পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কূটনৈতিক সংবাদদাতা : সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে ৫ম নিরাপত্তা সংলাপ। গতকাল রবিবার সকাল ১০টায় শুরু হয়ে এই সংলাপ দুই ঘণ্টারও বেশি সময় চলে। জঙ্গিবাদ দমন বিষয়ে এতে আলোচনা হয় বলে জানা গেছে।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় আয়োজিত নিরাপত্তা সংলাপে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কামরুল আহসান এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনীতি ও সামরিকবিষয়ক বিভাগের উপ-সহকারী মন্ত্রী উইলিয়াম মোনাহান। ঢাকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সংলাপে জঙ্গি দমনের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত হয়েছে বলে জানা গেছে। সংলাপ শেষে গতকাল রাতে উভয় দেশের পক্ষ থেকে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, আগামী বছর ওয়াশিংটনে ৬ষ্ঠ নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে গত শনিবার সংলাপে যোগ দিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকা আসেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রিন্সিপাল ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ইউলিয়াম জিপি মোনাহামের নেতৃত্বে মার্কিন প্রতিনিধি দল। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তারাও আছেন এ প্রতিনিধি দলে। এছাড়া সংলাপে ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাটসহ দূতাবাসের কর্মকর্তারাও যোগ দেন। অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব (দ্বিপাক্ষিক ও কনস্যুলার) কামরুল আহসানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলে ছিলেন পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্রবাহিনী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিরা।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা সমুন্নত রেখে পারস্পরিক নিরাপত্তা ইস্যুগুলো মোকাবেলায় গভীরতর ও শক্তিশালী অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশ নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব, কৌশলগত অগ্রাধিকার, আঞ্চলিক নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, বেসামরিক নিরাপত্তা সহযোগিতা, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী, সন্ত্রাস ও সহিংস জঙ্গিবাদ দমনের বিস্তৃত ইস্যুতে আলোচনা করেছে। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র দায়েশ/আইএসের মত সহিংস চরমপন্থী গ্রুপগুলো থেকে অভিন্ন ঝুঁকিকে বিবেচনায় নিয়েছে, যা বিশ্বের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। সন্ত্রাস ও সহিংস জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ও নিজ দেশের ভূমি অন্য দেশে সন্ত্রাসী কর্মকা- চালাতে ব্যবহার করতে না দেয়ার সরকারের নীতিকে সাধুবাদ জানায় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি আক্রমণের পর সংশ্লিষ্ট সব এজেন্সির সমন্বয়ে সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টা এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অধীনে সন্ত্রাস ও আন্ত:দেশীয় অপরাধ দমন (সিটিটিসি) ইউনিট গঠনের প্রশংসা করেছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী কার্যক্রম ও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে পরিচালিত বিশ্ব শান্তি উদ্যোগগুলোতে বাংলাদেশের ভূমিকাকে সাধুবাদ জানায় যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া দুর্যোগ মোকাবেলা ও প্রস্তুতিতে সক্ষমতা বাড়ানো, উপকূলীয় এলাকায় ৬০০টি বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের জন্য দ্রুতগামী নৌযান সরবরাহে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া সহায়তা ও সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানায় বাংলাদেশ।
এছাড়া সন্ত্রাস ও সহিংস জঙ্গিবাদ দমন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী কার্যক্রমের জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরো প্রশিক্ষণ, যন্ত্রপাতি ও লজিস্টিক সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ।
এতে আরও বলা হয় যে, আগামী বছরগুলোতে ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা সহযোগিতা গড়ে তোলার ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছেছে দুই দেশ।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ৪র্থ নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ২০১৪ সালের ২২ এপ্রিল ৩য় সংলাপ ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া ২০১২ সালের এপ্রিলে ঢাকায় প্রথম নিরাপত্তা সংলাপ এবং ২০১৩ সালের এপ্রিলে ওয়াশিংটনে দ্বিতীয় নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।