পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
সারা দেশে আড়াই লাখের বেশি ভ্যাট নিবন্ধিত দোকান রয়েছে। এর মধ্যে ভ্যাট মেশিন বসেছে মাত্র তিন হাজার ৩৯৩টি প্রতিষ্ঠানে। মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) আদায়ে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) বসানোর কাজে কেবলই পিছিয়ে পড়ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর হওয়ার পর দুই বছর পার হলেও কাঙ্খিত হারে ইএফডি বা ভ্যাট মেশিন বসাতে পারছেন না ভ্যাট কর্মকর্তারা। গত দুই বছরে কোনোবারই তাদের ভ্যাট মেশিন বসানোর লক্ষ্য অর্জিত হয়নি।
২০১৯-২০ অর্থবছরে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ১০ হাজার দোকানে ইএফডি বা ভ্যাট যন্ত্র বসানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল এনবিআর। কিন্তু সেবার ভ্যাট মেশিন আমদানি করা যায়নি বলে একটাও বসাতে পারেননি ভ্যাট কর্মকর্তারা। পরবর্তী ২০২০-২১ অর্থবছরেও ১০ হাজার মেশিন বসানোর লক্ষ্য ঠিক করা হয়। কিন্তু করোনা সংক্রমণনসহ নানা কারণে গত জুন মাস পর্যন্ত মাত্র তিন হাজার ৩৯৩টি দোকানে ভ্যাটের মেশিন বসেছে, যা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৩০ শতাংশের সামান্য বেশি। এমন বাস্তবতায় চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরেও ১০ হাজার ইএফডি মেশিন বসানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
২০১৯ সালে ভ্যাট আইন চালুর সময় ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিনা মূল্যে এক লাখ ইএফডি মেশিন বিতরণের ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। দেশে বর্তমানে আড়াই লাখের বেশি প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট নিবন্ধন আছে। অথচ দুই বছরে মাত্র সাড়ে তিন হাজারের মতো প্রতিষ্ঠানে ভ্যাট মেশিন বসানো সম্ভব হয়েছে। এ ছাড়া বড় বড় কিছু প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব উদ্যোগে পয়েন্ট অব সেল (পিওএস) মেশিন বসানো আছে। সেই হিসাবে, দেড় শতাংশ প্রতিষ্ঠানে ভ্যাট মেশিন বসেছে। বর্তমানে ২৪ ধরনের ব্যবসায়ে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে হিসাব রাখা বাধ্যতামূলক, যাদের বার্ষিক টার্নওভার বা মোট লেনদেনের পরিমাণ পাঁচ কোটি টাকার বেশি। ফলে অধিকাংশ ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানকে ইএফডি কিংবা স্বয়ংক্রিয় হিসাব পদ্ধতি রাখতে হবে।
এদিকে ভ্যাট মেশিন বসানো নিয়ে ব্যবসায়ীদের কিছু আপত্তি আছে। তারা বলছেন, একটি বিপণিবিতানে ১০০ দোকান থাকলে মাত্র ১০টি দোকানে ভ্যাট কর্মকর্তারা ইএফডি মেশিন বসান। ফলে যেসব দোকানে ইএফডি মেশিন বসানো হয়, সেসব দোকানে ভ্যাটসহ পণ্যের দাম বেশি পড়ে। যে কারণে ক্রেতারা ওই সব দোকান এড়িয়ে চলেন। সে জন্য ব্যবসায়ীরা চান, একটি এলাকার বা বিপণিবিতানের সব দোকানে একসঙ্গে ইএফডি মেশিন বসানো হোক।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, একটি বিপণিবিতানে ৫০০ দোকান আছে। ভ্যাট কর্মকর্তারা সরেজমিনে গিয়ে মাত্র ১০টি প্রতিষ্ঠানে ইএফডি মেশিন বসান। ফলে ওই ১০টি দোকানে ভ্যাট আদায় হয়। কিন্তু ওই সব দোকানে ক্রেতারা যেতে চান না। কারণ, বাকি দোকানগুলো ভ্যাট ছাড়া পণ্য বিক্রি করে।
এ প্রসঙ্গে এনবিআরের সদস্য (ভ্যাটনীতি) আবদুল মান্নান শিকদার বলেন, এটি কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। ভ্যাটের মেশিন না থাকলে ভ্যাটের চালান কাটা যাবে না, আইন তা বলে না। এর মানে দাঁড়াল, একশ্রেণির ব্যবসায়ী ভ্যাটের আইন পরিপালন করছেন না। আবদুল মান্নান শিকদার বলেন, করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার গত এক বছরে বিভিন্ন সময়ে বিধিনিষেধ দিয়েছে। তখন দোকানপাট বন্ধ ছিল। তাই লক্ষ্য অনুয়ায়ী ইএফডি মেশিন বসানো সম্ভব হয়নি। আশা করি, চলতি অর্থবছরে ১০ হাজার মেশিন বসাতে পারব। যারা মেশিন সরবরাহ করবে, তাদের দিক থেকে মেশিন আমদানিতে কোনো সমস্যা নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।