Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বেনাপোল বন্দরে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড

প্রকাশের সময় : ৩ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শত কোটি টাকার মালামাল পুড়ে ছাই
বেনাপোল অফিস : দেশের সবচাইতে বড় স্থলবন্দর বেনাপোলের ২৩ নম্বর শেডে ভয়াবহ অগ্নিকা-ে প্রায় ১০০ কোটি টাকার মালামাল পুড়ে ছাই হয়েছে। গতকাল রোববার ভোররাতে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে এই অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটেছে বলে জানান বন্দর কর্তৃপক্ষ। ভারত ও বাংলাদেশের ১৩টি ইউনিট দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা চেষ্টা করে আগুন নেভাতে সক্ষম হন। আগুন পার্শ্ববর্তী এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে ওপেন ইয়ার্ডের বিপুল পরিমাণ মালামাল পুড়ে যায়। বন্দরের পাশে বন্দর থানার আংশিক অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুলিশ থানা থেকে অস্ত্র গোলাবারুদসহ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে বলে বন্দর থানার ওসি অপূর্ব হাসান জানান।
আগুন লাগার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট পানি ছিটিয়ে সকাল সাড়ে দশটায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রোববার ভোরের দিকে হঠাৎ করে এ আগুন লাগে এই শেডে। আগুন লাগার কিছুক্ষণের মধ্যেই শেডের আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। পাশে খোলা আকাশের নিচে রাখা বিভিন্ন মেশিনারি, টায়ার, সুতা, কাগজ, কেমিকেল এবং অন্যান্য আমদানি পণ্য পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
সরেজমিন দেখা গেছে, ২৩ নম্বর শেডের পাশে অবস্থিত বন্দর থানার সামনে রাখা বেশ কয়েকটি ভারতীয় ট্রাক ও বিভিন্ন সময়ে জব্দ করা প্রাইভেট কারও পুড়ে গেছে।
বেনাপোল বন্দরের পরিচালক নিতাই চন্দ্র সেন জানান, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে এই অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটেছে। আগুন পুরোপুরি নিভলে ক্ষয়ক্ষতির মোট পরিমাণ জানানো যাবে। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
বন্দর সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান স্বজন জানান, বাংলাদেশের ১২টি ইউনিট ও ভারতের ১টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ সম্পন্ন করে। প্রাথমিকভাবে ১০০ কোটি টাকার বেশি মালামাল ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। তবে বন্দরের নিজস্ব ১০টি ফায়ার ফাইটার ইউনিট অকেজো থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে আগুন নেভানো যায়নি বলে তিনি জানান। ১৯৯৬ সালের বেনাপোল বন্দরে অনুরূপ অগ্নিকা-ে ২০০ কোটি টাকার মালামাল পুড়ে যায়। সেই সময় আমদানিকারকরা বন্দর থেকে কোন ক্ষতিপূরণ পায়নি। বন্দরের নিজস্ব কোন বীমা না থাকায় সেই সময় কোন ক্ষতিপূরণ পায়নি।
বেনাপোল বন্দরে অগ্নিকা-ের ঘটনায় বন্দর, কাস্টমস এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় পৃথক ৩টি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটি অগ্নিকা-ের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করবে। বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন অগ্নিকা-ের পর বেনাপোল বন্দরের সহকারী পরিচালক আব্দুল হান্নানকে প্রধান করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এই কমিটি আগামী ১০ দিনের মধ্যে তাদের রিপোর্ট প্রদান করবে। অপরদিকে বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষও একটি কমিটি গঠন করেছে। অতিরিক্ত কমিশনার ফিরোজ উদ্দিনকে প্রধান করে গঠিত এই কমিটিতে রয়েছেন আরো ৪ সদস্য। তারা ৭ দিনের মধ্যে রিপোর্ট প্রদান করবেন। অন্যদিকে একজন যুগ্ম সচিবকে প্রধান করে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় ৩ সদস্য বিশিষ্ট অপর একটি কমিটি গঠন করেছে।
এদিকে অগ্নিকা-ের ক্ষয়ক্ষতি দেখতে হেলিকপ্টার জোগে বেনাপোল বন্দরে আসেন নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এমপি, সাথে ছিলেন, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বন্দরের চেয়ারম্যান। যশোরের জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ুন কবীর সাথে ছিলেন। মন্ত্রী বলেন, আমদানিকারদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে ক্ষতিপূরণ হিসাব দেয়া যাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বেনাপোল বন্দরে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ