পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : সমাজের সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত হলেন সমকালীন বাংলা সাহিত্যের আধুনিক কবি ও সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক। চিরবিদায় বেলায় সর্বস্তরের জনগণ ফুলে ফুলে ঢেকে দিলেন কবির লাশে। গতকাল বুধবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কবির এ নাগরিক শ্রদ্ধানুষ্ঠানে রাজনীতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং শিল্প ও সাহিত্যাঙ্গনের প্রতিথযশা ব্যক্তিত্বসহ নানা পেশার মানুষের ঢল নামে। তার স্মরণে সেখানে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। খোলা হয় শোক বই। পরে সেখান থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে বাদ জোহর তার দ্বিতীয় নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাকে হেলিকপ্টারে করে তার গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রাম নিয়ে যাওয়া হয়। শেষ ইচ্ছা অনুয়ারী কলেজে মসজিদের দক্ষিণ দিকে মাঠ সংলগ্ন ধানক্ষেতের পাশে বিকাল ৫টায় তাকে দাফন করা হয়।
এর আগে বেলা সোয়া ১১টার দিকে সৈয়দ হকের লাশ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিয়ে আসা হয়। এরপর প্রথমে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে এ লেখকের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদিন, শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার এডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া, সাবেক ডেপুটি স্পিকার কর্নেল (অব.) শওকত আলী কবির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়াও শ্রদ্ধা জানাতে মন্ত্রী এবং সংসদ সদস্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসেন। আসেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরাও। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এমপি, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি, সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, নারী ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকী প্রমুখ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
কবির লাশে আরও শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক মিজানুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) পক্ষে প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, নজরুল ইনস্টিটিউটের পক্ষে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের পক্ষে সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক হারুণ হাবীব, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারোয়ার আলী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ ও সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ, জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি ড. মুহাম্মদ সামাদ, সাধারণ সম্পাদক কবি তারিক সুজাত, কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী, কবি হালিম আজাদ, কবি আসলাম সানী, বাংলাদেশ টেলিভিশরে মহাপরিচালক হারুন-অর-রশিদ, ঢাকা থিয়েটারের পক্ষে নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, কবি মোহন রায়হান, শিল্পকলা একাডেমির পক্ষে মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, আবুল বারক আলভী ও শিশির ভট্টাচার্য, শিল্পী রথীদ্রনাথ রায়, মৃনাল কান্তি রায়, কথা সহিত্যিক অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, কথা সহিত্যিক আবুল হাসনাত, সাংবাদিক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, এ্যাটর্নী জেনারেল এ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম, সাংবাদিক আবেদ খান, মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক প্রমুখ।
রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও প্রদ্ধা জানানো হয়। এরমধ্যে আওয়ামী লীগের পক্ষে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের পক্ষেও দীপু মনির, ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষে সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি, কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃবৃন্দও শ্রদ্ধা জানান।
বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে), সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি, ঢাকা মহানগর উত্তর ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠী, নৃত্যকলা কেন্দ্র, ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠী, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদ, আর টিভি, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, এফবিসিসিআই, ঢাকা পদাতিক, বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ, জাতীয় কবিতা পরিষদ, ঢাকা থিয়েটার, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা গবেষণা পরিষদ, মহাকাল নাট্য সম্প্রদায় শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে ইউনাইটেড হাসপাতালের হিমঘর থেকে লাশ সকালে শহীদ মিনারে নিয়ে আসার আগে ১০টা ১০মিনিটে চ্যানেল আই ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টা ২৭ মিনিটে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণ থেকে সৈয়দ শামসুল হকের লাশ বাংলা একাডেমিতে উদ্দেশে রওনা হয়। বাংলা একাডেমির ফেলো সৈয়দ হকের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তাঁর লাশ বেলা ১০টা ৪৫ মিনিটে একাডেমির নজরুল মঞ্চে রাখা হয়। পরে সেখানে থেকে সোয়া এগারোটার দিকে তার লাশ শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়া হয়। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সেখান থেকে দুপুর একটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় মসজিদে দ্বিতীয় জানাজার নিয়ে যাওয়া হয়। দুপুর ২টায় কবির লাশ কুড়িগ্রামে তার গ্রামের বাড়ি জলেশ্বরীতে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশে তেজগাঁও পুরান এয়ারপোর্টে নিয়ে যাওয়া হয়। তেজগাঁও এয়ারপোর্ট থেকে ২টা ২১ মিনিটে হেলিকপ্টার তার গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওয়া দেয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।