পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। ভারত থেকে আসা ঢলে নদ- নদীর পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি নদীভাঙন আরো তীব্র হয়েছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে ১০ জেলা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি জীবনযাপন করছে। নদীভঙনে বসতভিটা, ফল-ফসলি জমিজমা হারিয়ে রাতারাতি নিঃস্ব হচ্ছে অনেকেই। নদীপাড়ের বাসিন্দাদের দিন কাটছে ভাঙন আতঙ্কে, অনিশ্চয়তায়। দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-মধ্যাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল থেকে ভাটি ও মোহনায় ভোলা-চাঁদপুর-লক্ষীপুর পর্যন্ত নদীভাঙন হচ্ছে ব্যাপক আকারে। মানিকগঞ্জ. ফরিদপুর ও শরীয়তপুরে নদীভাঙনে ঘরবাড়ি, জমিজমা হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে হাজার হাজার পরিবার। স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, মসজিদসহ অনেক প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। গতকাল পদ্মা, যমুনা, ধলেশ^রী, আত্রাই ও গড়াই এই পাঁচটি নদ-নদীর পানি ৬টি পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তাছাড়া বিভিন্ন পয়েন্টে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার কাছাকাছি রয়েছে। বন্যা ও নদীভাঙন নিয়ে আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো রিপোর্ট নিচে তুলে ধরা হলো।
চট্টগ্রাম থেকে শফিউল আলম জানান, ভারতে অতিবর্ষণে উজানের ঢল অব্যাহত রয়েছে। ঢলের তোড়ে দেশের প্রধান নদ-নদীসমূহে পানি বেড়েই চলেছে। তাছাড়া উজানে গজলডোবা, ফারাক্কাসহ সব বাঁধ-ব্যারাজ খুলে পানি ছেড়ে দিয়েছে ভারত। এতে করে অনেক এলাকায় বন্যার আরো অবনতি ঘটছে। নদীভাঙনও বিস্তৃত হচ্ছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাভাস উল্লেখ করে গতকাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং এর সংলগ্ন ভারতের হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয় প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে এ সময়ে উক্ত অঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র এবং আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীসমূহের পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।
গত ২৪ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ, কোথাও কোথাও অতিবৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে চেরাপুঞ্জিতে ২৭২ মিলিমিটার, গ্যাংটকে ৫৩ মি.মি., জলপাইগুড়িতে ৪৪ মি.মি.সহ বিভিন্ন স্থানে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে দেশের অভ্যন্তরে গত ২৪ ঘণ্টায় লালাখালে ৯৭, কানাইঘাটে ৬৬, পাটেশ্বরীতে ৬২, লরেরগড়ে ৬০, জাফলংয়ে ৪৮ মি.মি.সহ বিভিন্ন স্থানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পাউবো।
পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, প্রধান নদ-নদীসমূহের ১০৯টি পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে গতকাল ৫৮টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি, ৪৭টিতে হ্রাস ও ৬টি স্থানে পানি অপরিবর্তিত রয়েছে। এর মধ্যে ৫টি নদ-নদী ৬টি পয়েন্টে বিপদসীমার ঊর্ধ্বে প্রবাহিত হচ্ছে। রোববার নদ-নদীর ৫৮টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি, ৪৫টিতে হ্রাস, ৬টি স্থানে অপরিবর্তিত এবং এর মধ্যে ৫টি নদ-নদী ৭টি স্থানে বিপদসীমার ঊর্ধ্বে প্রবাহিত হয়। শনিবার ৬৪টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি, ৪২টিতে হ্রাস, দু’টি স্থানে পানি অপরিবর্তিত ও ৫টি পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। শুক্রবার ৬৩টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি, ৪২টিতে হ্রাস, ৩টিতে অপরিবর্তিত ও ৩টি স্থানে বিপদসীমার ঊর্ধ্বে প্রবাহিত হয়।
প্রধান নদ-নদীসমূহের প্রবাহ পরিস্থিতি ও পূর্বাভাসে গতকাল পাউবো জানায়, নদের পানি স্থিতিশীল রয়েছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে। গঙ্গা নদীর পানি হ্রাস পাচ্ছে, পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীসমূহের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় পাবনা, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও শরীয়তপুর জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা নদী ভাগ্যকূল পয়েন্টে এবং শীতলক্ষ্যা নদী নারায়ণগঞ্জে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।
প্রধান নদ-নদীর প্রবাহের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে গতকাল বিকাল পর্যন্ত তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী, পদ্মা নদীতে পাউবোর ৮টি পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দে পানি স্থিতিশীল রয়েছে এবং বিপদসীমার ৫১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকালের দিকে পদ্মার সুরেশ্বর পয়েন্টে বিপদসীমার ১৬ সে.মি. ঊর্ধ্বে থাকলেও বিকাল নাগাদ সেখানে পানি হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার ১৬ সে.মি. নিচে নেমেছে। যমুনা নদীর পানি কিছুটা হ্রাস পেয়ে মথুরা ও আরিচা পয়েন্টে বিপদসীমার যথাক্রমে ৯ ও ৩ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
উত্তর-মধ্যাঞ্চলে আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বাঘাবাড়ীতে বিপদসীমার ১৮ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধলেশ্বরী নদীর পানি বেড়ে এলাসিনে মাত্র ৯ সে.মি. ঊর্ধ্বে প্রবাহিত হচ্ছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গড়াই নদী মাগুরা জেলার কামারখালী পয়েন্টে বিপদসীমার ১৩ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সাতক্ষীরার কলারোয়ায় বেতনা নদী বিপদসীমার ২১ সে.মি. ঊর্ধ্বে রয়েছে।
কুষ্টিয়া থেকে আলী আহসান পান্না জানান, জেলার বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে। পদ্মা-গড়াইয়ের পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। বৃদ্ধি পেয়েছে নদীভাঙন। ভাঙনের ২৫টি স্পট শনাক্ত সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, পদ্মার পানি বৃদ্ধির এই ধারা আগামী দু-একদিন অব্যাহত থাকতে পারে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আব্দুল হামিদ বলেন, পদ্মা ও গড়াইয়ের সবক’টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বিশেষ নজর রেখে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যেখানেই সমস্যা সৃষ্টি হবে, গুরুত্ব বিবেচনায় সেখানেই প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে। তবে এ ক্ষেত্রে জরুরি কাজের পরিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সামগ্রীর মজুদ ইতোমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে। আমরা বিভিন্ন সোর্সকে কাজে লাগিয়ে চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করছি।
কুড়িগ্রাম থেকে শফিকুল ইসলাম বেবু জানান, উজানের ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলাসহ কুড়িগ্রামে ১৬টি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গতকাল সকালে ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার কমে গিয়ে বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বেলা ৩টার দিকে ১০ সেন্টিমিটার কমে গিয়ে এখন ৮ সেন্টিমিটার বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়ার ফলে ধরলা অববাহিকায় প্রায় সহ¯্রাধিক বাড়িঘরে পানি উঠেছে। নিমজ্জিত হয়েছে সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর রোপা আমন। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, গতকাল সোমবার সকালে তিস্তা নদীর পানি ব্রিজ পয়েন্টে ১ দশমিক ১৬ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপূত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৬২ সেন্টিমিটার এবং নুনখাওয়া পয়েন্টে ২ দশমিক ২৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উলিপুরে তিস্তা নদীর অব্যাহত পানি বৃদ্ধিতে উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের অর্জুন ও থেতরাই ইউনিয়নের গোড়াইপিয়ার, দালালপাড়া, হোকডাঙ্গা ও ডাক্তারপাড়া গ্রামে তীব্র নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে তিস্তার ভাঙনে শতাধিক পরিবারের বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে ৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ২টি কমিউনিটি ক্লিনিক, বাঁধের রাস্তাসহ ৭টি গ্রামের কয়েকশ’ একর আবাদি জমি।
মানিকগঞ্জ থেকে শাহীন তারেক জানান, জেলার আরিচা পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার তিন সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যমুনার পানি বাড়ার ফলে জেলার অভ্যন্তরীণ পদ্মা, কালীগঙ্গা, ধলেশ্বরী ও ইছামতিসহ সবগুলো নদীতেই পানি বাড়তে শুরু করেছে। এতে নদী-তীরবর্তী এলাকার নিম্নাঞ্চলসহ বিস্তীর্ণ এলাকার রাস্তাঘাট ও ফসলি জমিতে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন।
গতকাল পদ্মা নদী-তীরবর্তী হরিরামপুর উপজেলার আলখিরচর এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। চলাচলের সড়কটিও তলিয়ে গেছে। হাঁটু পানি ভেঙে চলাচল করতে দেখা গেছে ওই এলাকার মানুষকে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নদী তীরবর্তী এলাকায় শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। দৌলতপুর উপজেলার বাঁচামারা, বাঘুটিয়া ও চরকাটারি; শিবালয় উপজেলায় অন্বয়পুর ও কাশাদহ, হরিরামপুর উপজেলার ধ‚লশুরা ও কাঞ্চনপুর, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কুশেরচর ও সিঙ্গাইর উপজেলার জামশা এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অসংখ্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বাড়ি-ঘর, আবাদি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। ভাঙনের মুখে রয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা।
শরীয়তপুর থেকে মো. হাবিবুর রহমান হাবীব জানান, পদ্মা নদীর পানি শরীয়তপুরের সুরেশ্বর পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল সকালে ওই পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপদসীমার ৩২ সেন্টিমিটার উপরে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি বাড়ার কারণে নড়িয়ার ঈশ্বরকাঠি, শেহের আলী মাদবরকান্দি ও চেরাগ আলী ব্যাপারিকান্দি এলাকায় নদীর তীর উপচে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। ওই তিনটি স্থানে নড়িয়া-জাজিরা পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা প্রকল্পের ব্লক নির্মাণের ইয়ার্ড প্লাবিত হয়েছে। এ কারণে সেখানে কর্মরত তিন শতাধিক শ্রমিককে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। পানি বৃদ্ধির কারণে ভাঙন ঠেকাতে জেলার পদ্মা, মেঘনা ও কীর্তিনাশা নদীর ১০০ স্থানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীতে স্রোত বেড়েছে। স্রোতের কারণে জাজিরার পদ্মা নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় ও কীর্তিনাশার বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন রোধে জাজিরার ৩৭টি স্থানে, নড়িয়ার ১২টি স্থানে, ভেদরগঞ্জের ২২টি স্থানে, গোসাইরহাটের ১৪টি স্থানে ও সদর উপজেলার কীর্তিনাশা নদীর ১৫টি স্থানে বালুভর্তি জিওব্যাগ ও জিও টিউব ফেলা হচ্ছে। ওই স্থানগুলোতে জিওব্যাগ ও জিওটিউব ফেলতে ৩১ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয় করছে পাউবো।
এ ব্যাপারে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও শরীয়তপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেন, আগামী ২৬ আগস্ট পর্যন্ত পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। পানি বৃদ্ধি পেলে ভাঙন হয়, সেই ভাঙন মোকাবেলা করার জন্য মাঠ পর্যায়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে। জরুরি ভিত্তিতে বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে। আর পানি বাড়ার কারণে নদীর তীরবর্তী নিচু এলাকার মানুষের যদি কোনো ক্ষতি ও দুর্ভোগ হয় তাহলে তাদের খাদ্য সহায়তাসহ অন্যান্য সহায়তা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন পাশে থাকবে।
ফরিদপুর থেকে আনোয়ার জানান, এ জেলায় নদীভাঙনের শিকার বহু পরিবার। বন্যার পানিতে ডুবছে হাজার হাজার মানুষ। একদিকে ভাঙনে অনেকের ভিটেবাড়ি শেষ অপর দিকে ফসলি জমি সব পানির নিচে। ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল ও ডিক্রীরচর এলাকা, সিএন্ডবি ঘাট, মান্দারতলা, ভুঁইয়াবাড়ীরঘাট এলাকায় নদীভাঙন তীব্র রূপ ধারণ করেছে। অপরদিকে, চরভদ্রাসন উপজেলার চরহাজীগঞ্জ, হরিরামপুর, জাকেরের হুরা, চর হরিরামপুর এলাকায় চলছে তীব্র ভাঙন। গত কয়েক দিনে এ এলাকার কমপক্ষে এক একর ফসলি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে বলে এলাকাবাসী জানান। এছাড়াও সদরপুর উপজেলার চরনাসিরপুর, দিয়ারার, দিয়ারার নারেকলবাড়িয়া ও চরমানাইর ইউনিয়নের পদ্মার চর সংলগ্ন এলাকায় নতুন করে ভাঙন চলছে। পাশাপাশি পদ্মায় পানি বাড়ার কারণে বহু ফসলি জমি তলিয়ে গেছে।
ভাঙন ঠেকাতে পাউবো কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করলেও কোনো কাজে আসছে না। কারণ পদ্মার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে পানির স্রোত প্রচন্ড বেড়ে গেছে। পদ্মার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় ভাঙন আরো তীব্রতর হচ্ছে। প্রচন্ড ভাঙনের মুখে সদর থানার নর্থচ্যানেল এলাকার মুন্সিডাঙ্গী, ভুঁইয়াডাঙ্গী এবং ফরিদপুর-গোয়ালন্দের সীমানা পয়েন্টে গত ৩ মাস যাবৎ নদীভাঙন অব্যাহত আছে। ভাঙনের কবলে পড়ে ঐ এলাকার কমপক্ষে ৭০ থেকে ৮০টি বাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। প্রচন্ড হুমকির মুখে আছে গোলডাঙ্গী ব্রিজ, বেড়িবাঁধ, স্কুল, মাদ্রাসা ও মসজিদ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।