পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশীয় প্রতিষ্ঠান ‘গ্লোবাল বায়োটেক’ উদ্ভাবিত কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন ‘বঙ্গভ্যাকস’র ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ক্লিয়ারেন্স দিতে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ দেয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার পালোয়ান জনস্বার্থে এ নোটিশ দেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্যসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্স কাউন্সিলের (বিএমআরসি) পরিচালক, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক নোটিশের ‘প্রাপক’।
নোটিশে বলা হয়, সারাবিশ্ব এখন নিস্তব্ধ নীরব ও বিপর্যস্ত একটি অদৃশ্য ভাইরাস কোভিড-১৯ এর কারণে। লকডাউনসহ নানাবিধ স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে সারাবিশ্বের বিভিন্ন দেশ পালন করা সত্তে¡ও সারাবিশ্বে অদ্যাবধি অন্তত ৪১ লাখ মানুষ মারা গেছেন। এ ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১২ লাখ। মৃত্যুবরণ করেছন অন্তত ১৯ হাজার ২৭৪ মানুষ। এখন এটি সবাই স্বীকার করবেন যে, ভ্যাকসিনের উসিলায় সকল মানুষকে এই মহামারি থেকে আল্লাহর রহমতে রক্ষা করতে পারে।
সারাবিশ্বের ভ্যাকসিন উৎপাদনের দিকে যখন সকল দেশের সরকার এবং কোটি কোটি জনগণ তাকিয়ে আছে, তখনই বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশ ভ্যাকসিন আবিষ্কারের ঘোষণা দিয়ে ২০২০ সালের ১৫ অক্টোবর সারাবিশ্বে সাড়া ফেলে দিয়েছিল উল্লেখ করে নোটিশে আরও বলা হয়, সারাবিশ্বের সংবাদ মাধ্যমে সেই অর্জনের কথা ছড়িয়ে পড়েছে যে, বাংলাদেশ সারা বিশ্ববাসীকে মহামারি থেকে রক্ষা করতে ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছে। গ্লোবাল বায়োটেক উদ্ভাবিত বঙ্গভ্যাক্স ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর ২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর অনুমোদন দেয়। অতঃপর মানবদেহে পরীক্ষামূলক ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পর্ব ১ এবং ২ এর জন্য বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্স কাউন্সিলের কাছে নৈতিক অনুমোদনের জন্য গত ১৭ জানুয়ারি আবেদন করেন বিএমআরসি।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি কিছু সংযোজন-বিয়োজন করার জন্য চিঠি দেয়া হলে গ্লোবাল বায়োটেক গত ১৭ ফেব্রুয়ারি পুনরায় সংশোধিত রিসার্স ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা দেয় বলেও তাতে জানানো হয়। কিন্তু পাঁচ মাস ধরে বিএমআরসি সম্পূর্ণ নীরব রয়েছেন। বাংলাদেশি ভ্যাকসিনটি পরীক্ষা চালানোর জন্য কোনো উদ্যোগ নেয়নি, অভিযোগ করে নোটিশে বলা হয়, উপরন্তু বিএমআরসি একেক সময় সংবাদমাধ্যমে একেক রকম বক্তব্য দিয়েছে। যাতে সারাদেশের মানুষ দেশে উৎপাদিত ভ্যাকসিন নিয়ে আশাহত হয়েছেন।
সর্বশেষ, বিএমআরসি গত ২২ জুন একটি চিঠি দিয়ে গ্লোবাল বায়োটেককে জানায় যে, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আগে বানর বা শিম্পাঞ্জির ট্রায়াল করতে হবে, তবেই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ইথিক্যাল অনুমোদন বিষয়ে পরবর্তী চিন্তা করা হবে।
আব্দুস সাত্তার পালোয়ান তার নোটিশে বলেন, বানর বা শিম্পাঞ্জির শরীরে পরীক্ষা চালাতে হলে থার্ড পার্টি রিসার্চ ল্যাবের প্রয়োজন। কিন্তু বাংলাদেশে এই ধরনের কোনও গবেষণা ল্যাব নেই। গ্লোব বায়োটেক বানর এবং শিম্পাঞ্জির শরীরে পরীক্ষা চালানোর জন্য ভারত এবং চীনের দু’টি প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা বলেছে। সেসব প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, এই মুহূর্তে তাদের হাতে সময় নেই। দরখাস্ত সরকারের মাধ্যমে করতে হবে, যা খুবই দীর্ঘ সময় সাপেক্ষ। এ মুহূর্তে এটি সম্ভবও নয়।
তিনি বলেন, আমরা সংবাদমাধ্যমে দেখেছি ফাইজার ও মডার্না’র টিকা উৎপাদনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার এবং কর্তৃপক্ষ একে অপরের সাথে মিলেমিশে ভ্যাকসিন তৈরি ও তা প্রয়োগের উপযোগী করে তুলেছে। বঙ্গভ্যাক্স একটি নিউ জেনারেশন টেকনোলজি এমআরএনএ প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে আমেরিকা এবং জার্মানির ফাইজার ও মডার্না টিকা। এটা স্পষ্ট যে, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদন না দিয়ে বানরের শরীরে ট্রায়ালের জন্য শর্তজুড়ে দেয়ার অর্থ হচ্ছে এই ভ্যাকসিনটি যাতে উৎপাদন করতে বা অনুমোদন পেতে আরো অনেক সময় অতিবাহিত হয়। এটি যাতে আলোর মুখ না দেখে। যদি বানরের শরীরে প্রয়োগের প্রয়োজন হতো, তাহলে বিএমআরসি আরও ৫ মাস আগে গ্লোব বায়েটেক এসব শর্ত উল্লেখ করত।’
লিগ্যাল নোটিশে অভিযোগ এনে বলা হয়, বাংলাদেশে উৎপাদিত করোনার ভ্যাকসিন বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষের জীবন যেভাবে রক্ষা করতে পারত, তেমনিভাবে সারা বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের সম্মান ও মর্যাদা এক অনন্য চূড়ায় পৌঁছে দিতে পারত। কিন্তু বিএমআরসি এর ধীরে চলো নীতি ও নিষ্ক্রিয়তা সেই স্বপ্নকে ম্লান করে দিয়েছে। সেই সাথে ১৭ কোটি মানুষের জীবন রক্ষার সংবিধানিক অধিকার লংঘন করেছে বিএমআরসিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
তাই ১৭ কোটি বাংলাদেশি ও কোটি কোটি বিশ্ববাসীর জীবন রক্ষায় জনস্বার্থে গত ২২ জুন গ্লোব বায়োটেক বরাবর বানরের শরীরে পরীক্ষার জন্য যে চিঠি ইস্যু করা হয়েছে, তা যাতে প্রত্যাহার করে স্বেচ্ছাসেবীদের শরীরে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পেইজ-১ ও ২ এর ইথিক্যাল ক্লিয়ারেন্স দেয়ার অনুরোধ জানানো হচ্ছে। অথবা ফাইজার ও মডার্না টিকার মতো ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলাকালে বানরের শরীরেও প্রয়োগের শর্ত আরোপের অনুরোধ জানাচ্ছি। লিগ্যাল নোটিশটি প্রাপ্তির ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গভ্যাক্সের ইথিক্যাল ক্লিয়ারেন্স দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে- মর্মে হুঁশিয়ারি দেয়া হয় নোটিশে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।