পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কওমি মাদরাাসা সনদের স্বীকৃতির উদ্যোগ : ৯ সদস্যের কমিটি গঠিত
স্টাফ রিপোর্টার : কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা সনদের সরকারি স্বীকৃতি দেয়ার লক্ষ্যে গত মঙ্গলবার ইকরা বাংলাদেশের পরিচালক মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসউদকে আহ্বায়ক করে নতুন একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। তিন বছর আগে এমনই এক উদ্যোগ নেওয়া হলেও রাজনৈতিক অস্থিরতা ও একটি পক্ষের বিরোধিতার কারণে সেটি স্থগিত হয়ে যায়।
কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাপনা, শিক্ষাদানের বিষয় এবং কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা সনদের সরকারি স্বীকৃতির লক্ষ্যে সুপারিশ দেয়ার জন্য ২০১২ সালের এপ্রিলে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট ‘বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা কমিশন’ গঠন করা হয়। এ কমিশনের সুপারিশের আলোকে ‘বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ’ প্রতিষ্ঠার জন্য একটি আইনের খসড়াও তৈরি করা হয়েছিল। বর্তমান সময়ের আলোকে এই আইনের খসড়াটি অধিকতর যুগোপযোগী করতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুপারিশ দিতে পরে নয় সদস্যের একটি নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নয় সদস্যের এই কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন চট্টগ্রামের জামেয়া দারুল মা’আরিফের মহাপরিচালক সুলতান যওক নদভী, চট্টগ্রামের পটিয়া মাদ্রাসার মহাপরিচালক আবদুল হালিম বোখারী, কিশোরগঞ্জের জামেয়া ইমদাদিয়ার মুহতামিম আনোয়ার শাহ, সিলেটের দক্ষিণকাছ হোসাইনিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার শায়খুল হাদীস আব্দুল বাসেত বরকতপুরি, ঢাকার ফরিদাবাদ মাদ্রাসার মুহতামিম আবদুল কুদ্দুস, বসুন্ধরা-ঢাকার ইসলামি রিসোর্স সেন্টারের জ্যেষ্ঠ মোহাদ্দিস মুফতি এনামুল হক, খুলনার জামিয়া মাদানীয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ইমদাদুল্লাহ কাশেমী। কমিটিতে সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন গোপালগঞ্জের গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসার মহাপরিচালক মুফতি রুহুল আমিন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাদ্রাসা অণুবিভাগ কমিটির সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবে। এই কমিটি প্রয়োজনে আরও সদস্য নিতে (কো-অপ্ট) পারবে। কমিটিকে আগামী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে শিক্ষা সচিবের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে নতুন করে গঠিত কমিটির বিষয়ে কওমী মাদরাসা বোর্ড কার্যালয় গতকাল সারাদিন এ বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা করেছেন বেফাক নেতৃবৃন্দ। বৈঠকে নতুন কমিটি করার বিষয়ে বেফাক গতকাল কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে না পারায় আজ সকাল ১০টায় হাটহাজারী মাদরাসায় বেফাক সভাপতি আহমদ শফীর সাথে বৈঠক করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবে বলে জানা গেছে।
কওমী মঞ্চ নেতৃবৃন্দ
কওমী মাদরাসা সনদের সরকারী স্বীকৃতির জন্য গঠিত “বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা কর্তৃপক্ষ আইন ২০১৩” বর্তমান সময়ের আলোকে অধিকতর উপযোগী করণের লক্ষ্যে দেশের শীর্ষ নয় আলেমের সমন্বয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত কমিটি সময় উপযোগী। কওমী মঞ্চের চেয়ারম্যান মুফতি মোহাম্মদ তাসনীন ও প্রেসিডিয়াম সদস্য মুফতি আব্দুল্লাহ ইদরিস এক বিবৃতিতে বলেন, কওমী সনদের সরকারী স্বীকৃতি না থাকায় কওমী অঙ্গনের যোগ্য ছাত্ররা দেশ গঠনে জাতীয় পর্যায়ে অবদান রাখতে পারছে না। কওমী সনদ স্বীকৃতির মাধ্যমে কওমী শিক্ষার্থীরা সব ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারবে এবং এটা তাদের নাগরিক অধিকার। এ বিষয়টি সামনে রেখে অভিজ্ঞ ওলামায়ে কেরাম খুঁটিনাটি এখতেলাফ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে সর্বজন গ্রহণযোগ্য একটি রুপরেখা প্রণয়ন করে কওমী মাদরাসাসমূহ এবং এর শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টদের স্বকীয়তা এবং স্বতন্ত্রবৈশিষ্ট্য অক্ষুন্ন থাকবে। এটাই সংশ্লিষ্ট সকলের প্রত্যাশা।
কওমী সনদ স্বীকৃতি পরিষদ
কওমী সনদ স্বীকৃতি বাস্তবায়ন পরিষদের সদস্য সচিব মাওলানা আজিজুর রহমান ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এক বিবৃতিতে বলেন, দীর্ঘদিন কওমী সনদের আলোচনা হয়ে আসছে। কওমী শিক্ষার্থীদের স্বার্থে সনদের সরকারী স্বীকৃতির জন্য আন্দোলন চলছে। আশা করি গঠিত কমিটি তাদের অভিজ্ঞতা, জ্ঞানের গভীরতা এবং দূরদর্শিতা দিয়ে সুন্দর সর্বজন গ্রহণযোগ্য একটি রুপরেখা প্রদান করবেন যাতে কওমী মাদরাসাসমূহ এবং এর শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টদের স্বকীয়তা এবং স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য অক্ষুন্ন থাকবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।