পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্থানীয় ইয়ার্ন প্রস্তুতকারকগন রফতানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পের বিদ্যমান প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার লক্ষ্যে দেশীয় বাজারে ইয়ার্নের অযৌক্তিক হারে মূল্যবৃদ্ধি রোধ ও গতকাল মঙ্গলবার ইস্যুকৃত সর্বশেষ পি-আই’তে ইয়ার্নের যে মূল্য উল্লেখ করা হয়েছে, তা আর না বাড়ানোর অঙ্গীকার করেছেন।
মঙ্গলবার রাতে (১০ আগষ্ট) বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস্ এসোসিয়েশন (বিটিএমএ) এর সাথে পোশাক খাতের ৩টি সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ), বাংলাদেশ নীটওয়্যার প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিকেএমইএ) ও বাংলাদেশ টেরিটাওয়েল ও লিনেন প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিটিটিএলএমইএ) এর আলোচনা বৈঠক চলাকালে এ ঘোষনা আসে। আলোচনায় বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান, বিকেএমইএ’র সভাপতি সংসদ সদস্য এ কে এম সেলিম ওসমান ও প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিটিটিএলএমইএ এর চেয়ারম্যান এম শাহাদাৎ হোসেন এবং বিটিএমএ এর সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন অংশগ্রহন করেন। বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি কুতুবউদ্দিন আহমেদ, এফবিসিসিআই এর সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ এবং বিটিএমএ এর সাবেক সভাপতি তপন চৌধুরী ও এ মতিন চৌধুরী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন পোশাক শিল্পের নেতৃবৃন্দকে আরও আশ্বস্ত করে বলেন, বিটিএমইএ’র সদস্যভূক্ত মিলগুলো এলসি ওপেনসহ ও সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমের জন্য নূন্যতম ১৫ দিনের মেয়াদ উল্লেখ করে পি-আই ইস্যু করবে, যা কিনা সাম্প্রতিক সময়ে খুব স্বল্প সময়ের মেয়াদ দিয়ে ইস্যু করা হচ্ছিলো। পি-আই হচ্ছে জাহাজীকরনের পূর্বে সরবরাহকারী থেকে ক্রেতার কাছে পাঠানো আনুমানিক চালানপত্র।
সভায় উপস্থিত নেতৃবৃন্দ একমত হন যে ইয়ার্নের মূল্য কমানোর জন্য পরবর্তী আগামী সোমবারে তারা আরও একটি বৈঠকে বসবেন।
সভায় বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান শিল্পকে রক্ষা করা ও ব্যবসা-বানিজ্যের বর্তমান এই ক্রান্তিকালে শিল্পের প্রতিযোগী সক্ষমতা ধরে রাখার জন্য ৩০এস ইয়ার্নের মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নির্ধারনের দাবী জানান। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, পি-আই সংক্রান্ত ইস্যুসহ অন্যান্য ইস্যুগুলো সমাধান করার লক্ষ্যে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিটিএলএমইএ ও বিটিএমএ প্রতিনিধি সমন্বয়ে একটি আরবিট্রেশন সেল গঠন করা হবে এবং এই সেল পাক্ষিকভাবে (১৪ দিন পর পর) বৈঠকে বসবে।
এর আগে পোশাক রপ্তানিকারকগন স্থানীয় বাজারে ইয়ার্নের অব্যাহত মূল্য বৃদ্ধিতে তাদের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছিলো। ইয়ার্নের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি পোশাক শিল্পের প্রতিযোগি সক্ষমতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, যে শিল্পটি কিনা ইতিমধ্যেই পণ্যের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি ও পণ্যের দরপতনের কারনে একটি কঠিন সময় অতিক্রম করছে।
ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গনহারে টিকাদান কর্মসূচীর কারনে ঐসব দেশে দোকাপাট খুলছে, সেইসাথে দেশগুলোতে খুচরা বিক্রি দ্রæত হারে বাড়ছে। ফলশ্রæতিতে বাংলাদেশে প্রচুর অর্ডার আসছে। কিন্তু স্থানীয় বাজারে ইয়ানের্র অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধির কারনে রপ্তানিকারকগন সকল অর্ডার নিতে পাছেন না। আর বাংলাদেশের রফতানিকারকগন যদি অর্ডারগুলো নিতে না পারেন, তাহলে সেগুলো নিশ্চিতভাবেই অন্যান্য প্রতিযোগি দেশগুলোতে চলে যাবে।
বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের প্রধান কাঁচামাল হচ্ছে তুলা কারন, মোট রফতানিকৃত পোশাক পণ্যের ৭৫ শতাংশই তুলা দ্বারা প্রস্ততকৃত। বাংলাদেশ বিশ্বে তুলা আমদানিতে দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। আর কোনো কারনে যদি এই শিল্পের কাঁচামাল অর্থাৎ তুলা/ইয়ার্নের সরবরাহ বা মুল্য প্রভাবিত হয়, তবে সেটি আমাদের জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনে।
করোনার কারনে ইতিমধ্যে আমাদের অনেক কারখানা নজিরবিহীন ক্ষতির মুখে পড়েছে। অর্ডার বাতিল, মুল্য না পাওয়া, ডিসকাউন্ট, ফোর্স লোন ইত্যাদি কারনে ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে পারছে না। আবার ব্যবসা থেকে প্রস্থানও করতে পারছেন না। কিন্তুু দায় দেনা প্রতিদিনই বাড়ছে। এ অবস্থায় থেকেই কারখানাগুলো আপ্রাণ চেষ্টা করছে ক্ষতি সামলে নিয়ে টিকে থাকতে।
করোনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা পরিচালনায় খরচ বাড়ছে, যেখানে পণ্যের দরপতন হয়েছে ৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ। পরিবহন খরচ বেড়েছে দ্বিগুন। মজুরি, বিদ্যুৎ, ব্যাংক চার্জ সব মিলিয়ে গত ৮ বছরে উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে ৩০ দশমিক ১১ শতাংশ। এমতাবস্থায় পোশাক শিল্পের প্রতিযোগী সক্ষমতা ধরে রাখা ও শিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য ইয়ার্নের মূল্য না বাড়ানোর সিদ্ধান্তটি পোশাক শিল্পের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক ও তাৎপর্য্যপূর্ন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।