পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ফারুক হোসাইন : মহান ও নিবেদিত পেশা হিসেবে শিক্ষকতা সর্বজন স্বীকৃত। মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবেই মনে করা হয় শিক্ষকদের। পাঠদানে আত্ম-নিয়োগ, শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিহিত থাকা সুপ্ত মেধা জাগ্রত করা, দুঃস্থ ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের নিজের অর্থ ব্যয়ে দেশ সেরা হিসেবে গড়ে তোলা শিক্ষকও দেশে বিরল নয়। এ জন্যই সমাজে শিক্ষকরা সবচেয়ে বেশি সম্মানিত, শিক্ষার্থীরাও যুগে যুগে স্মরণ রাখেন তাদের। তবে কিছু শিক্ষকের অনৈতিকতা ও অর্থলিপ্সায় ভূলণ্ঠিত হতে চলেছে গোটা শিক্ষক সমাজের মর্যাদা। প্রশ্ন উঠেছে তাদের দায়িত্ববোধ, আন্তরিকতা ও নৈতিকতা নিয়ে। ক্লাসে পাঠদানের পরিবর্তে কোচিং বাণিজ্যে জড়িত থাকা, শিক্ষাদানের চেয়ে অর্থ উপার্জনেই বেশি মনোযোগী হওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। শিক্ষকতার প্রতি চিরাচরিত অঙ্গীকার ভুলে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত কোচিং সেন্টারে পড়তে বাধ্য করা হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। নির্দেশ না মানলেই নম্বর কমিয়ে দেয়া, নানা ক্ষেত্রে নিগৃহীত করা এমনকি শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনাও ঘটাচ্ছেন কোন কোন শিক্ষক। প্রবীণ শিক্ষাবিদরা বলছেন, শিক্ষকদের নিজেদের কারণেই তাদের সম্মান কমছে। তারা ক্লাসরুম ছেড়ে আর্থিক লোভে চেম্বার কেন্দ্রিক (কোচিং সেন্টার-প্রাইভেট) মনোযোগী হয়ে উঠেছেন। কোচিং বাণিজ্য বন্ধে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় বারবার নির্দেশনা দিলেও কোন কিছুই আমলে নিচ্ছেন না তারা। যাদের কথায় শিক্ষার্থীরা অনুগত হয়ে ওঠে সেই শিক্ষকদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনের। শিক্ষা পরিবারের সর্বোচ্চ অভিভাবক খোদ শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের ক্ষোভ ও সতকর্তাও যেনো দাগ কাটছেনা তাদের মনে। বরং নিজ গতিতেই কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। তবে ব্যতিক্রম শিক্ষকের সংখ্যাও কম নয়। বিশেষ করে মাদরাসা শিক্ষায় এখনো শিক্ষকদের নিবেদিত প্রাণ ও অর্থের মোহমুক্ত হয়ে শিক্ষাদান করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। মাত্র ১ হাজার টাকা বেতনেও শিক্ষকতায় যুক্ত রয়েছেন এবতেদায়ী স্তরের শিক্ষকরা।
কোচিংয়ের এই কুফল সম্পর্কে প্রবীণ শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, পরীক্ষা এখন বাণিজ্য হয়ে গেছে। টাকার বিনিময়ে সবকিছু হচ্ছে। কোচিং ব্যবসায়ীরা সেটাই করছে। কোচিং সেন্টার যে কারণে চলছে সেগুলো তুলে দিতে হবে। ছাত্রছাত্রীদের ক্লাসনির্ভর হতে হবে। পরীক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তন দরকার। শিক্ষাবিদরা বলছেন, কোচিং বন্ধে সরকারের যেমন কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তেমনি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মনোজগতে পরিবর্তন আনতে হবে। আর শিক্ষকদের হতে হবে দায়িত্বশীল। শিক্ষকরা যদি শ্রেণি কক্ষে নিজেদের উজাড় করে দিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়ান তাহলে তাদের তো আর কোচিং-এর জন্য অপেক্ষায় থাকতে হয় না। সেই বিষয়টির দিকে শিক্ষকদের মনোনিবেশ করতে হবে।
অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষকরা নিজেরাই (একাংশ) শিক্ষার্থীদের উত্তর বলে দেয়ার প্রতিযোগিতায় নামেন। আর পরীক্ষার্থীরা যখন শিক্ষকদের এসব কা- বাসায় গিয়ে বলেন, লজ্জায় লাল হয়ে যায় মুখ। হায়রে নৈতিকতা! কোথায় গেল সব? এখন বলাই যায়, শিক্ষকরা জাতি গড়ার কারিগর নন। তারা জাতির নৈতিক অবক্ষয়ের কারিগর।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, শহর এলাকার বিভিন্ন অলি-গলিতে ছোট ছোট বাসা ভাড়া নিয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে কোচিং সেন্টার। এসব কোচিংয়ের বিজ্ঞাপন ও ব্যানার-পোস্টারগুলো থাকছে বেশ চটকদার এবং আকর্ষণীয়। পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন নামেও চলে কোচিং বাণিজ্য। শিক্ষকদের বাসা-বাড়ি, স্কুল-কলেজ এবং আশপাশের এলাকায় ফ্লাট-ঘর ভাড়া নিয়ে চলছে টাকার বিনিময়ে পাঠদান। শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই জানান, ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও তাদের কোচিংগুলোতে ভর্তি হতে হচ্ছে তাদের। অনেক অভিভাবকরা ভাল ফলাফলের আশায় জোর করে ভর্তি করছেন তাদের সন্তানদের। কোচিং সেন্টারগুলোতে সকাল ৭ টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ক্লাস চলে বলে তারা জানায়। একদিকে স্কুলের পড়ার চাপ তার উপর কোচিংগুলোর প্রতিদিনের পড়ার চাপ এতে করে মানসিক, শারীরিক দুইভাবেই ভেঙ্গে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। যদিও শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০১২ সালের ২০ জুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বন্ধে একটি নীতিমালা জারি করে। ওই নীতিমালায় বলা হয়েছে- শিক্ষকরা নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কোচিং করাতে পারবেন না। তবে অন্য প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ ১০ জনকে কোচিং করাতে পারবেন। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের ওই নির্দেশনাকে থোড়াই কেয়ার করছেন সংশ্লিষ্টরা। বরং পুরো শিক্ষা ব্যবস্থা এখন কোচিং নির্ভর হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা কোন মতে স্কুল-কলেজে হাজিরা দিয়েই ছুটছে কোচিং হোমে। শিক্ষকরাও ক্লাস ছেড়ে দ্রুত হাজির হচ্ছেন তাদের চেম্বারে। শহরাঞ্চলে কোচিং প্রাথমিক শিক্ষাস্তর হতে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত আষ্টেপৃষ্ঠে গেঁথে ফেলেছে। এছাড়া যেন লেখাপড়াই হয় না। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে একবার কোচিং বাণিজ্যের সাথে জড়িত শিক্ষকদের নামের তালিকা তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয় এবং যারা এর সাথে জড়িত এমন শিক্ষকদের বদলি এবং প্রথম দফায় তাদের সতর্ক করে দেয়ার উদ্যোগও নেয়া হয়। কিন্তু সেসব উদ্যোগ যেখানে ছিল এখনো সেখানেই রয়েছে। অন্যদিকে নিশ্চিত জিপিএ-৫ (এ প্লাস), শতভাগ পাসের নিশ্চয়তার মতো নজরকাড়া বিজ্ঞাপন দিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আকৃষ্ট করছে কোচিং সেন্টারগুলো। লাভজনক এই ব্যবসার কারণে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যাঙের ছাতার মতোই গজিয়ে ওঠেছে বিভিন্ন নামে বেনামে শত শত কোচিং সেন্টার। পিছিয়ে নেই স্কুলগুলোও। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানভিত্তিক মডেল টেস্ট, স্পেশাল পাঠদান, দুর্বল শিক্ষার্থীদের ইনটেনসিভ কেয়ারের আড়ালেও চলে কোচিং বাণিজ্য। পাশাপাশি স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরেও সংশ্লিষ্ট শহরের ব্যস্ততম কিংবা স্থানে রুম ভাড়া করেই গড়ে তোলা হয়েছে প্রাইভেট সেন্টার। ক্লাসের শিক্ষকরাই পরামর্শ দিচ্ছেন কোচিংয়ে ভর্তির। অনেক ক্ষেত্রে মার্কসের ভয়-ভীতি দেখিয়েও ভর্তি হতে বলা হয় কোচিং সেন্টারে। প্রসপেক্টাস আর নজরকাড়া বিজ্ঞাপন নির্ভর কোচিং সেন্টারের আড়ালে প্রশ্নফাঁসের ব্যবসা হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। ফ্রি স্টাইলে এবং কর্তৃপক্ষের নাকের ডগার উপর এই বাণিজ্য চললেও নিরব থাকছে মন্ত্রণালয় ও কর্তৃপক্ষ। তবে অভিভাবকরা বলছেন, স্কুলে যে পড়াশুনা হয়, তা পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য যথেষ্ট নয়। আর তাই ভালো ফলাফলের জন্য তাদের সন্তানদের নিয়ে কোচিং সেন্টারের দ্বারস্থ হচ্ছেন।
শুধু কোচিং সেন্টার খুলে বসা এবং এতে শিক্ষার্থীদের পড়তে বাধ্যই করা হচ্ছে না। শিক্ষকরা তাদের কোচিংয়ের নাম কুড়ানোর জন্য বেছে নিচ্ছেন অনৈতিক পন্থাও। নিজের কাছে কোচিং বা প্রাইভেট পড়া শিক্ষার্থীদের ফল যাতে ভালো হয় সেজন্য পরীক্ষার হলে শিক্ষার্থীদের কাছে নকল পৌঁছে দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষকেরা। বলে দিচ্ছেন নৈর্ব্যক্তিকের উত্তর। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষকদের এই অনৈতিক কাজের কারণে ফলাফলে সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্বাচনের পদ্ধতিই বাতিলের ঘোষণা দিতে বাধ্য হন শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের তদন্তে জানা যায়, আগে যেখানে শিক্ষকরা পরীক্ষার হলে ছাত্রদের নকল ধরতেন। এখন নিজ প্রতিষ্ঠান এবং কোচিংয়ের ছাত্রদের পাস ও নম্বর বাড়ানোর জন্য নিজেই নকল নিয়ে হাজির হন শিক্ষার্থীদের কাছে। লক্ষ্য একটাই এবছর ওই শিক্ষকের নিজস্ব কোচিং কিংবা প্রতিষ্ঠান থেকে বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেলে পরের বছর বিজ্ঞাপন হবে। এমনকি অন্য স্কুলে কেন্দ্র পড়লে সেখানে টাকা পয়সা দিয়ে পরীক্ষকদের কিনে ফেলেন।
আগে ভালো স্কুলের শিক্ষকরা বাড়তি রোজগারের জন্য বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের সাথে সম্পৃক্ত হতেন। এখন তারা নিজেরাই কোচিং ব্যবসা করছেন। রীতিমতো নিজের নাম দিয়েই কোচিং সেন্টার খুলে বসেছেন তারা। কম-বেশি রাজধানীর প্রায় সব কোচিং সেন্টারই জমজমাট। সেভ দ্য চিলড্রেন অস্ট্রেলিয়ার সহায়তায় পরিচালিত শিশু সংগঠন চাইল্ড পার্লামেন্টের এক জরিপে দেখা যায়, ৮২ শতাংশ ছাত্রছাত্রীই গৃহশিক্ষকের কাছে পড়ে বা কোচিংয়ে যায়। শতাংশটির অংকে তারতম্য হতে পারে। কিন্তু তথ্যগতভাবে শতভাগ সঠিক।
অর্থ ব্যয়ে ভাল ফল: পরীক্ষায় ভালো ফলের পেছনে আগে শিক্ষকদের অবদানকে মেনে নেয়া হলেও এখন তা মানতে নারাজ অভিভাবকরা। তারা বলছেন, শিক্ষকরা নয়, বরং টাকায় তাদের ফল কিনে নিতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফল যে স্কুলের পাঠদানের কারণে হচ্ছে না তা স্বীকারও করেছেন অভিভাবকরা। শামসুল হক খান স্কুল এন্ড কলেজের কয়েকজন অভিভাবক বলেন, পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর অধ্যক্ষ বলেন, তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম, আন্তরিক প্রচেষ্টা আর নিয়মিত পাঠদানের কারণে হয়েছে। আসলে কি তাই? অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, আমাদের সন্তানদের ভালো ফলাফলে স্কুলের বা শিক্ষকদের কোনই অবদান নেই। আমরা টাকা খরচা করে এই ফলাফল কিনেছি। কেমন কিনেছি! তার জবাবে একজন অভিভাবক বললেন, দেখুন আমার আত্মজের পেছনে মাসে বিশ হাজার টাকা খরচ করছি। তাকে ভাল শিক্ষকের কাছে পড়ানোর নামে দুহাতে পয়সা খরচ করেছি। ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের দশম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক লুৎফা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘ক্লাস নাইন থেকে দুটি বছর মেয়েকে টানা কোচিং করাচ্ছি। প্রতি মাসে শুধু এ জন্যই খরচ হচ্ছে ২০ হাজার টাকা। রাজধানীর উদয়ন স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী সানজিদা হক তার স্কুলের শিক্ষককের কাছেই গণিত এবং ইংরেজি কোচিং করেন। ‘ক্লাসে যা পড়ায় তাতে হয় না বলেই কোচিং করতেই হয় বলে জানান তিনি। সানজিদার অভিভাবকও জানান ভাল রেজাল্ট করতে হলে কোচিং করাতেই হবে। ক্লাসে যে পড়া হয় তাতে ভাল রেজাল্ট করা যায় না।
এদিকে প্রাইভেট পড়তে অস্বীকৃতি জানালে শিক্ষকের রোষানলের শিকার হয়েছেন এমন ছাত্রের সংখ্যাও কম নয়। পরীক্ষায় নম্বর কম দেয়া এমনকি শারীরিক নির্যাতনের শিকারও হয়েছেন কেউ কেউ। মাগুরায় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম বৃন্তকে ওই বিদ্যালয়ের বাংলার শিক্ষক মেহেদী হাসান বাড়িতে গিয়ে প্রাইভেট পড়তে বলেন। কিন্তু সে তাতে রাজি না হওয়ার পর থেকেই তার প্রতি ওই শিক্ষক বিরূপ আচরণ শুরু করেন। স্কুলের মাসিক বেতন দেয়ার সময় সিরিয়াল ব্রেকের অভিযোগে মেহেদী হাসান ওই শিক্ষার্থীকে কিল ঘুষি ও পরে লাথি দিয়ে ক্লাসের বাইরে বের করে দেন। শিক্ষকদের অর্থলিপ্সার কারণে প্রতিনিয়তই ব্যয় বাড়ছে শিক্ষার্থীদের। সম্প্রতি দেশে প্রথমবারের মতো একটি জরিপ করে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। অভিভাবকরা প্রতিমাসেই একজন শিক্ষার্থীর স্কুল-কলেজের বেতন, ফি ও অন্যান্য খরচ ছাড়াও কেবল কোচিং ও প্রাইভেটের পেছনেই তিন থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যয় করছেন। একজন শিক্ষার্থীর মোট খরচের ৩৯ শতাংশ ব্যয় হচ্ছে কোচিং করতে গিয়ে। ২০১২ সালের জুনে চট্টগ্রাম অঞ্চল নিয়ে চিটাগাং রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (সিআরআই) এর গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, একজন শিক্ষার্থীর মোট খরচের ৩৯ শতাংশ ব্যয় হচ্ছে কোচিং করতে গিয়ে। স্কুল শিক্ষাকে বিনামূল্যে ভাবা হলেও প্রতিটি পরিবার এখাতে প্রতি মাসে মোট ব্যয় করছে ছয় হাজার ৮৪ টাকা।
শিক্ষকদের কোচিংয়ে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে শিক্ষামন্ত্রী নিজেই বলেছেন, দেশের বেশিরভাগ কলেজে বেলা ১১টার পর শিক্ষক-শিক্ষার্থী খুঁজে পাওয়া যায় না। কারণ শিক্ষকরা মনে করেন ক্লাসে পড়ালে কোচিং-প্রাইভেটে শিক্ষার্থীরা আসবে না। মন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীরা সকাল সাতটায় বাড়ি থেকে আসে। তারা আসে কোচিং করতে। সকালে যে শিক্ষার্থী আসে, সে কোচিং করে ক্ষুধার্ত হয়ে বাড়ি চলে যায়। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কোন কোন শিক্ষক ক্লাসে শিক্ষার্থীদের যথাযথভাবে না পড়িয়ে কোচিংয়ে বাধ্য করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের নোট বই পড়তে উদ্বুদ্ধ করা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনিয়মিত উপস্থিতি প্রভৃতি অভিযোগও কোন কোন শিক্ষকের বিরুদ্ধে পাওয়া যায়। নিয়মিত পরিদর্শন ও মনিটরিংয়ের মাধ্যমে এ সব শিক্ষক নামধারী দুর্জন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কোচিং বাণিজ্য বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও জানানো হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।