিত। তিনি বলেন, নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে এরই মধ্যে দেশি-বিদেশি পর্যকটদের কাছে বান্দরবান একটি অতি প্রিয় গন্তব্য হতে শুরু করেছে। সবুজের সমারোহে, পাহাড়ের নিস্তব্ধতায় প্রিয়জনদের নিয়ে একান্ত সান্নিধ্যে কয়েকটা দিন স্মরণীয় করতে অনেকেই অতিথি হন বান্দরবানে। অনেকের মতে, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার নান্দনিক পর্যটন স্পটের নাম পার্বত্য বান্দরবান জেলা। বান্দরবানকে বাংলার দার্জিলিং বলা হলে অবশ্যই অত্যুক্তি হবে না।
সিলেট থেকে বান্দরবানের পর্যটনকেন্দ্র নীলাচল এলাকায় বেড়াতে আসা মো. রকিম বলেন, পর্যটনকেন্দ্র খোলার পরপরই বন্ধু আত্মীয় ও পরিবার নিয়ে বান্দরবান চলে আসলাম। ভ্রমণ করে বেশ ভালো লাগছে। প্রকৃতি আর সবুজের অপরূপ সৌন্দর্যে আমরা বিমোহিত। এত অপার দৃশ্য বাংলাদেশের কোথাও নেই। মনে হয়, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বান্দরবানকে সবুজের সমারোহে অতুলনীয় করে সাজিয়েছেন।
পাহাড়ের কোল ঘেষে বয়ে চলা নদী সাঙ্গু, মাতামুহুরী ও বাঁকখালী। পাহাড়ে সবুজের মেলা ও বয়ে চলা পাহাড়ি ঝর্ণা। নৃতাত্তি¡ক ১১টি জাতিগোষ্ঠীর পাহাড়ের গায়ে ছোট ছোট মাচাং ঘরে বসবাস। জুম চাষ, দিন শেষে ঘরে ফেরা, সন্ধ্যায় পাখির কলকাকলি মিলিয়ে রূপকথার কোনো কল্পকাহিনী মনে হলেও এর সবই রয়েছে বান্দরবানে।
বান্দরবানের আবাসিক হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি অমল কান্তি দাশ ও সাধারণত সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন পর পর্যটনকেন্দ্র খোলায় আমরা খুশি। তবে পর্যটনকেন্দ্র ও হোটেল-মোটেল খোলা হলেও পর্যটন ব্যবসায়ীরা যেভাবে প্রচুর পর্যটক আসার কথা চিন্তা করেছিল, সেই পরিমাণ পর্যটক এখনো বান্দরবানে আসেনি। সাধারণত শীত মৌসুমে ভ্রমণ পিপাসুদের উপচেপড়া ভিড় থাকে। এখন বর্ষা মৌসুম ও দীর্ঘ ৫ মাস পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় পর্যটক কম আসাতে আমাদের প্রচুর ক্ষতি হচ্ছে। তারা দেশি-বিদেশি সকল পর্যটকদেরকে বান্দরবানের মোহনীয় সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য স্বাগত জানিয়েছেন।
ভ্রমণে আসা পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে ভ্রমণের অনুরোধ জানিয়েছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়কমন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং এমপি, বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, বান্দরবান সেনাবাহিনীর ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জিয়াউল হক পি এস সি, জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভিন তিবরীজি, পুলিশ সুপার জেরিন আখতারসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা।
এদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে কাজ করছে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা। ট্যুরিস্ট পুলিশ বান্দরবান জোন এর ইনচার্জ মো. আমিনুল হক বলেন, বান্দরবানের পর্যটনকেন্দ্র ও হোটেল-মোটেলে যারা অবস্থান করবে বা করছেন, তাদের অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বদা মনিটরিং চলছে বলে তিনি জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।