পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
একের পর এক নাগরিকের ব্যক্তিগত ফোনালাপ ফাঁসের ১৬ ঘটনা তদন্ত এবং ফাঁসকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট বারের ১০ আইনজীবীর পক্ষে অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শিশির মনির গতকাল মঙ্গলবার রিটটি করেন। বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চুয়াল ডিভিশন বেঞ্চে রিটের শুনানি হবে বলে জানান রিটকারীদের আইনজীবী। রিটে ২০১৩ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ১৬টি ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে।
ফাঁস হওয়া আলোচিত ঘটনার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার টেলি সংলাপ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ফোনালাপ, বিএনপি’র সিনিয়র নেতা মরহুম ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও রাজশাহী মেট্রোপলিটান পুলিশের এসি নাজমুল হাসানের ফোনালাপের প্রসঙ্গও রয়েছে। এসব আড়িপাতার ঘটনা গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারিত হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ভাইরাল হয়। ব্যক্তিগত ফোনে আঁড়ি পাতার এসব ঘটনা প্রতিরোধে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন অ্যান্ড রেগুলেটরি কমিশন কি ভূমিকা নিয়েছে তা জানতে চাওয়া হয়েছে রিটে।
রিটে বলা হয়, সার্বজনীন মানবাধিকার সনদপত্র, নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী পৃথিবীর সব আধুনিক ব্যবস্থায় ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার স্বীকৃত ও সংরক্ষিত। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের সংবিধানের ৪৩ অনুচ্ছেদে চিঠিপত্র ও যোগাযোগের অন্যান্য উপায়ের গোপনীয়তা সংরক্ষণ নাগরিকের মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এই অধিকার সংবিধান কর্তৃক নিশ্চিত করা হয়েছে। অর্থাৎ সংবিধানের তৃতীয়ভাগে উল্লেখিত মৌলিক অধিকারগুলোর মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সংরক্ষণ অন্যতম।
এছাড়াও ২০০১ সালের ১৬ এপ্রিল বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি অ্যাক্ট, ২০০১ প্রণয়ন করা হয়। এ আইনের ৬ ধারা অনুযায়ী টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন প্রতিষ্ঠিত হয়। আইনের ৩০(চ) ধারা অনুযায়ী টেলিযোগাযোগের একান্ততা রক্ষা নিশ্চিত করা এই কমিশনের দায়িত্ব। কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, এ ধরণের ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনা অহরহই ঘটছে। অথচ, সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী বিটিআরসি’র দায়িত্ব হচ্ছে নাগরিকের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সংরক্ষণ নিশ্চিত করা।
রিটকারী আইনজীবীরা হলেন, রেজওয়ানা ফেরদৌস, উত্তম কুমার বণিক, শাহ নাবিলা কাশফী, ফরহাদ আহমেদ সিদ্দীকী, মোহাম্মদ নওয়াব আলী, মোহাম্মদ ইবরাহিম খলিল, মুস্তাফিজুর রহমান, জি এম মুজাহিদুর রহমান (মুন্না), ইমরুল কায়েস এবং একরামুল কবির।
রিটে ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) বিবাদী করা হয়েছে।
রিট সম্পর্কে অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শিশির মনির ইনকিলাবকে বলেন, গত ২২ জানুয়ারি ফোনে আড়িপাতা বন্ধে ৭ দিনের মধ্যে পদক্ষেপ জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্টদের লিগ্যাল নোটিশ দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিকার না মেলেনি। এ ধারাবাহিকতায় আমরা রিট ফাইল করেছি।
এদিকে ফোনালাপ ফাঁসকারীদের আইনের আওতায় আনতে গত ৫ মে সরকারের প্রতি একটি লিগ্যাল নোটিশ দেয়া হয়। ‘ন্যাশনাল লইয়ার্স কাউন্সিল’র চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এস এম জুলফিকার আলী জুনু এ নোটিশ দেন। নোটিশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে ‘প্রাপক’ করা হয়।
নোটিশটিতে বলা হয়, আলোচিত আত্মহত্যা প্ররোচনা (মুনিয়ার) মামলার তদন্ত চলাকালে বাদী, ভিকটিম ও আসামি বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরকে জড়িয়ে কিছু সংবাদমাধ্যমে কল্পকাহিনী সম্বলিত নিউজ ছাপিয়ে তা ছড়ানো হয়। এছাড়া বিভিন্ন ব্যক্তির ফোনকলের কথোপকথন রেকর্ড করে কে বা কারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি ও মামলার তদন্তের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রভাবিত করার চেষ্টা চালানো হয়।
মামলা তদন্তাধীন বিষয়ে কাল্পনিক সংবাদ পরিবেশন ও ব্যক্তিগত মোবাইলের কথোপকথন অগোচরে রেকর্ড করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে মানহানি করা সরাসরি দেশের প্রচলিত আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ ও সাংবিধানিক অধিকারে হস্তক্ষেপের সামিল। নোটিশটিতে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের হুঁশিয়ারি থাকলেও সেই পদক্ষেপ আর নেয়া হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।