Inqilab Logo

বুধবার ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ডিজিটাল সিস্টেম হ্যাক লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৯ আগস্ট, ২০২১, ১২:০১ এএম

হ্যাকার চক্র দেশের বেশ কিছু বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল সিস্টেম হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। চক্রটি বাংলাদেশের প্রথম সারির এয়ারলাইন্স, প্রসিদ্ধ বাস কোম্পানি, চেইন-আউটলেটসহ স্বনামধন্য অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নেটওয়ার্ক সিস্টেম হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করেছে। এ চক্রের তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি)। গতকাল রোববার এসব তথ্য জানান সিটিটিসির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।

এসময় বলা হয়েছে, রাজধানীর মিরপুর, নওগাঁ এবং গাইবান্ধা এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা হলো- মো. নাসিমুল ইসলাম, রেহানুর হাসান রাশেদ ও রাইসুল ইসলাম। তাদের কাছ থেকে হ্যাকিংয়ের কাজে ব্যববহৃত ছয়টি মোবাইল ফোন সেট, দুটি ল্যাপটপ, একটি সিপিইউ, ক্রিপ্টোকারেন্সি, নগদ টাকা, ইলেকট্রনিক্স কার্ড ও স্বপ্ন ই-ভাউচারের মাধ্যমে সংগ্রহ করা বিপুল পরিমাণ পণ্য জব্দ করা হয়।

তিনি বলেন, সুপার শপ স্বপ্নের ডিজিটাল সিস্টেম হ্যাক করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ডিএমপির সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের একটি দল। আটক চক্রটি সুপার স্বপ্নের ডিজিটাল সিস্টেম হ্যাক করে ১৮ লাখ টাকা মূল্যের ডিজিটাল ভাউচার তৈরি করে তা আত্মসাৎ করে। এ চক্রের মূলহোতা নাসিমুল হক একজন প্রকৌশলী। অপররা হলেন রাশেদ এবং রাইসুল। এদের মধ্যে নাসিমুলকে নওগাঁ থেকে, রাশেদকে গাইবান্ধা থেকে ও রাইসুলকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সুপারশপ স্বপ্ন তাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সারাদেশে ১৮৬টি আউটলেটের সেলস মনিটরিং, ইনভেন্টরি, ম্যানেজমেন্ট, কর্মী ব্যবস্থাপনা, আর্থিক লেনদেনের হিসাব, ডিজিটাল ভাউচার ম্যানেজমেন্টসহ সকল ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। স্বপ্নের ডিজিটাল সিস্টেমটি তাই অ্যাডভান্স সাইবার সিকিউরিটি প্রটোকল অনুযায়ী অত্যন্ত সুরক্ষিত করে তৈরি করা হয়েছিল। গত ২৬ জুন থেকে ৯ জুলাইয়ের মধ্যে স্বপ্নের শক্তিশালী সাইবার ব্যবস্থাকে ব্রিচ করে বিপুল অঙ্কের অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক ডিজিটাল ভাউচার জেনারেট করা হয়। বিষয়টি স্বপ্নের নজরে এলে তারা ডিএমপির সিটিটিসি বিভাগের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশনের কাছে অভিযোগ করেন।

পরে সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেন। সিটি-সাইবার ক্রাইম তদন্ত দলের একটি চৌকস টিম স্বপ্ন সুপার শপের ডিজিটাল সিস্টেমের ফরেনসিক বিশ্লেষণ ও রিজার্ভ এনালাইসিস করে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে হ্যাকার চক্রটির ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট শনাক্ত করে।

গ্রেফতারকৃতদের বরাত দিয়ে ডিএমপির এ গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, এ চক্রটি স্বপ্নের ডিজিটাল সিস্টেম হ্যাক করে ১৮ লাখ টাকা দামের ডিজিটাল ভাউচার ফেসবুক গ্রæপের মাধ্যমে ২৫ শতাংশ ছাড়ে কয়েকটি ই-কমার্স ইউজারদের কাছে বিক্রি করে। এভাবে তারা জালিয়াতির মাধ্যমে বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিভিন্ন ক্রিপ্টোকারেন্সি একাউন্টে জমা করে। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে জব্দ করা ডিজিটাল ডিভাইস থেকে ২০ লাখ টাকা সমমূল্যের ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়।

তিনি আরো বলেন, সুচতুর এই হক্যারদের কাছ থেকে সরকারি-বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানের সিস্টেমের একসেস রয়েছে। তারা বিভিন্ন ডার্ক ওয়েব মার্কেট থেকে ক্রিপ্টোকারেন্সির বিনিময়ে ক্রিডেনশিয়াল কেনে, যা ভাউচার তৈরির ক্ষেত্রে ব্যবহত হয়। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডিজিটাল সিস্টেম
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ