পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
আড়াইহাজার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে জাপানের ১০০টি প্রতিষ্ঠান ১০০ কোটি মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ করবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি। শনিবার (২১ আগস্ট) রাজধানীর পান্থপথে জেএমআই গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ডিএনএ সল্যুশন লিমিটেডে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেয়া শেষে গণমাধ্যমকে একথা জানান তিনি।
এসময় একই ভবনে থাকা জাপানের বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান নিপ্রো করপোরেশন এবং বাংলাদেশের জেএমআইয়ের যৌথ অংশীদারের প্রতিষ্ঠান নিপ্রো-জেএমআই কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টারও পরিদর্শন করেন জাপানের রাষ্ট্রদূত।
পরিদর্শন শেষে এক প্রশ্নের জবাবে ইতো নাওকি জানান, গত দশ বছরে নিপ্রো করপোরেশন বাংলাদেশের জেএমআই গ্রুপের সাথে মিলে ১০০ মিলিয়ন ইউএস ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করেছে, যা অত্যন্ত আনন্দদায়ক। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যতো বাড়বে, জাপানি অর্থায়নও ততো বাড়বে। বাংলাদেশ সরকার ঢাকার পাশেই আড়াইহাজারে জাপানের জন্য নিবেদিত অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণ করছে। সেখানে অনেক জাপানি কোম্পানি আসবে। প্রাথমিকভাবে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ১০০টি জাপানি কোম্পানির ১ বিলিয়ন ইউএস ডলার বিনিয়োগ। এক্ষেত্রে ওষুধ খাত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জেএমআই’র সাথে নিপ্রোর বিনিয়োগের সাফল্য বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে আরও জাপানি বিনিয়োগ আনার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।
ইতো নাওকি বলেন, আমি ডিএনএ সল্যুশনে পিসিআর টেস্ট করতে এসেছিলাম। আমার খুবই ভালো অভিজ্ঞতা হয়েছে। ভেতরে ঘুরে দেখেছি। শুধু টেস্টের জায়গা নয়, এখানের সবকিছুই অনেক পরিষ্কার, অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি। নিপ্রো, ডিএনএ সল্যুশন এবং জেএমআইয়ের ভবিষ্যৎ খুবই ভালো। বিশেষ করে স্বাস্থ্যসেবা খাতে তাদের যৌথ উদ্যোগগুলো। একই সঙ্গে জেএমআই-নিপ্রোর সাফল্য কামনা করেন।
এ সময় জেএমআই গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুর রাজ্জাক জানান, জেএমআই গ্রুপের চারটি প্রতিষ্ঠানে যৌথ বিনিয়োগ রয়েছে জাপানের নিপ্রো করপোরেশনের। যার মধ্যে গত বছর করোনা মহামারির মধ্যেও এসেছে ১২৮ কোটি টাকার বিনিয়োগ। জেএমআই গ্রুপ বর্তমানে বিশ্বের ৩৬টি দেশে ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম রপ্তানি করছে। জেএমআই গ্রুপে বিনিয়োগের পাশাপাশি উৎপাদিত পণ্যের সর্বোচ্চ মান নিশ্চিতে সহযোগিতা দিচ্ছে জাপানের নিপ্রো করপোরেশন।
আবদুর রাজ্জাক বলেন, দেশের স্বাস্থ্যসেবায় একটি মাইলফলক ডিএনএ সল্যুশন লিমিটেড। মানস্মম্মত করোনা পরীক্ষা করতে পারছির বলেই জাপানের রাষ্ট্রদূত নিজের নমুনা দিতে এসেছেন। স্বাস্থ্যসেবায় বড় বিনিয়োগ আমাদের। করোনার মধ্যেও সাড়ে সাত হাজার কর্মী নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। দেশে প্রথমবারের মতো কেএন৯৫ মাস্ক উৎপাদনে সরকার আমাদের অনুমোদন দিয়েছে। করোনা প্রতিরোধে চলমান গণ-টিকাদান কর্মসূচিতেও আমরা একক দেশীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে অটো ডিজেবল (এডি) সিরিঞ্জ সরবরাহ করে যাচ্ছি।
জেএমআই গ্রুপের চেয়ারম্যান জাবেদ ইকবাল পাঠান জানান, ডিএনএ সল্যুশন লিমিটেড কেবল একটি আরটি-পিসিআর ল্যাব নয়, এটি বাংলাদেশের প্রথম মলিকিউলার ডায়াগনিস্টিক ল্যাব। করোনার নমুনা পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশে জাপান দূতাবাস স্বীকৃত একমাত্র প্রতিষ্ঠান ডিএনএ সল্যুশন লিমিটেড। গত বছর করোনা মহামারির শুরুর দিকে বাংলাদেশ পুলিশের প্রায় ১০ হাজার করোনার নমুনা পরীক্ষা হয়েছে আমাদের ল্যাবে। পাশাপাশি জাইকার অর্থায়নে নির্মাণাধীন বিভিন্ন প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মেট্রোরেল, এবং বিভিন্ন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের করোনার নমুনা পরীক্ষা করানো হয় আমাদের ল্যাবে। এখন পর্যন্ত আমরা প্রায় ৯০ হাজার করোনা নমুনা পরীক্ষা করেছি।
ডিএনএ সল্যুশন লিমিটেডের বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা ড. মো. ফজলে আলম রাব্বি জানান, গত ১০ বছর ধরে মলিকিউলার ডায়াগনোসিসে পথিকৃৎ ডিএনএ সল্যুশন লিমিটেড। শুরু থেকেই আমাদের উদ্দেশ্য ছিল এক্ষেত্রে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার। আমরাই বাংলাদেশের একমাত্র ল্যাব, যেখানে নেক্সট জেনারেশন সিকুয়েন্সিং (এনজিএস) পদ্ধতিতে বিভিন্ন ধরনের ডায়াগনোসিস সেবা প্রদান করা হয়।
জাপানি কর্মকর্তা নিপ্রো জেএমআই মার্কেটিং লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক কুনিও (কেনি) তাকামিদো জানান, নিপ্রো-জেএমআই মূলত যৌথভাবে ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। উৎপাদিত পণ্যের আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিতে সব ধরণের ব্যবস্থা নিয়ে থাকি আমরা। এটাকে আমরা সামাজিক দায়িত্ব হিসেবে দেখি। মানুষের সেবায় কাজ করতে পেরে আমরা গর্বিত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।