পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
১২শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প
উমর ফারুক আলহাদী (কক্সবাজার থেকে ফিরে) : পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সাথে আকাশ পথে সারা বিশ্বের যোগাযোগ ব্যবস্থা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নির্মাণ হচ্ছে কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। প্রায় ১২শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম আধুনিক এ বিমানবন্দরটি। সিভিল এভিয়েশনের তত্ত্বাবধানে আগামী ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে সুপরিসর বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ সরাসরি এ বিমানবন্দরে উঠানামা করতে পারবে। অত্যাধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের এ বিমানবন্দরটি নির্মাণ করতে ইতোমধ্যে ৬৮২ একর সরকারি জমি বন্দোবস্ত নিয়েছে বেসামরিক বিমান মন্ত্রণালয়।
দেশের পর্যটন শিল্প বিকাশে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আকাশ পথে যাতায়াতে সুবিধার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সরকার এ উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ করছে। বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকতের উপকূল ঘেঁষে এ বিমান বন্দরটি নির্মিত হলে পুরো পর্যটন নগরীর সৌন্দর্য বেড়ে যাবে। দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক অপরূপ সুন্দরতম পর্যটন নগরী কক্সবাজার বিশ্বের পর্যটকদের কাছে আরো আকর্ষণীয় হয়ে ওঠবে বিমান বন্দরটির কারণে। এছাড়া বিমান বন্দরের আলোকসজ্জার কারণে রাতের দৃশ্য হবে আরো আকর্ষণীয়। এমনটি জানিয়েছেন প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সরেজমিনে দেখা গেছে, দিনে রাতে চলছে নির্মাণ কাজ। ফলে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর উন্নয়ন কাজ। মাটি ভরাট, ভূমি উন্নয়ন এবং ড্রেজিংয়ের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়। চলছে রানওয়ে সম্প্রসারণের কাজও। গত বছরের ২ জুলাই গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যে ৩০ শতাংশ শেষ হয়েছে। অবশিষ্ট কাজ ২০১৮ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার আশা করছেন বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ আমিনুল হাসিব।
প্রকল্প পরিচালক আমিনুল হাসিব জানান, প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬ টায় রানওয়ের লাইট সরিয়ে সারারাত উন্নয়নের কাজ করা হয়। পরের দিন সকাল ৬ টায় আবার স্থাপন করা হয়।
সূত্র মতে, সরকারি-বেসরকারি সংস্থার আওতায় প্রথম পর্যায়ে বিমানবন্দরের রানওয়ে বর্ধিতকরণ ও প্রশস্ত করণের পুরো কাজ শেষ হতে সময় লাগবে ৩০ মাস। পুনর্বাসন কাজের জন্য ব্রীজ নির্মাণ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধসহ প্রথম ধাপের উন্নয়ন কাজে সর্বমোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৯৫ কোটি টাকা।
প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী অরুপ কুমার সাহা ইনকিলাবকে জানান, বোয়িং ৭৭৭ জাতীয় বড় ধরনের বিমান চলাচলের উপযোগী করে কক্সবাজার বিমানবন্দর সম্প্রসারণের প্রথম পর্যায়ের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলমান এই সম্প্রসারণের কাজ শেষ হলে ২০১৮ সালের মধ্যেই। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপান্তরিত হবে কক্সবাজার বিমানবন্দর। তখন এ বিমান বন্দরে নামবে বোয়িং ৭৭৭-এর মতো সুপরিসর বিমান।
এয়ারফিল্ড লাইটিং সিস্টেম, ফায়ার ফাইটিংয়ের যন্ত্রপাতি ক্রয়, আইএলএস এবং ডিভিওআরসহ প্রায় ৫০ শতাংশ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এর আগে রানওয়ে সম্প্রসারণের জন্য মাটি ভরাট ও ড্রেজিংয়ের কাজ সম্পন্ন হয়।
বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, পর্যটন শিল্পকে বিকশিত করা, সমুদ্রসীমা রক্ষা, কক্সবাজারের উন্নয়নসহ দেশী-বিদেশী পর্যটকদের সুবিধার্থে সুপরিসর বিমান চলাচল নিশ্চিতকরণে সরকার বদ্ধপরিকর। পাশাপাশি সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় আকাশপথে দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনায় রেখে এ প্রকল্পের কাজ করা হচ্ছে। পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়ানোর পাশাপাশি বাণিজ্যিক গুরুত্বের বিষয়টিও বিবেচনায় রাখা হয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক আমিনুল হাসিব জানান, ২০০৯ সালের অক্টোবরে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের ‘কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প’ যাত্রা শুরু হয়। প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ ২০১৩ সালের জুন মাসে সমাপ্তির কথা ছিল। পরবর্তীতে এ কাজের জন্য মেয়াদ বাড়ানো হয়। কোরিয়ান একটি ঠিকাদারী কোম্পানীকে এ কাজ দেয়া হয়েছে। যা আগামী ২০১৮ সালের জুনে সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।
দেশীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মীর আকতার হোসাইন লিমিটেড-এর নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী মানিক কুমার বিশ্বাস বলেন, কাজের মানের ব্যাপারে কোন আপস নাই। আন্তর্জাতিক মান রক্ষা করেই বিমানবন্দরের উন্নয়ন কাজ চলছে।
উল্লেখ্য, পর্যটন শিল্প বিকাশে বর্তমান সরকার কক্সবাজারে ২৫টি মেগা উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়। এর মধ্যে কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্প অন্যতম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল এ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।