পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : ২০১০ থেকে আমরা বাংলাদেশ এবং মার্কিন সেনাবাহিনীর মধ্যে বেশকিছু দ্বিপাক্ষিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মূল লক্ষ্য ছিল দুর্যোগকালীন সমস্যা মোকাবেলায় সক্ষমতা অর্জন। সেনাবাহিনীর পাশাপাশি এসব প্রশিক্ষণে বাংলাদেশের ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্টরা অংশ নেয়। এবারও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর যৌথ উদ্যোগে গত ২৬-২৮ সেপ্টেম্বর এবং ৩-৬ অক্টোবর তারিখে প্রায় ৭৫টি সংস্থা থেকে হতে আনুমানিক এক হাজার জনের অংশগ্রহণে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে ডিআরইই-২০১৬ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গেন্ডারিয়ার ধূপখোলা মাঠে এবং উত্তরার সেক্টর-১৮ তে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ভূমিকম্প-পরবর্তী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত মাঠ পর্যায়ের অনুশীলন অনুষ্ঠিত হবে। যার মূল বিষয় হলো, বাংলাদেশে ভূমিকম্প কতটা সুষ্ঠুভাবে মোকাবিলা করা যায় তার সক্ষমতা অর্জন করা।
এ উপলক্ষে ঢাকা এসেছেন প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর কমান্ডিং জেনারেল জেনারেল রবার্ট বি ব্রাউন। ডিআরইই নিয়ে তার বক্তব্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঢাকাস্থ দূতাবাস থেকে সংবাদমাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। তা নি¤েœ তুলে ধরা হলো :
আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ঢাকা সফরকালে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের অংশীদারিত্বের শক্তি নিয়ে কথা বলেন। তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমানে আমাদের দুই দেশ স্বাস্থ্যসেবা থেকে শিক্ষা, আঞ্চলিক থেকে বৈশ্বিক নিরাপত্তাসহ সব বিষয়ে একসাথে কাজ করছে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর কমান্ডিং জেনারেল হিসেবে আমি আমাদের অংশীদারিত্বের আরো একটি দিক উল্লেখ করতে চাই, যাতে দেখা যায় প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা এবং মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য কিভাবে আমরা দুই দেশ একসাথে কাজ করছি ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০১০ থেকে আমরা অনেকগুলো বার্ষিক দ্বিপাক্ষিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনা করি যার মূল বিষয় ছিল বাংলাদেশে ভূমিকম্প কতটা সুষ্ঠুভাবে মোকাবিলা করা যায়। প্রতি বছর প্রশিক্ষণ কর্মসূচির গতিশীলতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ব্যাপ্তি বেড়েছে। যার ফলে আমাদের একসাথে কাজ করার ক্ষেত্রে সমন্বয়ের সক্ষমতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রথমবার আমরা যখন এই প্রশিক্ষণটি পরিচালনা করেছিলাম, আমরা শুধুমাত্র চিন্তা-ভাবনাগুলো আদান-প্রদান করেছিলাম কিভাবে সঙ্কট মোকাবিলা করা যায় এবং দুর্যোগ প্রতিক্রিয়ার শব্দকোষের ওপর ধারণা লাভ করেছিলাম। এটা প্রথম অবস্থায় একটি চমৎকার পদক্ষেপ ছিল এবং অংশগ্রহণ এখন বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রথমবারের সাথে পরবর্তীতে আমরা আরো কিছু আলোচনা আর প্রশিক্ষণ যোগ করি, যেমনÑ ধ্বংসাবশেষের নিচে আটকে পড়া মানুষের জীবন কিভাবে খুঁজে বের করা যায় এবং সেই সাথে উদ্ধারকাজ পরিচালনা করা যায়। এছাড়া যেকোনো বড় ধরনের দুর্যোগপ্রবণ ঘটনার সময় কিভাবে যৌথভাবে আন্তঃসংস্থাগুলোর ভেতর যোগাযোগ কেন্দ্র স্থাপন করা যায় আমরা সেই প্রক্রিয়া নিয়েও কাজ করেছি।
এই বছরের ডিজাস্টার রেসপন্স এক্সারসাইজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ (ডিআরইই) ঢাকায় গত ২৬ সেপ্টেম্বর শুরু হয়েছে। শেষ হবে ৬ অক্টোবর। যেখানে আবারো দুই পক্ষের সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তারাও যোগ দিচ্ছেন। ডিআরইই-এর প্রথম পর্বটি তাত্ত্বিক; নেতৃত্ব পর্যায়ে অংশগ্রণকারীরা এ পর্বে মতবিনিময় করবেন জনবহুল এলাকায় নিজেদের মধ্যে কিভাবে মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর এবং অন্য ইউনিটদের সাথে কাজগুলো সমন্বয় করে বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে কিভাবে কোনো ঘনজনবসতিপূর্ণ এলাকাকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচানো যায়। এই ইতিবাচক সংলাপের ওপর ভিত্তি করে এরপর মাঠপর্যায়ের অনুশীলন পর্বে প্রাথমিক উদ্ধারকর্মীরা নিজেদের দক্ষতার পরীক্ষা দেবেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ, যা আমাদের মোকাবিলা করতে হতে পারে তা হলো কঠিন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় মানুষের জীবন রক্ষা করা।
এই বছরে ২৫০ জন অংশগ্রহণকারী ‘টেবল-টপ’ অনুশীলনে অংশ নিচ্ছেন এবং সর্বমোট ৬৮০ অংশগ্রহণকারী মাঠ পর্যায়ের অনুশীলনে অংশ নিয়েছেন। প্রায় ২৫ জন অংশগ্রহণকারী থাকবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলে যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী ও পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিনিধিদল থাকবেন। বাংলাদেশ এই অনুশীলন পর্যবেক্ষণের জন্য অনেকগুলো দেশকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে এবং আমরা আশা করছি কোনো বড় ধরনের প্রয়োজনের মুহূর্তে এর ফলে এ অঞ্চলের সব দেশকে সহযোগিতা করার জন্য উৎসাহিত করবে। মূল কথা হলো দুর্যোগ মোকাবিলা সহজ নয়, এখানে ভালো করতে হলে অংশগ্রহণকারী সকলের জন্য প্রশিক্ষণ অবশ্যই বাস্তবমুখী ও কঠোর হতে হবে। জীবনের ঝুঁকির মুখে থাকা মানুষের সহায়তা করার জন্য বিভিন্ন দেশের সরকার যেন সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে সে জন্য সরকারগুলোর অবশ্য কর্তব্য তাদের ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া এবং পদ্ধতির উন্নয়নের মাধ্যমে মানুষের সহায়তা করা যখন তা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।
ডিআরইই ইউএসএআরপিএসি-এর অন্তর্গত প্যাসিফিক রেজিলিয়েন্সের অনুশীলনের অংশ। প্যাসিফিক রেজিলিয়েন্স হলো ইন্দো-এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের প্রধান অনুশীলন ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি যা ‘সামগ্রিক সরকার’-এর কৌশলের ভিত্তিতে সামরিক ও বেসামরিক সংঠনগুলোর অংশগ্রহণের মাধ্যমে পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়নে একসাথে কাজ করা ও প্রস্তুতিগ্রহণের জন্য তৈরি করা হয়েছে। প্রশিক্ষণকালীন আমরা পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে চিকিৎসা, প্রকৌশল, মানবিক সহায়তা, দুর্যোগকালীন ত্রাণ এবং অন্যান্য সম্পদের ব্যবহার করি যাতে করে ইন্দো-এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রভাব ফেলতে পারে এমন জরুরি পরিস্থিতিতে আমাদের সরঞ্জামাদি ও জনসম্পদকে কাজে লাগাতে পারি। প্যাসিফিক রেজিলিয়েন্স সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের দুর্যোগে সাড়া দেয়া ও মোকাবিলার সামর্থ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে মানবিক সহায়তা বা দুর্যোগকালীন ত্রাণ কার্যক্রমের সেরা চর্চা ও শিক্ষণীয় বিষয়গুলোর ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি তার বাংলাদেশ সফরে যেমনটি বলেছিলেন যে, আমাদের দুই মহান জাতির মধ্যে সম্পর্ক তৈরি ও শক্তিশালী করতে আমরা কঠোর পরিশ্রম করে যাব। ডিআরইই-কে আমরা দেখি আমাদের উভয় দেশের পরবর্তী দুর্যোগের জন্য অধিকতর প্রস্তুতি গ্রহণ এবং বাংলাদেশের সাথে আমাদের দীর্ঘদিনের অংশীদারিত্বের অংশ হিসেবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।