Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মিয়ানমার থেকে আনার সময় ৯ লাখ পিস উদ্ধার

থামছে না ইয়াবা আগ্রাসন

প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মুহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান, টেকনাফ : থামছে না ইয়াবার ভয়াল আগ্রাসন। মিয়ানমার থেকে প্রতিদিনই আসছে ইয়াবার চালান। সাগর, পাহাড় আর সড়কপথে এসব চালান চলে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে।
মঙ্গলবার রাতে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ নাফ নদীর মোহনায় কোস্টগার্ড সদস্যরা অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করেছে ৯ লাখ পিস ইয়াবার বিশাল একটি চালান। তবে পাচারকারীরা পালিয়ে যাওয়ায় এসময় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। মাঝে মধ্যে ছোট-বড় কিছু চালান ধরা পড়লেও পাচারকারী সিন্ডিকেটের নেটওয়ার্ক অক্ষত থেকে যাচ্ছে। রঙিন এই নেশার ট্যাবলেটের নীল ছোবলে ধ্বংস হচ্ছে যুবসমাজ। মাদকাসক্তের সংখ্যা বাড়ছে, সেই সাথে বাড়ছে অপরাধ প্রবণতাও। দেশ যখন সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দেশের নিরাপত্তা নিয়ে ব্যস্ত, আর এই সুযোগে বেপরোয়া মাদক পাচারকারীরা। সাগর পথে মাছ ধরা ট্রলারে সরাসরি মিয়ানমার থেকে বড় বড় ইয়াবার চালান দেশে ঢুকে পড়ছে। তা আবার সড়ক পথে যাচ্ছে সারাদেশে। তবে সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া এসব চালান ধরতে পারছে না আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ভয়াল ইয়াবা আগ্রাসনের কাছে প্রশাসন অসহায় হয়ে পড়েছে। সীমান্তে বিজিবির কড়া নজরদারি, সাগর পথে নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের সতর্ক টহল, সড়ক ও পাহাড়ি পথে র‌্যাব-পুলিশের তল্লাশির মধ্যেও যাচ্ছে ইয়াবার চালান। নানা কৌশলে মাদক সওদাগরেরা এসব চালান নিয়ে যাচ্ছে। নৌপথে আসছে সবচেয়ে বেশি ইয়াবা।
বুধবার সকালে কোস্টগার্ড টেকনাফ স্টেশনের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট নাফিউর রহমান জানান, মায়ানমার থেকে ইয়াবার বড় একটি চালান আসার খবরে কোস্টগার্ড সদস্যরা মঙ্গলবার রাতে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ নাফ নদীর মোহনায় অভিযান চালান। এসময় মায়ানমার থেকে আসা একটি ডিঙিনৌকা নাফ নদীর মোহনায় পৌঁছালে কোস্টগার্ড সদস্যরা থামার জন্য সংকেত দেন। এতে পাচারকারীরা নৌকাটি ফেলে অন্য একটি ইঞ্জিনচালিত নৌযান করে পালিয়ে যান। পরে নৌকাটি তল্লাশি করে নয় লাখ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। এসব ইয়াবার মূল্য ৪৫ কোটি টাকা।
টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুজার আল জাহিদের দেয়া তথ্যানুযায়ী, পাচারকারীরা এবার নাফ নদীর সীমান্ত বাদ দিয়ে সাগরপথকে বেচে নিচ্ছে, তাতে পাচারকারীদের আটক অনেকটা দূরসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যে পরিমাণ ইয়াবা ধরা পড়ছে তার অন্তত দশগুণ নিরাপদে পাচার হয়ে যাচ্ছে। মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী এলাকায় গড়ে উঠা অর্ধ শতাধিক ছোট-বড় কারখানায় উৎপাদিত ইয়াবা ঠেলে দেয়া হচ্ছে এদেশে। সাগর, পাহাড় আর সড়ক পথে ইয়াবার চালান আসছে বানের পানির মত। চোরাচালানী সিন্ডিকেটের হাত হয়ে এসব নেশার ট্যাবলেট ছড়িয়ে পড়ছে সারাদেশে। একসময় এ ট্যাবলেট উচ্চবিত্তের বকে যাওয়া ছেলে-মেয়েদের নাগালের মধ্যে থাকলেও এখন এটি অনেক সহজলভ্য। শহরের বস্তি এমনকি পল্লী গাঁয়েও মিলছে ইয়াবা ট্যাবলেট। পাচারের সময় বড় বড় চালান ধরাও পড়েছে। গত ৫ বছরে কয়েক কোটি টাকার ইয়াবা ট্যাবলেট আটক করে আইনশৃংখলা বাহিনী এবং র‌্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে ২ ইয়াবা ব্যবসায়ী মারা গেছে। গ্রেফতার হয়েছে অনেকে। কিন্তু এরপরও বন্ধ হয়নি ইয়াবা পাচার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মিয়ানমার থেকে আনার সময় ৯ লাখ পিস উদ্ধার
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ