Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪, ২০ আষাঢ় ১৪৩১, ২৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

রামপালবিরোধী কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ ও পুলিশের বাধা

প্রকাশের সময় : ১ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

যুক্তিতে পরাজিত হয়ে সরকার শক্তির আশ্রয় নিচ্ছে -জাতীয় কমিটি
স্টাফ রিপোর্টার : রামপালে কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত সাইকেল শোভাযাত্রায় বাধা দিয়েছে ছাত্রলীগ। পরে শোভাযাত্রা বের হলে তাদের ওপর জলকামান নিয়ে ধাওয়া করে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে সুন্দরবন রক্ষার পক্ষে কর্মসূচির উপর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী বাহিনী ও পুলিশের সন্ত্রাসী হামলায় আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি। তাদের মতে, তরুণদের স্বতঃস্ফূর্ত উদ্যোগে আহূত এই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে এরকম ন্যাক্কারজনক হামলার মাধ্যমে সরকার নিজেদের নৈতিকভাবে এবং যুক্তিতে পরাজিত হিসেবে প্রমাণ করলো।
গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানোর জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ও সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, শহীদ মিনারে তরুণদের স্বতঃস্ফূর্ত উদ্যোগে বাঁচাও আন্দোলন শ্লোগানে সুন্দরবন বিনাশী রামপাল প্রকল্প বাতিলের দাবিতে একটি সাইকেল র‌্যালী কর্মসূচি ছিল। এই কর্মসূচি বানচাল করার জন্য ছাত্রলীগ আগে থেকেই শহীদ মিনারে অবস্থান গ্রহণ করে এবং সাইকেল র‌্যালী বের হতে গেলে তাদের উপর আক্রমণ করে। এছাড়া সাইকেল র‌্যালীতে যোগদানের জন্য ঢাকা শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যারা যোগ দিতে আসছিলেন পথে পথে তাদের উপর হামলা করা হয় এবং সাইকেল ভাঙচুরসহ তাদের জখম করা হয়। শহীদ মিনারে অংশগ্রহণকারীরা অবরুদ্ধ অবস্থাতেই গান, কবিতা ও শ্লোগানের মাধ্যমে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখে। সরকার, কোম্পানি ও একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার তত্ত্বাবধানে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী বাহিনী বিভিন্ন হল থেকে জোরপূর্বক প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পক্ষে শহীদ মিনারে সন্ত্রাসী তৎপরতায় যোগ দিতে বাধ্য করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কয়েক ঘণ্টা ধরে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী তৎপরতা চলাকালে উপস্থিত পুলিশ নীরব ও রহস্যজনক ভূমিকা পালন করে। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে সাইকেল নিয়ে প্রায় ১০০ জন শহীদ মিনারে হাজির হন। তাঁরা শহীদ মিনারে অবস্থান নেন। এর কিছুক্ষণ পরই সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানার নিয়ে ছাত্রলীগের শতাধিক নেতা-কর্মী সেখানে উপস্থিত হন। তাঁরা শহীদ মিনারের চারপাশ ঘিরে মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে পড়েন। তাদের ব্যানারে লেখা ছিল, আমরা রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র চাই।
সাইকেল র‌্যালীতে বাধা সরকারের
নৈতিক পরাজয় Ñন্যাপ
দেশের স্বার্থ পরিপন্থী সুন্দরবনের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিরুদ্ধে ‘বাঁচাও সুন্দরবন’ নামে ফেসবুকের একটি গ্রুপের সাইকেল র‌্যালীতে সরকারী ছাত্র সংগঠনের বাধা এবং র‌্যালী প- করতে পুলিশ কর্তৃক আন্দোলনকারীদের উপর পানিকামান ব্যবহারের তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ক্ষোভ জানিয়েছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া।
গতকাল শুক্রবার গণমাধ্যমে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেছেন, সুন্দরবন বিরোধী সাইকেল র‌্যালী সরকার পতন আন্দোলনের কোন কর্মসূচী ছিল না। এটি সরকারের দেশের স্বার্থ বিরোধী কর্মকা-ের প্রতিবাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী। অথচ এই ধরনের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী বানচালের জন্য নিজ দলের ছাত্র সংগঠন ও পুলিশ ব্যবহারের মাধ্যমে সরকারের নৈতিক পরাজয় ঘটেছে।
নেতৃদ্বয় সরকারকে স্বার্থান্বেষী মহল দ্বারা পরিচালিত না হয়ে, একগুঁয়েমী পরিহার করে নির্মোহ অনুসন্ধান করে রামপাল প্রকল্প চুক্তি বাতিল করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ইউনেস্কো রিপোর্ট, বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ ও প্রবল জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অবিলম্বে রামপাল প্রকল্প বাতিল করুন। দেশের অর্থনীতি ও পরিবেশের জন্য ব্যাপক ক্ষতিকর এবং স্বার্থ বিরোধী রামপাল চুক্তিতে জনগণের সম্মতি না থাকলেও সুন্দরবন ধ্বংস করে সরকার ভারতের স্বার্থ রক্ষায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। দেশি-বিদেশি শোষকদের ষড়যন্ত্রে বাংলাদেশের ফুসফুস সুন্দরবন চরম হুমকির মুখে। রামপাল চুক্তি বাস্তবায়নে দেশের পরিবেশ হুমকির মুখে পড়বে। প্রকৃতির মহাপ্রাণ সুন্দরবনকে রক্ষা করতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রামপালবিরোধী কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ ও পুলিশের বাধা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ