Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সম্রাট হাসপাতালের প্রিজন সেলেই ছিলেন : আইজি প্রিজনস

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ২৪৪ দিন কোথায় ছিলেন তিনি

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২০ আগস্ট, ২০২১, ১২:০৬ এএম

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট কারাগার থেকে ২৪৪ দিন উধাও ছিলেন- স¤প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন গুজব ওঠে। পরে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন আইজি প্রিজনস এবং বিএসএমএমইউ’র কর্তৃপক্ষ। তবে একে ‘ভুল তথ্য’ বলে মন্তব্য করেছে কারা অধিদফতর ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তারা বলেন, কারাগার কিংবা হাসপাতালের প্রিজন সেল থেকে একজন আসামির ২৪৪ দিন উধাও হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সম্রাট হাসপাতালের প্রিজন সেলেই ছিলেন। এখনো তিনি হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন আছেন।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের তথ্য অনুযায়ী, ক্যাসিনোকান্ডে গ্রেফতার সম্রাট গত ২৪ নভেম্বর থেকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি রয়েছেন। তবে স¤প্রতি একটি গণমাধ্যমে দেয়া বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সম্রাট ২০২১ সালের ২৬ জুলাই বিএসএমএমইউতে ভর্তি হন। এর আগে তিনি কারাগারে ছিলেন। উপাচার্যের এমন বক্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। প্রশ্ন ওঠে ২৪ নভেম্বর থেকে পরের বছরের ২৬ জুলাই মোট ২৪৪ দিন কোথায় ছিলেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কারা মহাপরিদর্শক (আইজি-প্রিজন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর রহমান মামুন বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনা কিছুই না। তারা কিসের ভিত্তিতে এটা বলেছে আমার জানা নেই। আমাদের কাছে যে তথ্য প্রমাণ আছে তাতে সম্রাটের হাসপাতালের প্রিজন সেলের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। আমি বিএসএমএমইউ’র উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলেছি। তার তাৎক্ষণিকভাবে যতটুকু জানা ছিল, তিনি ততটুকুই বলেছেন। তার বক্তব্য অসম্পূর্ণ ছিল, সেটা অসম্পূর্ণভাবেই প্রচার করা হয়েছে। সম্রাট যে কারাগারে ছিলেন এ বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে সম্পূর্ণ তথ্য প্রমাণ আছে।
সম্রাটের উধাওয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসএমএমইউ’র পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, এ বিষয়ে মঙ্গলবার আইজি প্রিজন্স বিএসএমএমইউতে এসেছিলেন। আমাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। সম্রাট ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বরের থেকে বিএসএমএমইউতেই আছেন। বর্তমানে সিসিইউতে আছেন। মাঝে যে ২৪৪ দিনের কথা বলা হয়েছে তখন সম্রাট আমাদের এখানেই ছিলেন; বিভিন্ন ইউনিটে, ওয়ার্ডে, কেবিনে ভর্তি ছিলেন। তবে কারা অধিদফতর ও পুলিশ পাহারায় হাসপাতালের ভেতরেই ছিলেন। এখান থেকে বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
এদিকে সম্রাটের উধাও হওয়ার সংবাদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ। কারাগার জানায়, সম্রাট বিএসএমএমইউতে ছিল। এ বিষয়ে প্রতি ১৫ দিন পর পরপর হাসপাতালের সঙ্গে কারাগারের কথা হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালে কারারক্ষী, শাহবাগ থানা পুলিশ, স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) পুলিশ, এনএসআইসহ বেশ কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা থাকেন। কোনোভাবেই হাসপাতালের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় র‌্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো চলার বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। এরপর ৬ অক্টোবর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী এনামুল হক আরমানকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। সেদিন বিকেলে সম্রাটকে সঙ্গে নিয়ে কাকরাইলের ভ‚ইয়াঁ ট্রেড সেন্টারে তার কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অভিযান শেষে ক্যাঙ্গারুর চামড়া পাওয়ার কারণে সম্রাটকে তাৎক্ষণিকভাবে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আইনে ছয় মাসের কারাদন্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। ঢাকার রমনা থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ ও অস্ত্র আইনে আরো দুটি মামলা করা হয় তার বিরুদ্ধে। পরে তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং ও দুর্নীতির মামলাও হয়। কারা কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী সম্রাট ২০১৯ সালের অক্টোবরে ৫ দিন জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালে, একই বছরের নভেম্বর থেকে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাস ১৯ দিন বিএসএমএমইউ, সেখান থেকে ১৫ দিনের জন্য জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালে, জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল থেকে ১১ দিনের জন্য বিএসএমএমইউতে, সেখান থেকে ৬ দিনের জন্য জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালে যান। সর্বশেষ ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর থেকে তিনি বিএসএমএমইউতেই ভর্তি আছেন।



 

Show all comments
  • salman ১৯ আগস্ট, ২০২১, ৫:১৬ এএম says : 0
    Casino Somrat er ki hoise, oi .......... Hospital a ?? O Jodi Arrest na hoito, ta hole ki ato din Hospital a thakto?? O tu chada baji, .... Baji, khun, kharabi re besto thakto
    Total Reply(0) Reply
  • Mahmud Hasan ১৯ আগস্ট, ২০২১, ১১:৩১ এএম says : 0
    সত্যিকারের অসুস্থ রোগীকেও এতো দীর্ঘ সময় হাসপাতালে থাকতে হয় না। গ্রেফতার হওয়ার পর এই সমস্ত ভিআইপি আসামিদের হাসপাতালে থাকতে হয়। বুঝা যায় হাসপাতাল তাদের জন্য রিসোর্ট!
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ