Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চলাচল অযোগ্য পরিবহনের কারণেই মিল্কিওয়ে শিপিংয়ের বার্জ ডুবি : ঠিকাদারের নিকট থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের তাগিদ

বিএডিসি এবং মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়- সংসদীয় কমিটি

প্রকাশের সময় : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : চলাচল অযোগ্য পরিবহন ভাড়া করার কারণেই ঠিকাদার মেসার্স মিল্কিওয়ে শিপিং লাইন্স প্রাইভেট লিমিটেডের সারভর্তি বার্জ পানিতে তলিয়ে গেছে বলে প্রমাণ মিলেছে। অথচ বিএডিসি এবং মন্ত্রণালয় ঠিকাদারের পক্ষ নিয়ে ক্ষতিপূরণ আদায় না করেই তাকে দায় দায়মুক্তি দিয়েছে। যে কারণে সরকারের ৪ কোটি ৩০ লাখ ১১ হাজার ৮১৯ টাকা ক্ষতি হয়েছে। 

গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপস্থাপিত মহাহিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের বার্ষিকনিরীক্ষা প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। বার্জ ডুবি নিয়ে বিএডিসি এবং মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয় উল্লেখ করে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম মূল্যের বীমা করা এবং খারাপ পরিবহন ভাড়া করতে সহযোগিতা প্রদানকারী দায়ী কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সিএন্ডএফের নিকট থেকে অনাদায়ী আগামী ৩০ দিনের মধ্যে আদায় করার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
কমিটির সভাপতি ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য এ কে এম মাঈদুল ইসলাম, মো. আব্দুস শহীদ, মোহাম্মদ আমানউল্লাহ, পঞ্চানন বিশ্বাস, মো. রুস্তম আলী ফরাজী, মো. অফসারুল আমীন, মো. শামসুল হক টুকু এবং মইন উদ্দীন খান বাদল অংশ নেন। সড়ক ও জনপথ বিভাগের সচিব এম এ এন ছিদ্দিক, সমবায় বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. প্রশান্ত কুমার রায়, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব অশোক মাধব রায়, কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, অডিট অফিসের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে কৃষি, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক, যোগাযোগ, খাদ্য ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় অধিনস্ত ৬টি প্রতিষ্ঠানের ২০০৮-২০০৯ অর্থ বছরের হিসেবের উপর প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। বৈঠকে জানানো হয়, বাঘাবাড়ি দুগ্ধ কারখানার মিনারেল ওয়াটার বোটলিং প্লান্ট স্থাপনের নিমিত্ত মেশিনারিজ আমদানী এবং প্রকল্প এলাকায় প্লান্ট ভবন, গোডাউন নির্মাণ করায় প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হয়েছে ২২ কোটি ৭৩ লাখ ৬০ হাজার ৬৩০ টাকা। ঢাকা ডেইরি প্লান্ট (ডিডিপি) ও বাঘাবাড়ি ঘাট ডেইরি প্লান্টের (বিডিপি) আল্ট্রা হাই টেম্পারেচার মিল্ক প্লান্টের সমুদয় মেশিন ও যন্ত্রপাতি স্থাপন করার দীর্ঘদিন পরও উৎপাদনে যেতে সক্ষম না হওয়ায় সরকারের ক্ষতি হয়েছে ২১ কোটি ১১ লাখ ৬৭ হাজার ৬১৭ টাকা।
এছাড়া যথাযথ কর্তৃপক্ষ সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত না নিয়ে প্রথমবার টেন্ডারে প্রাপ্ত নিম্নতর দর বাতিল করে পুনরায় একই প্রতিষ্ঠনকে অতিরিক্ত মূল্য/দরে কার্যাদেশ দিয়ে এমওপি সার ক্রয় করায় সরকারের ক্ষতি ৬৯ কোটি ৬৩ লাখ ১১ হাজার ২০ টাকা, প্রাধিকার বহির্ভূতভাবে প্রতিষ্ঠানের গাড়ি সার্বক্ষণিক ব্যবহার এবংইটএ/ডিএ গ্রহণ করায় প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি ১৪ লাখ ৩৩ হাজার ২৮৬ টাকা, ক্রয়াদেশের শর্তানুযায়ী লিকেজ পলি ফিল্ম ফেরত প্রদান না করায় প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি ১২ লাখ ৬৪ হাজার ৯০০ টাকা, চুক্তির শর্ত লংঘন করে দোকান বরাদ্দ গ্রহিতার নিকট ভাড়া আদায় না করা এবং ভাড়াটিয়াদের নিকট হতে বিদ্যুৎ বিলের টাকা আদায় না করে নিজস্ব তহবিল হতে প্রদান করায় সংস্থার ক্ষতি ২৫ লাখ ৭ হাজার ৯৪৮ টাকা, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তিপত্রের শর্তানুযায়ী ব্যর্থ হওয়ায় চার্জ বাবদ ৩ কোটি ৭৭ লাখ ৩১ হাজার ৪৫৭ টাকা অনাদায়ী, বিদেশ থেকে নগদ অর্থে ক্রয়কৃত পণ্য সমুদ্রপথে আনয়নকালে ঘাটতিকৃত পণ্যের মূল্য সরবরাহকারীর নিকট হতে আদায় না করায় ক্ষতি ১৩ কোটি ৩০ লাখ ৩ হাজার ৯৫১ টাকা, আমদানীকৃত গম মংলা বন্দরে খালাসের সময় ঘাটতিকৃত মূল্য আদায় না করায় সরকারের ক্ষতি ৪৫ লাখ ৬৭ হাজার ৬৫০ টাকা, নৌপথে পরিবহনকালে ঠিকাদারের অবহেলায় চাল ঘাটতি হওয়া সত্ত্বেও ঠিকাদারের নিকট থেকে জরিমানা আদায় না করায় সরকারের ক্ষতি ২১ লাখ ২৮ হাজার ৯৩৮ টাকা, দরপত্র আহবান ছাড়াই মাসিক চার্টার ভাড়া নির্ধারন কমিটি নির্ধারিত প্রাক্কলিত ভাড়া অপেক্ষ কম ভাড়ায় নৌযানের চার্টার চুক্তি নবায়ন করায় সংস্থার ক্ষতি ৬৮ লাখ ৩৬ হাজার ৫০৮ টাকা এবং বিআইডব্লিউটিসি’র দোকানের ভাড়া বৃদ্ধি করা হলেও ডাকা ঘাট কর্তৃপক্ষ বর্ধিত ভাড়া আদায় না করায় ৪৬ লাখ ৪৯ হাজার ৮০৪ টাকা ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া পাটুরিয়া ঘাটে ফেরীতে গাড়ী পারাপারের ডুিপ্লকেট টিকেট ছাপিয়ে বিক্রী করে জালিয়াতির মাধ্যমে আতœসাৎকৃত অর্থ আদায়ের পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় ৮ লাখ ১৪ হাজার ৩০০ টাকা ক্ষতি হয়েছে বরে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। কমিটি ভবিষ্যতে যাতে এধরনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য সচিবকে তদারকী জোরদার করা এবং দায়েরকৃত মামলার তদারকী জোরদারের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তির সুপারিশ করে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ