পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বরিশাল ব্যুরো : ইসলাম কায়েমের কথা বলে দেশের তরুণ শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করে জঙ্গিবাদী বানানো হচ্ছে। বাংলাদেশকে ধ্বংসের পরিকল্পনায় এমন পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকলকে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে। গতকাল (শনিবার) সকালে বরিশাল বিএম কলেজে শিক্ষা বোর্ড আয়োজিত ‘শিক্ষার উন্নত পরিবেশ, জঙ্গিবাদমুক্ত শিক্ষাঙ্গন’ শীর্ষক মতবিনময় সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এ কথা বলেন। বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ব্যবস্থাপনায় বীর শ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর মিলনায়তনের এ সভায় শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হক সভাপতিত্ব করেন। সভায় বরিশাল-২ আসনের এমপি অ্যাড: তালুকদার মোহাম্মদ ইউনুস, বরিশাল-৫ আসনের জেবুন্নেছা আফরোজ এমপি ছাড়াও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব সোহরাব হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সভায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক সামসুল হুদা, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বিল্লাল হোসেন, বিভাগীয় কমিশনার ও অতিরিক্ত সচিব মো: গাউস, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. এস এম ইমানুল হক, মহানগর পুলিশ কমিশনার এস এম রুহুল আমিন, বিএম কলেজের অধ্যক্ষ ইমানুল হাকিম ও জেলা প্রশাসক ড. গাজী মো: সাউফুজ্জামানসহ বরিশাল জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশে এখন নতুন অপকার্যক্রম শুরু হয়েছে, যার নাম জঙ্গিবাদ। আর এদের লক্ষ্য আমাদের কিশোর, তরুণ ও ছাত্রসমাজ। এই জঙ্গিবাদের জন্য অনেক মুসলিম দেশ ধ্বংস হয়ে গেছে। ধর্মভীরু মুসলিমদের স্থান মসজিদে বোমা ফাটছে। লোক মারা যাচ্ছে। আজ অনেক ইসলামিক শাসনের দেশে জঙ্গিবাদের জন্য মানুষ অশান্তিতে আছে। শুধু মুসলমান দেশেই নয়, এ ব্যাধি এখন বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে। ঐতিহ্যগতভাবেই আমরা বাঙালিরা শান্তিপ্রিয় জাতি। আমাদের দেশে জঙ্গিবাদের কোনো স্থান নেই, কিন্তু তা এখন হচ্ছে। তাই অবশ্যই এটা একটি ভয়ের বিষয় বলে জানান নুরুল ইসলাম নাহিদ।
গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁ ও শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে হামলার উদাহরণ দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, বোমা মেরে মানুষ মারলেই বেহেস্ত পাওয়া যাবে এমন বিভ্রান্তিকর শিক্ষা দিয়ে ছাত্র ও তরুণদের কাজে লাগিয়ে জঙ্গিবাদ তৈরি করা হচ্ছে। এটি আসলে ইসলামের পথ না, বেহেস্তের পথ না, এটা জাহান্নামের পথ। ইসলামসহ কোনো ধর্মই এমন সন্ত্রাসের সমর্থন করে না। এ কার্যক্রম মূলত ইসলাম কায়েমের জন্য করা হচ্ছে না বলে মন্ত্রী বলেন, অন্য পাঁচটি মুসলিম দেশের ন্যায় বাংলাদেশকেও সার্বিকভাবে ধ্বংস করার লক্ষ্যে এই জঙ্গিবাদ শুরু হয়েছে। এমনটা চলতে থাকলে বিদেশীরা আমাদের দেশে ব্যবসা করতে আসবে না। বহির্বিশ্বে আমরা জঙ্গি হিসেবে পরিচিতি পাব। ব্যাবসা বাণিজ্য অচল হয়ে যাবে। মূলত এ উদ্দেশ্যেই আক্রমণগুলো হচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আজ আমাদের সন্তানরা বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে যাচ্ছে। এরা বুঝতে পারছে না যে, এটি ইসলামবিরোধী কাজ, এর জন্য আল্লাহ কখনোই মাফ করবেন না। মানুষ হত্যা একটি কবিরা গুনাহ। আমাদের সন্তানদের রক্ষা করতে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, দেশ একত্রিত হতে শুরু করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে শিক্ষকদের জেগে ওঠার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষক ও শিক্ষা পরিবার দেশের একটি বৃহৎ পরিবার। দেশের জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ এই পরিবারের অংশ। ৫ কোটি সদস্যের এই পরিবারে রয়েছে ২৫ লাখ শিক্ষক। তাই শিক্ষকদের বাড়তি নজর দিতে হবে যেন ছেলে-মেয়ে বিপথে না যায়। বিদ্যালয়ে কোনো ছাত্র ১০ দিন অনুপস্থিত থাকলে তার বাসায় গিয়ে খোঁজ নিতে হবে। সে নিখোঁজ হলে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কেও অবহিত করার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
ইতোমধ্যেই বিভিন্ন বোর্ডে, সরকারি ও বেসরকারিসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের নিয়ে মতবিনিময় হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী নুরুল ইসলাস নাহিদ। এসময় শিক্ষকদের সাথে সাথে তিনি অভিভাবকদের সজাগ থাকতেও বলেছেন। একই সাথে শিক্ষকদেরও ভাঁওতাবাজদের কাছ থেকে সাবধান থাকার আহ্বান জানান মন্ত্রী। সন্তানের প্রতি দৃষ্টি দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তাদের জন্য যথাযথ শিক্ষার পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যাতে করে তারা জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত না হতে পারে সে দিকে নিবিড়ভাবে খেয়াল রাখতে হবে। ‘শিক্ষা নিয়ে গড়ব দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ’ এ স্লোগানকে সামনে রেখে মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন মাদ্রাসাশিক্ষকসহ সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ অভিভাবকবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।