Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সার্ক না থাকলে আমাদের বন্ধুবেশী রাষ্ট্র বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করবে নোমান

প্রকাশের সময় : ৪ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : সার্ক নিয়ে আওয়ামী লীগের অবস্থানের সমালোচনা করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, সার্ক হচ্ছে এ অঞ্চলের শান্তিরক্ষা ও প্রতিষ্ঠার অন্যতম সংগঠন। সার্ক না থাকলে আমাদের বন্ধুবেশী রাষ্ট্র বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করবে। এমনকি ভবিষ্যতে আরো যারা বন্ধুবেশে আমাদের সঙ্গে আসতে চায় তারাও চক্রান্ত করবে। সে ইচ্ছা থেকে সার্ককে অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার যে ষড়যন্ত্র, আমরা সেটাকে গ্রহণ করি না। গতকাল সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে হান্নান শাহর স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সার্কের যে গুরুত্ব, সেটা আমরা সবাই অনুভব করি। হঠাৎ করে সার্কের প্রয়োজন নেই, এমন কথা আওয়ামী লীগ ঘরানার সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং আওয়ামী লীগের নেতারা বলতে শুরু করেছেন।
নোমান অভিযোগ করেছেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের লাশ গুম করতে চেয়েছিলেন এইচ এম এরশাদ। মরহুম ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) আ স ম হান্নান শাহ রাঙ্গুনিয়া থেকে জিয়ার লাশ চট্টগ্রাম সেনানিবাসে নিয়ে আসেন।
হান্নান শাহর সঙ্গে প্রথম পরিচয়ের কথা বলতে গিয়ে চট্টগ্রামের প্রভাবশালী নেতা নোমান বলেন, হত্যার পর কিছু বিপথগামী সেনাসদস্য জিয়াউর রহমানকে লুকিয়ে রেখেছিলেন। চট্টগ্রামে অনেক খোঁজাখুঁজির খবর পেলাম, রাঙ্গুনিয়ায় একটি পাহাড়ের তলদেশে তাকে রাখা হয়েছে। আমি এবং বিশিষ্ট শ্রমিকনেতা আবদুল গফুর একটি বেবিট্যাক্সি করে সেখানে গেলাম। দেখি, ধানক্ষেতের ওপর দিয়ে কয়েকজন ত্রিপল নিয়ে একটি লাশ নিয়ে আসছেন। দৌড়ে গিয়ে লাশের সামনে গেলাম। একজন আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, হু আর ইউ। বললাম, আমি আব্দুল্লাহ আল নোমান। পরে জানলাম তিনি হান্নান শাহ।
আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, তখনো হান্নান শাহর অন্তরে জিয়াউর রহমানের প্রতি যে ভালোবাসা, আনুগত্য এবং তার সম্পর্কে সেটা ছিল বলেই জিয়ার লাশ আনতে গিয়েছিলেন তিনি। এ দায়িত্ব হান্নান শাহ পালন না করলেও পারতেন। কারণ, এরশাদ তাকে বলেননি, এরশাদ তো লাশ গুম করে ফেলতে চেয়েছেন। হান্নান শাহ সে সময় চট্টগ্রামে মিলিটারি একাডেমির পরিচালক ছিলেন। সে সুবাদে তিনি জিয়ার লাশ প্রথম সেনানিবাসে নিয়ে আসেন। পরবর্তী সময়ে তাকে ফোর্স রিটায়ারমেন্টে পাঠানো হলো।
হান্নান শাহকে একজন সাহসী নেতা উল্লেখ করে আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, তার মনের মধ্যে যা কিছু, তা প্রকাশ করার ক্ষেত্রে তার কোনো ভয়, দৈন্য ছিল না। সেদিনও তিনি ক্ষমতাসীন সরকারের কর্তৃত্ববাদী আচরণ, গুম খুন, জঙ্গিবাদসহ বিভিন্ন পর্যায়ে অত্যাচার-নির্যাতন সম্পর্কে বলিষ্ঠভাবে কথা বলেছেন। এটা কিন্তু সবাই বলেন না।
সবার সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ প্রসঙ্গে আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে যে কথা বলেছেন, আমার অত্যন্ত লজ্জা হয় এ কথাটা আবার পুনর্ব্যক্ত করতে। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) এটাকে হাসিঠাট্টার মধ্যে ফেলে দিয়ে জবাব দিয়েছেন।
খ্যাতিমান এই শ্রমিক নেতা নোমান বলেন, আমি আজ দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, বিএনপি ১ কোটি ৩৫ লাখ ভুয়া ভোটার বানিয়েছেÑ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নেতারা যে কথা বলেন, তা সঠিক নয়। আমি দায়িত্বশীলতার সঙ্গেই এ কথা বলছি।
তিনি বলেন, আমার ভোটার আইডি করতে গিয়ে এ প্রকল্পের পরিচালক সাখাওয়াত হোসেনের কাছে বিষয়টি জানতে চেয়েছিলাম। বলেছিলাম, বিএনপি নিজের ভোটটাও নিজে সব সময় নিশ্চিত করতে পারে না। সেখানে ১ কোটি ৩৫ লাখ ভুয়া ভোটার সুন্দরভাবে করে ফেলল, এটা কিভাবে হলো?’ সাখাওয়াত হোসেনকে উদ্ধৃত করে ওেনামান বলেন, তিনি তাকে বলেছেন, আসলে বিএনপি বা কেউ ভুয়া ভোটার বানায়নি। এ ব্যাপারে তারা একটি সার্ভে করেছেন, সেখানে দেখা গেছে, এক ব্যক্তি দু-তিন জায়গায় ভোটার হওয়ায় এই ভোট বৃদ্ধি পেয়েছেÑ এটাই হচ্ছে মূল কথা।
বিএনপির এই নেতা বলেন, বর্তমান সরকারের কাছে আমরা নির্বাচন চাই, একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন চাই। সেটার জন্য একমাত্র আলোচনা কাজ দেবে না। প্রয়োজন আন্দোলন-সংগ্রামের, প্রয়োজন সামনে এগিয়ে গিয়ে বুকের রক্ত দেয়ার। সেই সাহস হান্নান শাহর ছিল। তাকে হারিয়ে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।
জাতীয়তাবাদী দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন নামের একটি সংগঠন এ স্মরণসভার আয়োজন করে। কে এম রকিবুল ইসলামের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, বিএনপির নেতা শাহ মো: আবু জাফর, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সার্ক না থাকলে আমাদের বন্ধুবেশী রাষ্ট্র বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করবে নোমান
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ