পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
ব্যাংক থেকে অতিরিক্ত টাকা তুলে নিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রথম নিলামে ব্যাংকগুলো ৭ দিন মেয়াদি বিলে শূন্য দশমিক ৫৪ শতাংশ সুদে দেড় হাজার কোটি আর শূন্য দশমিক ৭৫ সুদে বিনিয়োগ করেছে এক হাজার ১০০ কোটি টাকা। চলতি সপ্তাহে আরও সাতটি নিলাম হবে। এই নিলামের দুটি ৭ দিন ও ১৪ দিন করে আর তিনটি বিল ৩০ দিন মেয়াদি। এই বিলগুলো অলস টাকার বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে বাড়তি আয়ের সুযোগ করে দিয়েছে। ‘বাংলাদেশ ব্যাংক বিলে’ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ৭ ও ১৪ দিন মেয়াদে যে বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে, তাতে সুদহার ১ শতাংশের কম নির্ধারণ করা হয়েছে। ৭ দিন মেয়াদি বিলে ব্যাংকগুলো বার্ষিক শূন্য দশমিক ৫৪ শতাংশ সুদে বিনিয়োগ করবে ১ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা। ব্যাংকগুলো এই বিলের বিপরীতে সুদ হিসেবে আয় করবে ১৫ লাখ ৬২ হাজার ৮৮৪ কোটি টাকা। অন্যদিকে ১৪ দিন মেয়াদি বিলে বিনিয়োগ করা হয়েছে এক হাজার ১০০ কোটি টাকা। এই বিলের সুদহার নির্ধারণ করা হয়েছে শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ। এই বিলের বিপরীতে ব্যাংকগুলো সুদ হিসেবে আয় করবে ৩১ লাখ ৭৩ হাজার ৭৬ টাকা। সব মিলিয়ে ব্যাংকগুলোর মুনাফা ৪৭ লাখ ৩৫ হাজার ৯৬০ টাকা।
আপাতদৃষ্টিতে এই অর্থ নগণ্য মনে হলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক উদ্যোগ না নিলে এই অর্থ ব্যাংকগুলোর কোষাগারে যাওয়ার কথাই ছিল না। ব্যাংকিং খাতে ২ লাখ ৩১ হাজার কোটি অতিরিক্ত তারল্য, এর মধ্যে ৬২ হাজার কোটি টাকা একেবারেই অলস পড়ে আছে। এই অর্থ ব্যাংকিং খাতে একটি সমস্যাও তৈরি করেছে। টাকার অভাব নেই বলে ব্যাংকগুলো নতুন আমানত সংগ্রহে অনীহা দেখাচ্ছে। এতে আমানতের সুদহার কমতে কমতে বছরে দেড় থেকে দুই শতাংশেও নেমে এসেছে। এই অবস্থায় ব্যাংকে টাকা জমা করতে যারা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না, তাদের টাকা আবার অপব্যয় হচ্ছে বা অনুৎপাদনশীল খাতে চলে যাচ্ছে। ফলে বাড়ছে মূল্যস্ফীতি। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দুটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ‘বাংলাদেশ ব্যাংক বিল’ ছেড়ে অলস টাকা তুলে নেয়ার পাশাপাশি আমানতের সুদহার মূল্যস্ফীতির হারের চেয়ে কম হতে পারবে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করছে, তারা অতিরিক্ত টাকা তুলে নিলে ব্যাংকগুলো আবার আমানত সংগ্রহ আগ্রহী হবে। সোমবার এই বিলের প্রথম দুটি নিলাম হয়। এরপর হবে আরও সাতটি। কয়েকটি ব্যাংক প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেয়ার আবেদন করে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা তুলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ৭ ও ১৪ দিন মেয়ালি বিলের ওপর পরের নিলাম হবে ১৬ ও ২৫ আগস্ট। সব মিলিয়ে নিলাম হবে চারটি। অন্যদিকে ৩০ দিন মেয়াদি বিলের ওপর প্রথম নিলাম হবে ১১ আগস্ট। পরের দুটি নিলাম হবে ২৩ ও ৩১ আগস্ট।
বর্তমানে আন্তঃব্যাংক কলমানিতে সর্বনিম্ন সুদ ১ শতাংশ এবং আন্তঃব্যাংক রেপোতে শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ বার্ষিক সুদহার নির্ধারিত আছে। সর্বনিন্ম এই সুদে টাকা খাটানোর পরও অধিকাংশ ব্যাংকের কাছে অলস টাকা থাকছে। বাংলাদেশ ব্যাংক তো আর এই টাকা বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করবে না। ফলে যেটুকু সুদ দিচ্ছে একেবারে ফেলে না রেখে তাতেই ব্যাংকগুলো খুশি।
সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক বিলের নিলাম হয়। ওই দিন একটি ব্যাংক মাত্র শূন্য দশমিক শূন্য ২ শতাংশ তথা ২ পয়সা সুদে ৭ দিনের জন্য ১৫০ কোটি টাকা রেখেছিল। এরপর থেকে নিলাম বন্ধ ছিল। বাজারে উদ্বৃত্ত তারল্য বেড়ে যাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীকে চিঠি দিয়ে নিলামের বিষয়টি জানানো হয়।
নিলামের আগেই জানা যাচ্ছিল সুদের হার কত হতে পারে। আর সুদহার কম হলেও ব্যাংকগুলো বিনিয়োগে অনাগ্রহী হবে না, এটা ধারণা ছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের।
ব্যাংক ও আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থার মুখপাত্র সিরাজুল হক বলেন, ব্যাংকের হাতে অলস তারল্যের বিপরীতে ব্যাংকের কোনো আয় নেই। এ অবস্থায় ‘বাংলাদেশ ব্যাংক বিলে’ বিনিয়োগ করে যে অর্থই পাওয়া যাবে, সেটি ব্যাংকের জন্য মঙ্গল। কলমানি বাজারের সুদহার এখন ১ শতাংশের নিচে। সরকারি ট্রেজারি বিলের ইল্ডহারও ১ শতাংশের বেশি নয়। এ অবস্থায় ‘বাংলাদেশ ব্যাংক বিল’ এর ইল্ড অনেক বেশি প্রত্যাশা করা ঠিক নয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিয়ে এর বিপরীতে সুদহার কম রাখার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, সুদহার কম না হলে ব্যাংকগুলো বেসরকারি খাতে ঋণ না দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বেশি বিনিয়োগ করতে চাইবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।