পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : টানা কয়েক সপ্তাহ দরপতনের পর ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে দেশের পুঁজিবাজার। সপ্তাহজুড়ে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর বৃদ্ধি পাওয়ায় সব সূচকের উন্নতি ঘটেছে। বেড়েছে টাকার অংকে লেনদেনের পরিমাণ, বাজার মূলধন ও পিই রেশিও।
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস শনিবার লেনদেন শুরুতে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৩ লাখ ২৬ হাজার ৪২৯ কোটি টাকা এবং শেষ কার্যদিবসে বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে বাজার মূলধন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ২৮ হাজার ১৯০ কোটি টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ১ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা। এদিকে ডিএসইতে গত সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ৩৬ কোটি টাকার, যা এর আগের সপ্তাহের চেয়ে ৮০০ কোটি বা ৩১ দশমিক ২২ শতাংশ বেশি। আগের সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৫৬০ কোটি ৫৮ লাখ টাকার।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে গড়ে প্রতিদিন লেনদেন হয়েছে ৫৬০ কোটি টাকা, যা তার আগের সপ্তাহের চেয়ে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেশি। আগে সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৫১২ কোটি ১১ লাখ টাকা।
গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের চেয়ে ২৯ পয়েন্ট বেড়ে চার হাজার ৬৯৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে এবং শরিয়া সূচক ডিএসইএস ৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১২৫ পয়েন্ট এবং ডিএস ৩০ সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৭৭৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩৩০টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২১২টির, কমেছে ১০২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৩টির আর লেনদেন হয়নি ৩টি কোম্পানির শেয়ার। সপ্তাহের ব্যবধানে সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) শূন্য দশমিক ৬২ শতাংশ বেড়ে ১৫ দশমিক ১২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
এদিকে গত সপ্তাহে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সিএএসপিআই সূচক বেড়েছে শূন্য দশমিক ৬৯ শতাংশ। সিএসই ৩০ সূচক বেড়েছে শূন্য দশমিক ৮১ শতাংশ, সার্বিক সূচক সিএসসিএক্স বেড়েছে শূন্য দশমিক ৬৭ শতাংশ, সিএসই ৫০ সূচক বেড়েছে শূন্য দশমিক ৬৬ শতাংশ এবং সিএসআই সূচক বেড়েছে শূন্য দশমিক ৬২ শতাংশ।
সিএসইতে গড়ে মোট লেনদেন হয়েছে ২৮৫টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৮১টির, কমেছে ৯১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৩টির। টাকার অংকে মোট লেনদেন হয়েছে ২২০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।
বিশ্লেষকদের মতে, দীর্ঘ দিন দরপতনের পর শেয়ার মূল্য অনেকটা কমে গেছে। ফলে বিনিয়োগ উপযোগী হয়ে উঠেছে দেশের পুঁজিবাজার। যার কারণ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি বিদেশীরা দেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে সক্রিয় হচ্ছেন। এতে করে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসায় বাজারে সক্রিয় হচ্ছেন তারা। এছাড়াও বড় মূলধনীয় কোম্পানি শেয়ারের দাম বাড়ার পাশাপাশি সদ্য সমাপ্ত বিভিন্ন কোম্পানির প্রান্তিকের প্রতিবেদনে মুনাফা বাড়ায় ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে বাজার।
দর বাড়ার শীর্ষে দশ কোম্পানি : ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহের লেনদেনে দর বাড়ার শীর্ষে উঠে এসেছে মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ। এ সময় কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে ২৬ দশমিক ৬২ শতাংশ বেড়েছে। সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের ক্লোজিং প্রাইস বিবেচনায় কোম্পানিগুলোর এ দর বেড়েছে। অপর কোম্পানিগুলোর মধ্যে যথাক্রমে- জিএসপি ফাইন্যান্সের ২৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ, ইয়াকিন পলিমারের ২১ দশমিক ৩৮ শতাংশ, এপেক্স স্পিনিংয়ের ২০ দশমিক ৩০ শতাংশ, ইভিন্স টেক্সটাইলের ১৮ দশমিক ৩০ শতাংশ, প্রাইম টেক্সটাইলের ১৭ দশমিক ০৭ শতাংশ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের ১৫ দশমিক ৫০ শতাংশ, ডেফোডিল কম্পিউটার্সের ১৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ, ফেডারেল ইন্স্যুরেন্সের ১৪ দমমিক ২৯ শতাংশ এবং ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্সের ১২ দশমিক ৬২ শতাংশ দর বেড়েছে।
দর হারানো দশ কোম্পানি : ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহের লেনদেনে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে সাভার রিফ্যাক্টরিজের। এ সময় কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে ১১ দশমিক ১৮ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের ক্লোজিং প্রাইস বিবেচনায় কোম্পানির এ দর কমেছে। লুজারের শীর্ষে থাকা অপর কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে- এপেক্স ফুডসের ৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ, রহিমা ফুডের ৮ দশমিক ০৬ শতাংশ, সিঙ্গার বাংলাদেশের ৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ, লিবরা ইনফিউশনসের ৬ দশমিক ৫২ শতাংশ, মেঘনা সিমেন্টের ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ, স্টাইলক্রাফটের ৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ, অ্যাম্বি ফার্মার ৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ, ডরিন পাওয়ারের ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং এপেক্স ফুটওয়্যারের ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ দর কমেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।