পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো : প্রবীণ আলেমেদ্বীন আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেছেন, সর্বাবস্থায় আলেম সমাজের ঐক্যকে আরো মজবুত করার প্রতি যতœবান হতে হবে। ছোটখাটো মতভেদ নিয়ে কেউ কারো পেছনে কটূক্তিমূলক কথা বলবেন না। আমাদের ঐক্যবদ্ধ অবস্থানকে বৃহৎ পরিসরে দৃঢ় করতে হবে। যারা বুঝতে চাইবেন না তাদেরকে বুঝানোর জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা দরকার।
গতকাল (সোমবার) বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকসহ দেশের অন্যান্য আঞ্চলিক কওমি বোর্ডসমূহের প্রতিনিধি বৈঠকে তিনি একথা বলেন।
দারুল উলুম হাটহাজারী মাদরাসায় মহাপরিচালকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বেফাক, হবিগঞ্জ দ্বীনি শিক্ষাবোর্ড, ইত্তেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া মুন্সীগঞ্জ, ইত্তেহাদুল ওলামা-ই-মাদারিসিল কওমিয়া ভোলা, তানযীমুল মাদারিস ফেনী, তালীমী বোর্ড মাদানী নগর, এদারায়ে তালিমিয়া বি.বাড়ীয়া ও বৃহত্তর চট্টগ্রাম মহিলা মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড সভাপতি ও প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন। বৈঠকে দাওরায়ে হাদীসের সনদের মানসহ কওমি মাদরাসার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আল্লামা শাহ আহমদ শফীর লিখিত বক্তব্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছানোর জন্য ৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল গঠিত হয়।
বৈঠকে বেফাক সভাপতি আল্লামা আহমদ শফী বলেন, কওমী মাদরাসাসমূহ দারুল উলূম দেওবন্দের নীতি-আদর্শে পরিচালিত হয়। সনদের ইস্যুসহ যে কোন বিষয়ে দেওবন্দের নীতি-আদর্শের পরিপন্থী কোন সিদ্ধান্তের সুযোগ নেই। তিনি বলেন, ভারতের দারুল উলূম দেওবন্দ যেভাবে পরিচালিত হয় ও সনদের বিষয়ে দেওবন্দের নীতিমালা যেমন, আমরা সেভাবে চলতে চাই। দেওবন্দ সে দেশের সরকারের সাথে কোনরূপ নিয়ন্ত্রণমূলক ও দাফতরিক সম্পর্ক ছাড়াই সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে তাদের শিক্ষাক্রমসহ সকল কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ভারত সরকার স্বতঃস্ফূর্তভাবে দেওবন্দসহ অন্যান্য কওমি মাদরাসার সনদকে বিশেষ মর্যাদা দিয়ে থাকে। ভারতের কওমি মাদরাসা ছাত্ররা আর্ধেক ভাড়া দিয়ে যাতায়াতসহ সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য প্রদেয় সকল সুবিধা ভোগ করছেন। এ পর্যায়ে আমাদের সরকারের কাছে জিজ্ঞাসা, বৃহৎ মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশের কওমি মাদরাসা শিক্ষক ও ছাত্রদের জন্য ন্যূনতম ভারত সরকারের মতো মর্যাদা ও সুবিধা দিচ্ছেন কি?
আল্লামা শফী বলেন, বেফাকসহ দেশের অন্যান্য কওমি বোর্ড ও বড় বড় মাদরাসা দাওরায়ে হাদীস উত্তীর্ণ ছাত্রদেরকে সনদ দিয়ে থাকে। এসব সনদকে দারুল উলূম দেওবন্দের মতো ‘মান’ দেয়ার প্রশ্নে কওমি নীতি-আদর্শ শতভাগ অক্ষুণœ রেখে সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নেয়ার লক্ষ্যে আগামী ১৭ অক্টোবর ঢাকায় জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলন ডাকা হয়েছে। তিনি বলেন, ভারতের দারুল উলূম দেওবন্দের মতো আমাদের সনদের মান দিতে সরকার রাজি না হলে ইংরেজ শাসনামল থেকে বিগত দু’শ বছরেরও অধিক সময়কাল কওমি মাদরাসাসমূহ জনগণের সাহয্য-সহযোগিতা ও সমর্থন নিয়ে যেভাবে চলে আসছে সেভাবে চলবে।
বৈঠকে বক্তব্য রাখেন বেফাক সহ-সভাপতি আল্লামা আশরাফ আলী, আল্লামা তফাজ্জুল হক হবিগঞ্জী, আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরী, আল্লামা আনওয়ার শাহ, মাওলানা মুফতী ওয়াক্কাস, মহাসচিব মাওলানা আব্দুল জাব্বার জাহানাবাদী, মাওলানা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস ফরিদাবাদ, মাওলানা হাফেজ নূরুল ইসলাম, মাওলানা আনাস, মুফতী হাবীবুর রহমান, মুফতী ফয়জুল্লাহ, মুফতী মাহফুজুল হক, মাওলানা সাজেদুর রহমান প্রমুখ।
বৈঠকে অনুপস্থিত কয়েকটি বোর্ড নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ করে আলোচনার জন্য ৯ সদস্যের একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠিত হয়। দাওরায়ে হাদীসের সনদের মানসহ কওমি মাদরাসার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আল্লামা শাহ আহমদ শফীর লিখিত বক্তব্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তরের জন্য ৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল নির্ধারণ করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।