পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক আশ্বস্ত করে বলেছেন, চলতি মাসেই প্রায় এক কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা দেশে আসবে। পর্যায়ক্রমে সবাই টিকা পাবেন। আর তাই টিকার জন্য যারা নিবন্ধন করেছেন অথচ মেসেজ পাননি তাদের ধৈর্য ধরার আহবান জানিয়েছেন তিনি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এক কোটির মতো মানুষ টিকার অপেক্ষায় আছেন এবং এখন পর্যন্ত পৌনে দুই কোটি মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে। মানুষের মধ্যে করোনার টিকার ব্যপারে সচেতনতা তৈরি হয়েছে। এই মুহ‚র্তে টিকার কিছুটা সংকট থাকলেও চলতি মাসেই তা কেটে যাবে জানিয়ে নিবন্ধনকারীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান।
গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে ডেঙ্গু ও করোনা মহামারিতে চ্যালেঞ্জ শীর্ষক এক সেমিনারের প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এসব কথা বলেন। সভায় জীবন ও জীবিকা সমুন্নত রাখতে কঠোর বিধি নিষেধ তুলে নেয়া হয়েছে জানিয়ে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য আহ্বান জানান বক্তারা। বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিন (বিএসএম) ও যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণবিষয়ক সংস্থা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) যৌথভাবে এই কর্মশালার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিন-এর প্রেসিডেন্ট প্রফেসর মো. বিল্লাল আলম। সঞ্চালনা করেন মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সুদীপ রঞ্জন দেব।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, টিবি, পক্স আগে মানুষের ছিল না। প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে অসুখগুলো আসে, এখনো আসছে। আমরা জানি যে, করোনা কোনো একটি প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে এসেছে। স্মল পক্স প্রতিরোধ করা গেছে। কোনো এক সময় করোনাও মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। আমরা বিভিন্ন মাধ্যম থেকে ভ্যাকসিন পাচ্ছি। কোভ্যাক্স থেকে আমরা ভ্যাকসিন পাচ্ছি, নিজেরাও কিনছি। ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে হলে ২৬ থেকে ২৭ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন প্রয়োজন হবে। একসঙ্গে এত ভ্যাকসিন আমরা পাব না, রাখতেও পারবো না। আমরা চেষ্টা করছি, যখন যেটা পাওয়া যায় আনার জন্য। জাহিদ মালেক বলেন, টিকা নিয়ে আন্তর্জাতিক রাজনীতি চলছে। বিশ্বের বড় দেশগুলো টিকা তৈরি করেছে, তাদের জনসংখ্যার চার-পাঁচগুণ বেশি টিকা মজুদ করেছে। আমরা সাধ্যমতো কিনে আনার চেষ্টা করছি। জাহিদ মালেক বলেন, আমরা একবারে সবাইকে টিকা দিতে পারবো না। ধৈর্য্য ধরতে হবে। আস্তে আস্তে সবাইকে আমরা টিকা দিচ্ছি। সবাই টিকা পাবে। কোটি কেটি লোক রেজিস্ট্রেশন করেছে। আমাদের যারা বিরোধী আছেন, টিকা যখন কম থাকে তখন বলে টিকা কোথায়? যখন বেশি লোক আসে, লোক বেশি কেন আসলো? না আসলেও অসুবিধা, আসলেও তাদের কাছে অসুবিধা। তাদের আমি অন্য কোনো কাজে দেখিনি। করোনার সময় মানুষের পাশে তাদের কখনো দেখিনি। মাঝে মাঝে টেলিভিশনের পর্দায় দেখেছি। শুধু সমালোচনায় দেখেছি। সমালোচনা করা সহজ খুব।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের যদি হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভালো রাখতে হয় তাহলে সংক্রমণ রোধ করতে হবে। মাস্ক পরতে মানুষের অনীহা। আমরা জানি মাস্ক পরতে কষ্ট হয়। বিদেশে মাস্ক পরতেই চায় না। বড় বড় দেশে, উন্নত দেশে, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকেও আমরা দেখেছি মাস্ক পরতে চায় না। তার ফলোয়াররাও কেউ মাস্ক পরতে চায় না। আমাদের দেশে অবশ্য এটা নাই। আমাদের দেশে মানুষকে বললে সেটা শোনে। করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে পরিস্থিতি কঠিন হবে। আমাদের মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাবে।
মশা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ডেঙ্গু রোগী বাড়বে। হাসপাতালে জায়গা সংকুলনার করতে পারছি না। এখন প্রায় সবই খুলে দেয়া হয়েছে। জীবন জীবিকা পাশাপাশি চলবে। জীবন বেশি গুরুত্ব। জীবনকে রক্ষা করে আমাদের জীবিকা অর্জন করতে হবে। আমরা মৃত্যুর হার কমাতে চাই। শুধু সরকার পারবে না, সবাইকে প্রয়োজন। নিজেদের সুরক্ষা নিজেদের করতে হবে। সংক্রমণ অনেক বেড়েছিল, এখন কমে এসেছে। ৩২ শতাংশে উঠেছিল, গতকাল ২৩ শতাংশ দেখলাম। এই কমার হার ধরে রাখতে চাই। তবে মৃত্যুহার কমছে না। এটা কমাতে হবে। যারা বাসে ট্রেনে চলেন, গাদাগাদি করে আসলে চলবে না। তাহলে সংক্রমণ আবার বাড়বে বলে উল্লেখ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে ডেঙ্গুর প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস করতে স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম। তিনি বলেছেন, দেশে করোনার সংক্রমণের পাশাপাশি বেড়েছে ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপ। অনেকেই করোনার পাশপাশি ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে সরকারকেও। পাশাপাশি হাসপাতালে আর একটি সিটও বাড়ানো সম্ভব নয় বলে উল্লেখ করে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার ওপর চাপ কমাতে সংক্রমণের উৎস বন্ধ করার উপর জোর দেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলোকে চিঠি দেওয়া হয়েছে মশার প্রাদুর্ভাব বাড়বে। কোভিড নিয়ে বলতে চাই, আমি অনেক পরে এই প্রক্রিয়ায় সংযুক্ত হয়েছি। আমরা রাতারাতি হাসপাতাল বাড়িয়ে ফেলতে পারি না, চিকিৎসা সরঞ্জাম বাড়িয়ে ফেলতে পারি না। এখন সব কিছু খুলে দেওয়া হয়েছে, আমাদের খেয়াল করতে হবে আমরা যেন এই রোগ বাড়িয়ে না চলি। হাসপাতালে আর বেড বাড়ানো সম্ভব হবে না। নন-কোভিড রোগীদের সেবা ব্যাহত হচ্ছে। আমাদের সংযত হতে হবে।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সভাপতি প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা বলেন, আমরা করোনা নিয়ে ক্লান্ত সবাই। এর মধ্যে নতুন করে এলো ডেঙ্গু। করোনায় বড়রা আক্রান্ত বেশি হয়। উল্টো ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে। আমরা খুব একটা ভালো সময়ে নেই। প্রতি দিনই সংক্রমণ হচ্ছে। মৃত্যু ২০০ এর উপরে। আমরা নানা পন্থা অবলম্বন করেছিলাম, তার মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি সেটা খুব একটা মানা হচ্ছে না।
স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি প্রফেসর এম ইকবাল আর্সলান বলেন, ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় বেশি। চিকিৎসার চেয়ে মশা নিধন বেশি জরুরি। ডেঙ্গু চিকিৎসায় আলাদা হাসপাতাল দরকার নেই। আমি মনে করি, ডেঙ্গু ডেডিকেটেড হাসপাতাল করলে চিকিৎসায় সময় নষ্ট হবে।
স্বাচিপ মহাসচিব এম এ আজিজ বলেন, সিটি করপোরেশন বাড়ি আঙিনা ভিত্তিক অভিযান চালাচ্ছে। অফিস-আদালতকে আরও গুরুত্ব দেয়া উচিত বলে আমি মনে করি।
এর আগে ডেঙ্গু ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র প্রফেসর ডা. মো. রোবেদ আমিন এবং বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিন-এর সেক্রেটারি জেনারেল প্রপেসর ডা. আহমেদুল কবির করোনার চিকিৎসার দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন।
ডা. রোবেদ আমিন বলেন, কোনো দেশে যখন ডেঙ্গু প্রবেশ করে, সে শুধু প্রবেশই করে বের হতে জানে না।###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।