Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শেখ হাসিনা আলোকিত বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি

প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এনামুল হক শামীম : গতকাল বুধবার দিনটি ছিল (২৮ অক্টোবর) আমাদের জন্য, বাংলাদেশের জন্য একটি শুভদিন, বাংলার মানুষের জন্য আশীর্বাদের দিন। দিনটি আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭০তম শুভ জন্মদিন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জ্যেষ্ঠ সন্তান শেখ হাসিনা ১৯৪৭ সালের এই দিনে মধুমতি নদী বিধৌত গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। সরল সহজ সাদামাঠা জীবনের অধিকারী শেখ হাসিনার গোটা জীবন নানান আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অতিক্রম হচ্ছে। বর্ণাঢ্যময় রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী শেখ হাসিনা ছাত্রজীবন থেকেই বাঙালীর অধিকার আদায়ের দাবিতে রাজপথে অগ্রণী সৈনিক। দূরদর্শিতার চিহ্ন যিনি ইতোমধ্যে রেখে চলেছেন সারা বিশ্বে। শেখ হাসিনা আজ তাই বাংলাদেশের গ-ি পেরিয়ে বিশ্ব নেত্রী। আমি খুব বিস্মিত হই যখন দেখি পরিবারের সবাইকে একই রাতে হারাবার পরও কিভাবে একজন মানুষ সারা দেশের মানুষকে পরিবারের সদস্য করে নিতে পারেন!
নিজের জীবন বাজি রেখে কিভাবে একজন মানুষ শত প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়েও এগিয়ে যেতে পারে, সারা বিশ্বে তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত শেখ হাসিনাই। ছাত্রলীগের একজন কর্মী হিসেবে ছোটবেলা থেকেই জননেত্রী শেখ হাসিনাকে খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর মতো জননেত্রী শেখ হাসিনার চরিত্রে অসাধারণ গুণ বিদ্যমান- তার মধ্যে অন্যতম হলো, মানুষের প্রতি বিশ্বাস-ভালবাসা, ধৈর্য ও ক্ষমাশীলতা।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে পিতা বঙ্গবন্ধু এবং মাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ সবাই ঘাতকদের হাতে নির্মমভাবে শহীদ হন। সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের ভেতর দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি কালো অধ্যায়ের সূচনা হয়। এর পরের কয়েকটি বছর তো কেটেছে এক অনিশ্চিত অবস্থার ভেতর দিয়ে। সেই অবস্থার পরিবর্তন সূচিত হয় ১৯৮১ সালের ১৭ মে। সেদিন বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখেন সর্বস্বহারা শেখ হাসিনা। কা-ারীবিহীন, দিগ্ভ্রান্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দেশে ফিরে আসেন তিনি। সে সময়ে দেশের বাইরে ছিলেন বলেই ঘাতকের বুলেট তাই তাঁকে তখন স্পর্শ করতে পারেনি। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীসহ দেশের সব মানুষেরই ভরসা ছিল এই যে, একদিন ফিরবেন তিনি। ধরবেন দলের হাল। পিতার আদর্শ বাস্তবায়নে এগিয়ে নিয়ে দলকে, সর্বোপরি দেশকে। ফিরলেন তিনি। সেদিন আকাশ ভেঙ্গে নেমেছিল অঝোর ধারার বর্ষণ। সঙ্গে ছিল ঝড়ো হাওয়া। এ বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া যেন ছিল প্রতীকী একটি ব্যাপার। নতুন করে ঝড় তুলতেই দেশের মাটিতে পা রেখেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকন্যা। না, তিনি তো তখন আর বঙ্গবন্ধুকন্যা শুধু নন। বাংলা মায়ের সন্তান তিনি। ফিরে এলেন আবার সেই মায়েরই কোলে। দুঃখিনী যে মাকে এতদিন ধরে সামরিকতন্ত্রের বিধি-নিষেধের দেয়ালে বেঁধে রাখা হয়েছিল, সেই মাকে মুক্ত করতেই তো তাঁর আগমন। বাংলা মায়ের দুর্গতিনাশিনী হয়ে তিনি এলেন। পা রাখলেন ঢাকার মাটিতে। মানিক মিয়া এভিনিউয়ের জনসমুদ্রে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি উচ্চারণ করলেন, আমি নেতা নই, আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নে কর্মী মাত্র। আমি আমার জীবন আপনাদের জন্য, সোনার বাংলার দুঃখী মানুষের জন্য, গণতন্ত্র কায়েমের জন্য দান করে দিতে চাই। সব হারিয়ে আজ আমি এসেছি বাংলার মানুষের মুক্তির সংগ্রামে অংশ নিতে। আমার আজ হারানোর কিছু নেই। সেদিন ছাত্রলীগের একজন কর্মী হিসেবে নেত্রীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিনে উপস্থিত ছিলাম। শেখ হাসিনা তাঁর কথা রেখেছেন। তিনি আদর্শগত দেউলিয়াপনাকে উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। যার বিপরীতে ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মতো ১৯ বার তাঁকে হত্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে। ষড়যন্ত্রকারীরা জানে, শেখ হাসিনা স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের পর বাংলাদেশের রাজনীতি নতুন বার্তা পেয়েছে। পথ হারানো জাতি, দিশা পেয়েছে। তৃণমূল থেকে উঠে আসা ঐতিহ্যবাহী দল আওয়ামী লীগ নতুন প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেছে। জনগণের প্রত্যশা পূরণের লক্ষ্যে শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছেন। তাই বঙ্গবন্ধুর মতো শেখ হাসিনা আজ ষড়যন্ত্রকারীদের কাছে আতঙ্ক। ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে শেখ হাসিনা ৩টি সংসদীয় আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। এই নির্বাচনের পরেই দেশ থেকে সামরিক আইন প্রত্যাহার করে সাংবিধানিক প্রক্রিয়া শুরু হয়। শেখ হাসিনা নব্বইয়ের ঐতিহাসিক গণআন্দোলনের নেতৃত্ব প্রদান করেন এবং এই আন্দোলনের মুখে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর এরশাদ সরকার পদত্যাগে বাধ্য হয়। ১৯৯১ সালের সংসদীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনা পঞ্চম জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা নির্বাচিত হন। তিনি প্রেসিডেন্ট শাসিত সরকার ব্যবস্থা পরিবর্তন করে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনের জন্য রাজনৈতিক দলসহ সকলকে সংগঠিত করেন। ১৯৯৬ সালে বিএনপি’র ভোটারবিহীন নির্বাচনের বিরুদ্ধে তিনি গণআন্দোলন গড়ে তোলেন। এই আন্দোলনের মুখে ৩০ মার্চ তৎকালীন খালেদা জিয়ার সরকার পদত্যাগে বাধ্য হয়।
দীর্ঘ ২১ বছর পর জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন প্রথম বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন। সরকার গঠন করে বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচারের আওতায় এনে আমাদের দায়মুক্ত করেছেন। ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে শেখ হাসিনা সরকারের উল্লেখযোগ্য সাফল্যগুলো ছিল: ভারতের সাথে ৩০ বছর মেয়াদী গঙ্গা নদীর পানি চুক্তি, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি, যমুনা নদীর উপর বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণ এবং খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ং-সম্পূর্ণতা অর্জন। এছাড়া, তিনি কৃষকদের জন্য বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মসূচি এবং ভূমিহীন, দুস্থ মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি চালু করেন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: দুস্থ মহিলা ও বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বয়স্কদের জন্য শান্তি নিবাস, আশ্রয়হীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প।
২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে আওয়ামী লীগ পরাজয় বরণ করে। শেখ হাসিনা বিরোধীদলের নেতা নির্বাচিত হন। ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকার ক্ষমতা হস্তান্তরে জটিলতা সৃষ্টি করলে সামরিক বাহিনী সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেই রাজনীতি থেকে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে মাইনাস করতে নানা ষড়যন্ত্র চক্রান্ত শুরু করে। তারা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করে কারান্তÍরীণ করে রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াতে চাপ প্রয়োগ করে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যার দৃঢ়তার কাছে সেই চক্রান্ত সফল হয়নি। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে জননেত্রী গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যেতে নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মীদের। তারা বাধ্য হয়ে নির্বাচন দেন। সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় বারের মতো নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসে। ২০০৯-২০১৩ মেয়াদে শেখ হাসিনা সরকারের উল্লেখযোগ্য অর্জনগুলোর মধ্যে রয়েছে বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা ১৩,২৬০ মেগাওয়াটে উন্নীতকরণ, গড়ে ৬ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন, ৫ কোটি মানুষকে মধ্যবিত্তে উন্নীতকরণ, ভারত ও মায়ানমারের সাথে সামুদ্রিক পানিসীমা বিরোধের নিষ্পত্তি, প্রতিটি ইউনিয়নে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন, মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীর মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, কৃষকদের জন্য কৃষিকার্ড এবং ১০ টাকায় ব্যাংক হিসাব খোলা, বিনা জামানতে বর্গাচাষীদের ঋণ প্রদান, চিকিৎসাসেবার জন্য সারাদেশে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার কম্যুনিটি ক্লিনিক এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন, দারিদ্র্যের হার ২০০৬ সালের ৩৮.৪ থেকে ২০১৩-১৪ বছরে ২৪.৩ শতাংশে হ্রাস, জাতিসংঘ কর্তৃক শেখ হাসিনার শান্তির মডেল গ্রহণ ইত্যাদি। ২০১৪ সালের পর এ পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য সাফল্যগুলোর মধ্যে রয়েছে: বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীতকরণ, ভারতের পার্লামেন্ট কর্তৃক স্থল সীমানা চুক্তির অনুমোদন এবং দুই দেশ কর্তৃক অনুসমর্থন, (এরফলে দুই দেশের মধ্যে ৬৮ বছরের সীমানা বিরোধের অবসান হয়েছে), মাথাপিছু আয় ১,৩১৪ ডলারে উন্নীতকরণ, দারিদ্র্যের হার ২২.৪ শতাংশে হ্রাস, ২৫ বিলিয়ন ডলারের উপর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন শুরু ইত্যাদি
শান্তি প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখার জন্য বিশ্বের বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতিষ্ঠান শেখ হাসিনাকে বিভিন্ন ডিগ্রি এবং পুরস্কার প্রদান করে। যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন ইউনিভার্সিটি, ব্রিজপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয়, জাপানের ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয়, স্কটল্যান্ডের অ্যাবারটে বিশ্ববিদ্যালয়, ভারতের বিশ্বভারতী এবং ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়, অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ব্রাসেলসের বিশ্ববিখ্যাত ক্যাথলিক বিশ্ববিদ্যালয়, রাশিয়ার পিপলস ফ্রেন্ডশিপ বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্টেট ইউনিভার্সিটি অব পিটার্সবার্গ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে। এছাড়া ফ্রান্সের ডাওফি বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ডিপ্লোমা প্রদান করে। সামাজিক কর্মকা-, শান্তি ও স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে অসামান্য ভূমিকার জন্য শেখ হাসিনাকে বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা সম্মানিত করেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে সুদীর্ঘ ২৫ বছরের গৃহযুদ্ধ অবসানের ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৯৮ সালে ইউনেস্কো তাঁকে ‘হুপে-বোয়ানি’ ((Houphouet-Boigny) ) শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করে।
রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও মানবাধিকারের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসিকতা ও দূরদর্শিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের রানডলপ ম্যাকন উইমেন্স কলেজ ২০০০ সালের ৯ এপ্রিল মর্যাদাসূচক ‘Pearl S. Buck ’99 পুরস্কারে ভূষিত করে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ক্ষুধার বিরুদ্ধে আন্দোলনের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ শেখ হাসিনাকে সম্মানজনক ‘সেরেস’ (CERES) মেডেল প্রদান করে। সর্বভারতীয় শান্তিসংঘ শেখ হাসিনাকে ১৯৯৮ সালে ‘মাদার টেরেসা’ পদক প্রদান করে। ১৯৯৮ সালে আন্তর্জাতিক রোটারি ফাউন্ডেশন তাঁকে Paul Haris ফেলোশিপ প্রদান করে। পশ্চিমবঙ্গ সর্বভারতীয় কংগ্রেস ১৯৯৭ সালে তাঁকে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু স্মৃতি পদক প্রদান করে। আন্তর্জাতিক লায়ন্স ক্লাব কর্তৃক ১৯৯৬-১৯৯৭ সালে তিনি ‘Medal of Distinction পদক ও ১৯৯৬-১৯৯৭ সালে ‘Head of State’ পদক লাভ করেন। ২০০৯ সালে ভারতের ইন্দিরা গান্ধী মেমোরিয়াল ট্রাস্ট শান্তি ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অসামান্য ভূমিকা পালনের জন্য শেখ হাসিনাকে ইন্দিরা গান্ধী পুরস্কারে ভূষিত করে। এছাড়া তিনি ব্রিটেনের গ্লোবাল ডাইভারসিটি পুরস্কার এবং ২ বার সাউথ সাউথ পুরস্কারে ভূষিত হন। ২০১৪ সালে ইউনেস্কো তাঁকে ‘শান্তিরবৃক্ষ’ এবং ২০১৫ সালে উইমেন ইন পার্লামেন্টস গ্লোবাল ফোরাম নারীর ক্ষমতায়নের জন্য তাঁকে রিজিওনাল লিডারশীপ পুরস্কার এবং গ্লোবাল সাউথ-সাউথ ডেভেলপমেন্ট এক্সপো-২০১৪ ভিশনারি পুরস্কারে ভূষিত করে। বাংলাদেশের কৃষির উন্নয়নে অব্যাহত সমর্থন, খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ম্ভরতা অর্জন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে অবদানের জন্য আমেরিকার কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৫ সালে তাঁকে সম্মাননা সনদ প্রদান করে। জাতিসংঘ পরিবেশ উন্নয়ন কর্মসূচি দেশে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিবেশ এবং টেকসই উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখার জন্য লিডারশীপ ক্যাটাগরিতে শেখ হাসিনাকে তাদের সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্যা আর্থ-২০১৫’ পুরস্কারে ভূষিত করেছে। এছাড়া, টেকসই ডিজিটাল কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য International Telecommunication Union (ITU) শেখ হাসিনাকে ICTs in Sustainable Development Award-২০১৫ প্রদান করে। সর্বশেষ চলতি মাসে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে প্ল্যানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ান ও এজেন্ট অব চেঞ্জ অ্যাডওয়ার্ড পুরস্কারে ভূষিত হন শেখ হাসিনা। জননেত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যতগুলো পুরস্কার অর্জন করেছেন, উপমহাদেশে কোনো সরকার প্রধান বা রাষ্ট্র প্রধানের নেই।
বিশ্ব মোড়লরাও এখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। আগামী ২০২১ সালের আগেই মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হব। দেশের উন্নয়ন আর অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার জন্য প্রয়োজন জননেত্রী শেখ হাসিনাকে। জননেত্রী শেখ হাসিনা ভালো থাকলে বাংলাদেশের মানুষ ভালো থাকবে, দেশের উন্নয়নের চাকা ঘুরতে থাকবে। দেশবাসীর কাছে প্রার্থনা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করবেন যেন সব বিপদ, আপদ ও ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে জাতির পিতার সোনার বাংলা গড়তে পারেন এবং হেফাজতে রাখেন। কারণ বাংলার মানুষ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যতদিন শেখ হাসিনার হাতে দেশ, ততদিন পথ হারাবে না বাংলাদেশ।
আজকে বাস্তবতায় শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জন্য অপরিহার্য। শেখ হাসিনার হচ্ছে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, লাল সবুজের পতাকা, সার্বভৌমত্ব ও বাঙালি জাতির রক্ষক। বঙ্গবন্ধুবিহীন বাংলাদেশকে তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন তিনি। শেখ হাসিনা আছেন বলেই, দেশে গণতন্ত্র আছে, বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীর বিচার হচ্ছে, রায়ও কার্যকর হয়েছে বেশ কয়েকজনের। ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। তাই শেখ হাসিনা দেশের জন্য আশীর্বাদ। বাংলাদেশের ইতিহাসে ২৮ সেপ্টেম্বর ও ১৭ মার্চের মতই একটি শুভ দিন। শুভ হোক হাসিনার জন্মদিন। চিরদিন বাঙালির হৃদয়ে জেগে থাকুক শেখ হাসিনা। সত্যিই শেখ হাসিনা বাংলাদেশের আশীর্বাদ।
# লেখক, সদস্য, আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী সংসদ, সাবেক জাকসু ভিপি



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শেখ হাসিনা আলোকিত বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ