Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ভূমি সংস্কার বোর্ডের ক্ষমতা বৃদ্ধি করছে সরকার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ আগস্ট, ২০২১, ১২:০০ এএম

মাঠ পর্যায়ে ভূমি ব্যবস্থাপনা গতিশীল করার লক্ষ্যে ভূমি সংস্কার বোর্ডের ক্ষমতা বৃদ্ধি করছে সরকার। ভূমি ব্যবস্থাপনায় গতিশীলতা আনয়ন এবং ভূমি সেবা ডিজিটাইজেশন কার্যক্রমকে আরো বেগবান করার লক্ষ্যে ভূমি সংস্কার বোর্ড অধ্যাদেশ, (১৯৮৯ এর ৫কে) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ভূমি সংস্কার বোর্ডের দায়িত্বসমূহ হালনাগাদ করে একটি পরিপত্র জারি করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়।

গত ৫ আগস্ট ২০২১ ভূমি সচিব মো মোস্তাফিজুর রহমান পিএএ স্বাক্ষরিত ২৩টি দায়িত্ব সম্বলিত এ পরিপত্র জারি হয়। গতকাল শনিবার মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, ভূমি সংস্কার বোর্ডের হালনাগাদকৃত দায়িত্বসমূহের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ই-মিউটেশনসহ ভূমিসেবা অটোমেশনের সকল কার্যক্রমের মাঠ পর্যায়ের লজিস্টিক সাপোর্ট প্রদান ও তদারকি এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের ডিজিটাল সেল এর সাথে সমন্বয় সাধন এবং অনলাইন ভূমি উন্নয়ন কর আদায় কার্যক্রমের ব্যবস্থাপনা ও তদারকি। পরিপত্র অনুযায়ী উপজেলা ভূমি অফিস ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসের বাজেট প্রণয়ন, ছাড়করণ ও ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করবে বোর্ড। এছাড়া জেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত ভূমি ব্যবস্থাপনার আওতায় সকল ভূমি অফিস ব্যবস্থাপনা, তত্ত্বাবধান, পরিদর্শন এবং পরিবীক্ষণ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ভূমি ব্যবস্থাপনার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী যারা ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিযোগকৃত তাদের আন্তঃবিভাগ বদলি এবং অন্যান্য প্রশাসনিক কার্যক্রম (নিয়োগ ও পদোন্নতি ব্যতীত) পরিচালনা করা।

পরিপত্রে আরো বলা হয়, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণে অর্পিত/অনাবাসি ও পরিত্যক্ত সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা ও তদারকি, সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের নিয়ন্ত্রণ, সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা ও তদারকি এবং ষাণমাসিক/বার্ষিক প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করতে বলা হয়। কোর্ট অব ওয়ার্ডস এর আওতাধীন এস্টেটসমূহের ব্যবস্থাপনা ও তদারকি এবং মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রেরণ এবং ভ‚মি ব্যবস্থাপনায় মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্তের ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে ভূমি সংস্কার বোর্ড। উপর্যুক্ত ৮টি দায়িত্ব ছাড়াও আরও ১৫টি দায়িত্বের কথা বলা হয়েছে পরিপত্রে।

ভূমি সংস্কার বোর্ডের পটভূমি পরিপত্রে তুলে বলা হয়, ভারতের নামমাত্র মুঘল সম্রাট থেকে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দিওয়ানি তথা রাজস্ব আহরণের ক্ষমতা ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি লাভের বেশ কয়েকবছর পর ১৩ই আগস্ট ১৭৭২ সনে রাজস্ব প্রশাসন পরিচালনার জন্য তৎকালীন গভর্নর জেনারেল অব ফোর্ট উইলিয়াম কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয় বোর্ড অব রেভিনিউ। এরপর বিভিন্ন সময়ে কমিশনার, কালেক্টর পদ সৃষ্টি এবং রাজস্ব বোর্ড গঠনের মাধ্যমে ভ‚মি ব্যবস্থাপনার প্রশাসনিক কাঠামো গঠন করা হয়।

স্বাধীনতা পরবর্তী ১৯৭২ সনে বোর্ড অব রেভিনিউ বিলুপ্ত হলে বোর্ডের সকল দায়িত্ব তৎকালীন ভূমি প্রশাসন ও ভূমি সংস্কার মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভুক্ত হয় এবং মাঠ পর্যায়ের রাজস্ব অফিসসমূহ তদারকি ও পরিদর্শনের দায়িত্ব ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনুবিভাগ ভূমি সংস্কার কমিশনার কার্যালয়-এর অধীন একজন ভূমি সংস্কার কমিশনার (যুগ্মসচিব) এবং তৎকালীন চার বিভাগের জন্য চারজন উপ-ভূমি সংস্কার কমিশনারকে (উপসচিব) দেয়া হয়। এ ব্যবস্থাপনায় মাঠ পর্যায়ে ভূমি প্রশাসন পরিচালনা, আপিল নিষ্পত্তি ইত্যাদি অতিরিক্ত দায়িত্ব ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপর ন্যস্ত করা হলে তা নীতি নির্ধারণের মূল দায়িত্বের সাথে অতিরিক্ত চাপের সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে বিষয়টি জাতীয় সংসদে উত্থাপিত হলে ভূমি প্রশাসন বোর্ড এ্যাক্ট, ১৯৮০ আইন পাস হয়। ১৯৮২ সালের শেষদিকে ভূমি প্রশাসন বোর্ড-এর কার্যক্রম শুরু হয়।

সরকারের ভূমি সংস্কার অভিযান জোরদার হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় ভূমি সংস্কার কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৯৮৯ সনের ১৬ মার্চ ভূমি সংস্কার বোর্ড অধ্যাদেশ, ১৯৮৯ ও ভূমি আপীল বোর্ড অধ্যাদেশ, ১৯৮৯ মোতাবেক তৎকালীন ভূমি সংস্কার কমিশনারের কার্যালয়কে অবলুপ্ত ও ভূমি প্রশাসন বোর্ডকে ভেঙে যথাক্রমে ভূমি সংস্কার বোর্ড ও ভূমি আপীল বোর্ড নামে দুটি পৃথক বোর্ড সৃষ্টি করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভূমি সংস্কার বোর্ড
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ